১৭ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আর্ন্তজাতিক

বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা কলঙ্কজনক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবাদ

বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা কলঙ্কজনক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবাদ

দিল্লি পুলিশের একটি অফিসিয়াল চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ আখ্যা দেওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এই ঘটনাকে “কলঙ্কজনক, অপমানকর, অসাংবিধানিক ও বাঙালিদের প্রতি অবমাননাকর” বলে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত ২৯ জুলাই, দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে বঙ্গভবনের (দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের গেস্ট হাউস) এক কর্মকর্তার কাছে পাঠানো একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে। চিঠিতে কিছু নথি অনুবাদের অনুরোধ জানানো হয় এবং সেখানে লেখা হয়, “নথিগুলো বাংলাদেশি ভাষায় রচিত”। চিঠিটি ছিল আটজন সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে করা একটি এফআইআর–এর তদন্তসংক্রান্ত।

গত ৩রা আগষ্ট রোববার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলা ভারতের সব বাংলাভাষী মানুষকে অপমান করার শামিল। এটা শুধুই করণিক ভুল নয়, এটা পরিকল্পিত।”

তিনি আরও বলেন: “ভারতের জাতীয় সংগীত এবং জাতীয় স্তোত্র—দুটোই বাংলায় লেখা। কোটি কোটি ভারতীয় বাংলায় কথা বলেন। সংবিধানে স্বীকৃত একটি ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা অসাংবিধানিক।”

তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে ‘ভাষা আন্দোলন’ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন:

“এটা শুধু ভুল নয়, এটা বাংলাকে হেয় করা এবং পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশের সঙ্গে এক করে দেখানোর পরিকল্পিত চেষ্টা।”

তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তা অমিত দত্তকে বরখাস্ত এবং দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের খুলে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।

এদিকে বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য বলেন, “পুলিশ যদি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তা হলে তৃণমূল কংগ্রেস সেটিকে ভাষার আড়ালে ঢাকার চেষ্টা করছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “সকল অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের আইন অনুযায়ী দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে। ভোটব্যাংকের রাজনীতি জাতীয় নিরাপত্তার বাধা হতে পারে না।”

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে, বিশেষত বিজেপি শাসিত অঞ্চলে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাওয়া শ্রমিকদের ওপর বৈষম্য, ভাষাগত তাচ্ছিল্য ও বৈধ অধিকার খর্ব করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পশ্চিমবঙ্গে এ বিষয়টি রাজনীতির অন্যতম ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।