১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

স্বাস্থ্য

কথায় কথায় ভুলে যান? জাপানি পন্থায় ধারালো হতে পারে স্মৃতিশক্তি! জেনে নিন ৫ উপায়

কথায় কথায় ভুলে যান? জাপানি পন্থায় ধারালো হতে পারে স্মৃতিশক্তি! জেনে নিন ৫ উপায়

মস্তিষ্কের ব্যায়ামের যে সমস্ত উপায় রয়েছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটি জাপানের সংস্কৃতি থেকে গৃহীত। এর মধ্যে যেমন বিভিন্ন ধরনের পাজ়ল রয়েছে, তেমনই রয়েছে শব্দ এবং সংখ্যাকে মেলানোর কিছু সাঙ্কেতিক খেলা।

মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো বিষয় ভুলে যাচ্ছেন কি? বয়স ৬০ পেরনোর পরে এমন হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু ৩০-৪০-এর কোঠায় যদি এমন হয়, তবে তার সমাধান খোঁজা দরকার।

এ যুগের জীবনযাত্রায় মানসিক চাপ, উদ্বেগ, হতাশা নিত্যদিনের সঙ্গী। ভুলে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হতে পারে এই সমস্ত মানসিক সমস্যা থেকেও। সে ক্ষেত্রে মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে কিছু পরীক্ষায় প্রমাণিত পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। শরীর ভাল রাখতে যেমন ব্যায়াম করা হয়। এই পদ্ধতিগুলিও তেমনই মস্তিষ্কের ব্যায়ামের কাজ করে।

মস্তিষ্কের ব্যায়ামের যে সমস্ত উপায় রয়েছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটি জাপানের সংস্কৃতি থেকে গৃহীত। এর মধ্যে যেমন বিভিন্ন ধরনের পাজ়ল রয়েছে, তেমনই রয়েছে ভাবনাচিন্তা করার পদ্ধতি, শব্দ এবং সংখ্যাকে মেলানোর কিছু সাঙ্কেতিক খেলা, লেখার পদ্ধতিও।

১। সুদোকু : যাঁরা সুদোকু খেলেন, তাঁরা জানেন, এই পাজ়লে প্রতিটি সংখ্যা এবং তাদের অবস্থান মাথায় রেখে কাজ করতে হয়। প্রতি দিন দিনে এক বার সুদোকু খেললে মাথার ‘ব্যায়াম’ হয়। যা স্মৃতিশক্তিকে ধারালো করতে সাহায্য করে।

২। নেমোনিক্স : জাপানে সংখ্যার সঙ্গে শব্দকে মিলিয়ে এক অদ্ভুত সঙ্কেতিক ভাষা তৈরির পদ্ধতি চালু আছে। যাকে বলা হয়, ‘নেমোনিক্স’। সংখ্যার সঙ্গে অক্ষর মেলানোর এই পদ্ধতিকে গোরোওয়াসেও বলা হয়। এই পদ্ধতিতে জাপানের নিজস্ব কিছু পূর্ব নির্ধারিত সঙ্কেত রয়েছে। যেমন ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ শব্দটির সঙ্কেত হল ৩৯। জড়িয়ে ধরা বা ‘জাদু কে ঝাপ্পি’র জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যা-সঙ্কেত হল ৮৯। তবে আপনি চাইলে নিজস্ব সংখ্যা-সঙ্কেত বানাতে পারেন। বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের মধ্যে ওই সঙ্কেত ভাগ করে নিন। দিনে এক বার তাঁদের সঙ্গে ওই ভাষায় কথা বলুন। এ ভাবেও স্মৃতিশক্তি বাড়বে। আবার মনও ভাল থাকবে।

৩। শিনরিন ইয়োকু : জাপানের এই পদ্ধতিটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতি। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে দিনের একটি সময় চার দেওয়ালের বাইরে খোলা হাওয়ায় এবং সম্ভব হলে সবুজালির মধ্যে, যেখানে শব্দের ঘনঘটা কম, তেমন কোনও জায়গায় হাঁটতে বেরোন এবং মনে করুন, সারা দিন কী কী উল্লেখযোগ্য কাজ করলেন বা নতুন কী শিখলেন। এই পদ্ধতিও মস্তিষ্কের জন্য ভাল ব্যায়াম।

৪। হিফুমি : জাপানে মন শান্ত করার জন্য এবং মনঃসংযোগ বৃদ্ধির জন্য একটি বিশেষ মন্ত্র জপ করার পদ্ধতি চালু আছে। ওই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘হিফুমি’। জাপানীদের বিশ্বাস এই মন্ত্র জপ করলে স্নায়ু শান্ত হয়। তবে বিজ্ঞান বলছে যে কোনও ছন্দোবদ্ধ এবং শান্তির বার্তা দেওয়া মন্ত্র ওই একই কাজ করতে পারে। কমাতে পারে উদ্বেগ। নিয়মিত অভ্যাসে ভাল থাকে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য।

৫। জানশিন : ‘জানশিন’ হল কোনও বিষয় পড়ার সময়ে সম্পূর্ণ মনঃসংযোগ করার পদ্ধতি। সেই সময়ে কোনও দ্বিতীয় কাজ করা যাবে না। চারপাশের কোনও শব্দে মন দেওয়া যাবে না। এমনকি, গান শুনতে শুনতেও পড়া যাবে না। মন দিয়ে পড়তে হবে এবং কিছুটা পড়ার পরে আবার তা চোখ বন্ধ করে মনে করতে হবে। নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে— কী শিখলাম। এই ভাবে নিয়মিত ১ ঘণ্টা পড়লে তা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ভাল। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘জানশিন’। যার ইংরেজি অর্থ ‘মাইন্ডফুল অ্যাওয়ারনেস’ অর্থাৎ সম্পূর্ণ সচেতন হয়ে কোনও কাজে মনঃসংযোগ করা।