৩০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জোহরান মামদানি কি ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট না কমিউনিস্ট?

নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদপ্রার্থী ডেমোক্রেট জোহরান মামদানিকে ঘিরে সম্প্রতি একটি বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ একাধিক রিপাবলিকান নেতা ও ডানপন্থি মিডিয়া তাকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে পরিষ্কার বলা হয়েছে—মামদানি কমিউনিস্ট নন, তিনি একজন ‘ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট’ বা প্রগতিশীল সমাজতন্ত্রী।

৩৩ বছর বয়সী মামদানি নিউ ইয়র্কের কুইন্স থেকে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে বর্তমানে রাজনীতিতে সক্রিয়। চলমান নির্বাচনে এগিয়ে থাকা এই প্রার্থী সস্তা গণপরিবহন, ভর্তুকিযুক্ত শিশু সেবা, সরকারি মালিকানাধীন মুদি দোকান এবং করপোরেট ট্যাক্স বাড়ানোর মতো প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে তিনি কখনো ব্যক্তিগত মালিকানা বিলুপ্তি বা একদলীয় শাসনের পক্ষে মত দেননি—যা কমিউনিজমের অন্যতম মূলনীতি।

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ আনা গ্রিজমালা-বুসে বলেন, ‘জোহরান মামদানি কমিউনিস্ট নন। তার নীতিমালায় কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পিত অর্থনীতি কিংবা একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনো ইঙ্গিতই নেই।’

এরপরও ২৫ জুন ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ মামদানিকে ‘১০০ শতাংশ কমিউনিস্ট পাগল’ বলে দাবি করেন। একই সুরে বক্তব্য দেন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য এলিস স্টেফানিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক বেন শাপিরো এবং পডকাস্ট হোস্ট নিক সোরটার।

বিশ্লেষকদের মতে, মামদানির জনপ্রিয়তা আসলে শহুরে নাগরিকদের জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, যা ইউরোপ ও কানাডার মতো বহু গণতান্ত্রিক দেশে বহুদিন ধরেই বাস্তবায়ন হয়ে আসছে।

আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া এবং স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস। বিশ্লেষকদের মতে, নিউ ইয়র্কের ইতিহাসে এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে এক আমূল রাজনৈতিক দর্শনের বাস্তবিক পরীক্ষা।