জ্যামাইকায় ২য় ভবন ক্রয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ সোসাইটি, নিউ ইয়র্ক। সম্প্রতি টেরেস অন দ্য পার্কে অনুষ্ঠিত সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটি তাদের দ্বিতীয় ভবন ক্রয়ে কন্ট্রাক্ট স্বাক্ষর করার প্রাথমিক ঘোষণা প্রদান করেছিল। জানানো হয়েছিল যে সোসাইটি হিলসাইড এভিনউর উপর ১৮৮ ষ্ট্রীট ও ১৮৯ ষ্ট্রীটের মাঝখানে অবস্থিত একটি দ্বিতল ভবন ৪.৯ মিলিয়ন ডলারে ক্রয়ের কন্ট্রাক্ট স্বাক্ষর করেছে।
ভবনের ক্রয় এবং কন্ট্রাক্ট স্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভুমিকা পালনকারী সোসাইটির বর্তমান বোর্ড অফ ট্রাষ্টির চেয়ারম্যান ও গোল্ডেন এজ হোমকেয়ার এর স্বত্তাধিকারী জনাব শাহনেওয়াজ পরিচয়-কে জানিয়েছেন, এই ভবন ক্রয় সোসাইটির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ বটে কেননা সোসাইটিকে বিক্রেতার কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে।
যার মধ্যে রয়েছে : সোসাইটিকে প্রায় দুই বছরের মধ্যে ভবনটির সম্পূর্ণ মূল্য ৪.৯ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। যদিও বিক্রেতাসোসাইটিকে ৬.৫ % সুদের হারে ১.৯ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহযোগিতা দিতে সম্মত রয়েছে।
ভবনটি ক্রয়ের কন্ট্রাক্ট স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব শাহনেওয়াজ, সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্দ আলী, ও কোষাধক্ষ্য মফিজুল ইসলাম ভুইয়া,সহ কার্যকরী পরিষদের আরো কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

ভবন ক্রয়ে সোসাইটিকে আগামী ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে তিন মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে হবে। বাকি ১.৯ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে ভবনের বিক্রেতা, সুদের হার এক বছরের জন্য ৬.৫%।
জনাব শাহ নেওয়াজ জানান, বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হবে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা এক বছরের পরিবর্তে দুই বছর করা হোক। তবে ভবনের মালিক এই বিষয়ে এখনও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি। তবে বলেছেন, যদি দুই বছরে ভবনের মালিক প্রদত্ত ১.৯ মিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব না হয়, তাহলে সুদের হার গিয়ে দাঁড়াবে ২৫% এর উপর। ভবনের আয়ের ব্যাপারে জনাব শাহনেওয়াজ বলেন, বর্তমানে ভবনটির দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা বাজার দরের চাইতে কম মুল্যে মাসে মাত্র১২ হাজার ডলার ভাড়ায় ব্যবহার করছে এক্সিট রিয়েলটি। তাদের লীজের মেয়াদ আরো ৫/৬ বছর বাকি রয়েছে। আরো কিছু ভাড়াটিয়া রয়েছে যাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত ভাড়া এবং এক্সিট রিয়েলটির ১২,০০০ ডলার যোগ করে মর্টগেজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। ফলে সোসাইটি বিনা ভাড়ায় অফিস ব্যবহার করতে পারবে বলে জানান সোসাইটির বোর্ড অফ ট্রাষ্টি চেয়ারম্যানজনাব শাহনেয়াজ। এছাড়া কিছু বাড়তি আয়ও সম্ভব বেলে জানান তিনি। নিচের তলায় যে পার্কিং লট রয়েছে তার অর্ধেক সোসাইটির ব্যবহারের জন্য বাকি অর্ধেক এক্সিট রিয়েলটির ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে লীজ থাকা পর্যন্ত। সোসাইটি চাইলে নিচের তলার একাংশ কমিউনিটি সেন্টারে রুপান্তরিত করে ভাড়ার মাধ্যমে ভবনের আয় বৃদ্ধি করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ভবনটির ক্রয়ে সোসাইটির মূল লক্ষ্য এখন জরুরী ভিত্তিতে তিন মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা, কারণ কোন ব্যাংক কিংবা ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন থেকে ঋণ পাওয়া খুবই মুশকিলের বিষয়, প্রায় অসম্ভর। ফলে যত বেশি অর্থ সংগ্রহ করা যায় তারই চেষ্টা চলছে বলেও জানান জনাব শাহনেওয়াজ।
শেষ চেষ্টা হিসেবে প্রাইভেট ল্যান্ডিং কিংবা ব্যক্তিগত ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে তিন মিলিয়ন ডলার পরিশোধের চিন্তাভাবনাও তাঁদের রয়েছে। এই জন্যে তারা কমিউনিটির সর্বাত্মক সহযোগিতা আশা করছেন। সোসাইটির ২য় ভবন ক্রয়ে সহায়তার জন্য বর্তমানে এলমহাষ্ট এলাকায় যে ভবনটি রয়েছে সেটি বিক্রয় করার চিন্তা ভাবনা করছেন কিনা এমন এক প্রশ্নের উত্তরে জনাব শাহনওয়াজ জানান, আপাতত তেমন কোন চিন্তা নেই। তবে তার মতে যেহেতু সোসাইটির কার্যক্রম নতুন ভবন থেকেই পরিচালিত হবে তাহলে পুরনো ভবনটি বিক্রি করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন। এ সিদ্ধান্তের জন্য সাধারণ সভায় অনুমোদন প্রয়োজন হবে বলে জানান তিনি।
২য় ভবনটি ক্রয়ে নিউ ইয়র্ক বাংলাদেশ সোসাইটির যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেটি মোকাবেলা করার জন্য কমিটির সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন জনাব শাহনওয়াজ।