১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নাসার কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবে না মার্কিন ভিসাধারী চীনা গবেষকরা

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে চীনা নাগরিকদের কাজ করা থেকে বিরত রাখছে। বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে নাসা। এই ঘটনার মধ্য মধ্য দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে তীব্র হয়ে ওঠা মহাকাশ প্রতিযোগিতা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিষয়টি জানেন এমন সূত্রগুলো বলছে, যখন ওয়াশিংটন বেইজিংবিরোধী কৌশল আরো জোরদার করছে এবং দুই দেশই চাঁদে পৌঁছাতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে, ঠিক তখনই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

নাসা সাধারণত চীনা নাগরিকদের নিয়োগে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে থাকে। তবে এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাধারী চীনা নাগরিকরা ঠিকাদার, গবেষক বা বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বিজ্ঞানী হিসেবে নাসার গবেষণায় কাজ করার সুযোগ পেতেন। কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর থেকে চীনা নাগরিকদের নাসার ডেটা সিস্টেম, সভা ও প্রকল্পসংক্রান্ত আলোচনায় সব ধরনের (সরাসরি ও ভারচুয়াল) প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তটি গোপনীয় হওয়ায় সূত্রগুলো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলে জানিয়েছেন।

নাসার মুখপাত্র বেথানি স্টিভেন্স এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘নাসা চীনা নাগরিকদের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ নিয়েছে। আমাদের কর্মসূচির নিরাপত্তা রক্ষায় স্থাপনা, উপকরণ ও নেটওয়ার্কে তাদের শারীরিক ও সাইবার প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে।’

আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের মানুষসহ চাঁদে মিশন পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি সম্প্রতি এক ভাষণে বলেন, ‘আমরা এখন দ্বিতীয় মহাকাশ প্রতিযোগিতায় আছি। চীন আমাদের আগে চাঁদে পৌঁছাবে না এবং আমি তা কোনোভাবেই হতে দেব না। আমেরিকা অতীতে যেমন মহাকাশে নেতৃত্ব দিয়েছে, ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।’

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর আগে চীনা নাগরিকরা নাসার কর্মী হিসেবে না হলেও, ঠিকাদার বা শিক্ষার্থী হিসেবে গবেষণা কাজে অংশ নিতে পারতেন। এ বছর বাজেট ও কর্মী সংকোচন এবং মহাকাশ অনুসন্ধান কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে থাকা নাসার জন্য এ পদক্ষেপ নতুন এক ধাক্কা। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ বুধবার মার্কিন চেম্বার অব কমার্সের এয়ারোস্পেস সম্মেলনে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকেই মহাকাশে নিয়ম তৈরির নেতৃত্ব দিতে হবে।

তিনি জানান, বোয়িংয়ের স্পেস লঞ্চ সিস্টেম ও লকহিড মার্টিনের ওরিয়ন ক্যাপসুলের জন্য যে অর্থায়ন দেওয়া হয়েছে তার সাহায্যে আমেরিকান মহাকাশচারীরা চাঁদে ফিরে যাবে, চীনারা নয় এবং মঙ্গলের পথে নেতৃত্ব দেবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন জলবায়ু গবেষণায় বড় কাটছাঁট করেছে, যার মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড পর্যবেক্ষণকারী দুটি স্যাটেলাইট বাতিলের প্রস্তাবও রয়েছে। নাসার আর্থ সায়েন্স প্রোগ্রামেও বড় ধরনের অর্থ কাটছাঁটের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা বাড়ছে। দুই দেশ এখন পাল্টাপাল্টি শুল্কযুদ্ধে লিপ্ত। সূত্র : ব্লুমবার্গ