১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশ

গুমের মামলায় সাবেক ও বর্তমান ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

গুমের মামলায় সাবেক ও বর্তমান ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

গুমের মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে সাবেক ও বর্তমান ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তবে পরোয়ানার কপি এখনো সেনাসদরের হাতে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

শনিবার (১১ অক্টোবর) সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাসদরে আসেনি। অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ৯ জন অবসরে আছেন, একজন এলপিআর-এ আছেন, বাকিরা চাকরিরত। সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে চাকরিতে থাকা ১৫ জনসহ মোট ১৬ জনকে হেফাজতে নিয়েছে, যার মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রয়েছেন।

তিনি জানান, ৩টি মামলায় ২৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অবসরে আছেন ৯ জন, এলপিআরএ একজন, আর বর্তমানে কর্মরত আছেন ১৫ জন।

মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান আরও জানান, সেনাবাহিনী আইন ও বিধি অনুযায়ী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, গত ৮ অক্টোবর চার্জশিট দাখিলের পর সেনাবাহিনীর লিভ প্রিপারেটরি টু রিটায়ারমেন্ট (এলপিআর) ও চাকরিরত ১৬ জন কর্মকর্তাকে সেনাসদরে সংযুক্ত করা হয় এবং ৯ অক্টোবরের মধ্যে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ছাড়া বাকি ১৫ জন নির্দেশনা অনুযায়ী উপস্থিত হয়েছেন এবং বর্তমানে তারা সেনা হেফাজতে আছেন। তারা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন।

মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, মেজর জেনারেল কবীর আত্মগোপনে গেছেন। তিনি যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত বুধবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

প্রথম মামলায় র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটক ব্যক্তিদের নির্যাতনের অভিযোগে ১৭ জনকে এবং দ্বিতীয় মামলায় জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) নির্যাতনের ঘটনায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়।

দুটি মামলারই প্রধান আসামি হিসেবে নাম রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার, যিনি জুলাই মাসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন। মামলায় আরও অভিযুক্ত আছেন তার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় নাম থাকা ৩০ জনের মধ্যে ২২ জনই কর্নেল থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পর্যায়ের বর্তমান ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা। ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর আদালতে হাজির করতে।