বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে চলতি মাস। পৃথিবীর ঘূর্ণনগতিতে বদল আসছে। তার জেরেই এ মাসের দু’দিন দিনরাতের দৈর্ঘ্য কমবে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজির এক পদার্থবিজ্ঞানী জুডা লেভাইন হিসেবনিকেশ করে এমনই পূর্বাভাস দিয়েছেন।
বলা হচ্ছে, জুলাই এবং আগস্টের মোট তিনটি দিন পৃথিবী একটু বেশি গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে। যার জেরে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যে ফারাক হবে। যদিও তা নগণ্য – কয়েক মিলিসেকেন্ড মাত্র। এমনটা হওয়ার কারণ কী? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জলবায়ু বদলের একাধিক প্রভাবের জেরে এই বিরল ঘটনা ঘটতে চলেছে।
বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণা অনুযায়ী, জুলাইয়ের ৯, ২২ এবং আগস্টের ৫ তারিখ পৃথিবীর ঘূর্ণনগতি একটু বাড়বে। মূলত চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে আমাদের গ্রহের এই দ্রুত ঘূর্ণন। আর তার জেরে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যে খুব সামান্য বদল হবে। হিসেব বলছে, ১.৫১ মিলিসেকেন্ড সময়ের হেরফের হতে পারে। পদার্থবিজ্ঞানী জুডা লেভাইনের মতে, ”পৃথিবীর ঘূর্ণনগতি বৃদ্ধির পূর্বাভাস যেমন আছে, তেমন পৃথিবীর গতি শ্লথ হতে পারে, তাও বলা যায়। এই ভারসাম্যটা জরুরি। আর তার প্রভাবে যা ঘটতে চলেছে, তা কিন্তু বেশ বিস্ময়কর।”
বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, এই যে জুলাই ও আগস্টের তিনদিন ১.৫১ মিলিসেকেন্ড করে সময়ের ফারাক হবে, বিশ্বের ঘড়িতে সামগ্রিকভাবে তার প্রভাব টের পাওয়া যাবে সেই ২০২৯ সালে। মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞানীর কথায়, ”এটা আমাদের ভাবনার বাইরে। পৃথিবীর গতি হঠাৎ বেড়ে যাওয়া বা আচমকা কমে যাওয়ার কোনও ব্যাখ্যা নেই। অনেকে মনে করেন, এটা পৃথিবীর অভ্যন্তরের কিছু ঘটনার জন্য বলেই মনে হয়।”
তবে তিনি যাই বলে থাকুন, বিশ্লেষণ করেছেন বিজ্ঞানীদের আরেকাংশ। বলা হচ্ছে, এই তিনটি দিন পৃথিবীর নিরক্ষরেখা বরাবর চাঁদের অবস্থান থাকে সবচেয়ে কম দূরত্বে। ফলে টান বাড়ে। এদিকে, মেরুপ্রদেশের হিমবাহ গলন, এল-নিনোর প্রভাবে আবহাওয়া বদলের কারণে পৃথিবীর ভরবেগে পরিবর্তন হচ্ছে। সবমিলিয়ে আমাদের গ্রহের ঘূর্ণনগতির হ্রাস-বৃদ্ধির নেপথ্যে এসব কারণ রয়েছে বলে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।