১১ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আদার উপকারিতা অনেক

আদা শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, এটি আমাদের শরীরের জন্যও একটি কার্যকর ভেষজ উপাদান। নানা গবেষণায় দেখা গেছে, আদায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা রোগপ্রতিরোধ থেকে শুরু করে ব্যথা কমানো পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে উপকারী। আসুন জেনে নিই আদার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা:

জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে: তাজা আদায় থাকা কিছু রাসায়নিক উপাদান শরীরকে জীবাণুর হাত থেকে সুরক্ষা দেয়। এগুলো বিশেষভাবে ই.কোলি ও শিগেলা জাতীয় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া কিছু ভাইরাস যেমন আরএসভি থেকেও রক্ষা পেতে সহায়ক হতে পারে।

মুখের স্বাস্থ্যে ভালো : আদার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা দাঁত ও মাড়ির জন্যও উপকারী। আদার ভেতরে থাকা ‘জিঞ্জেরলস’ নামের উপাদান মুখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঠেকায়। এসব ব্যাকটেরিয়াই দাঁতের মাড়িতে গুরুতর সংক্রমণ (পেরিওডোন্টাল ডিজিজ) ঘটায়।

বমি বমি ভাব কমায় : একটা পুরোনো প্রবাদ আছে, যেটা সত্যি। তা হলো, আদা বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় এটি কার্যকর হতে পারে। অন্ত্রে জমে থাকা গ্যাস ভেঙে দিতে এবং দূর করতে আদা সহায়তা করে। সমুদ্র ভ্রমণের সময় বা কেমোথেরাপি নেওয়ার পর যে বমি বমি ভাব হয়, তাতেও আদা উপকারী হতে পারে।

পেশির ব্যথা প্রশমিত করে : আদা খেলে সঙ্গে সঙ্গে পেশির ব্যথা সারে না, তবে নিয়মিত সেবনে ব্যথা ও অস্বস্তি ধীরে ধীরে কমতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়ামের কারণে হওয়া পেশির ব্যথা আদা খাওয়ার পরের দিন তুলনামূলক কম অনুভূত হয়।

আর্থ্রাইটিসের উপসর্গ হ্রাস করে : আদার প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে, যা ফোলাভাব কমায়। এ জন্য রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস রোগীদের জন্য আদা উপকারী হতে পারে। মুখে খাওয়া ছাড়াও আদা দিয়ে তৈরি পট্টি বা কম্প্রেস ব্যবহারেও আরাম মেলে।

ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে : কিছু গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, আদার সক্রিয় উপাদান কিছু ধরনের ক্যানসারের বৃদ্ধি ধীর করতে পারে। যেমন- কোলন, পাকস্থলী, ডিম্বাশয়, লিভার, ত্বক, স্তন ও প্রোস্টেট ক্যানসার। তবে এ বিষয়ে আরও বিস্তৃত গবেষণা চলছে।

রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে : একটি ছোট গবেষণায় দেখা গেছে, আদা শরীরকে ইনসুলিন ব্যবহারে সাহায্য করতে পারে। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করতে আরও বড় গবেষণা দরকার।

ঋতুস্রাবের ব্যথা কমায় : মেয়েদের মাসিকের সময় পেটব্যথা বা ক্র্যাম্প কমাতে আদার গুঁড়া কার্যকর। গবেষণায় দেখা গেছে, মাসিক চলাকালে টানা তিন দিন প্রতিদিন আদার গুঁড়া খেলে ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।

কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে : নিয়মিত আদা খাওয়া ক্ষতিকর এলডিএল বা ‘খারাপ’ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৫ গ্রাম আদা খেলে তিন মাস পর এলডিএল কোলেস্টেরল গড়ে ৩০ পয়েন্ট পর্যন্ত কমে।

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : আদায় প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এগুলো উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগসহ দীর্ঘস্থায়ী রোগপ্রতিরোধে সহায়ক। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর বার্ধক্যেও ভূমিকা রাখে।

হজমে সহায়তা করে : যারা দীর্ঘদিন ধরে বদহজমে ভোগেন, তাদের জন্য আদা উপকারী হতে পারে। খাবারের আগে আদা খেলে পাকস্থলী দ্রুত খালি হয়। ফলে খাবার দীর্ঘ সময় আটকে থেকে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে না। সূত্র: ওয়েবএমডি