১৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অর্থনীতি

বিশ্বের যে ১০টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সবচেয়ে বেশি সোনা মজুত রয়েছে

বিশ্বের যে ১০টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সবচেয়ে বেশি সোনা মজুত রয়েছে

২০২৫ সালে এসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং চীনের মতো দেশগুলো সবচেয়ে বেশি সোনার মালিক হয়ে উঠেছে, যা বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেও তাদের অর্থনীতিকে রাখছে সুরক্ষিত।

মুদ্রাস্ফীতি, মুদ্রার ঝুঁকি আর আর্থিক সংকট থেকে নিজেদের অর্থনীতিকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সোনার মজুতকে ব্যবহার করে এক অস্ত্র হিসেবে। ২০২৫ সালে এসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং চীনের মতো দেশগুলো সবচেয়ে বেশি সোনার মজুতের মালিক হয়ে উঠেছে, যা বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেও তাদের অর্থনীতিকে রাখছে সুরক্ষিত। পিছিয়ে নেই ভারতসহ অন্যান্য দেশগুলোও, তারাও বাড়িয়ে চলেছে তাদের সোনার ভান্ডার।

১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: ৮,১৩৩ টনেরও বেশি সোনার মালিক বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোনার মজুত রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে, যার পরিমাণ ৮,১৩৩ টনেরও বেশি। এই বিপুল পরিমাণ সোনার বেশিরভাগই ফোর্ট নক্সের দুর্ভেদ্য ভল্টে সুরক্ষিত আছে। এই বিশাল মজু্ত কেবল মার্কিন ডলারকেই শক্তিশালী ভিত্তি দিচ্ছে না, বরং বিশ্ব অর্থনীতিতে তাদের প্রভাবকেও অটুট রাখতে সাহায্য করছে।

২. জার্মানি: ইউরোপের সোনার রাজা, মজুদ প্রায় ৩,৩৫০ টন ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সোনা রয়েছে জার্মানির দখলে, যার পরিমাণ প্রায় ৩,৩৫০ টন। স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের পর, তারা বিদেশ থেকে তাদের বেশিরভাগ সোনা দেশে ফিরিয়ে এনেছে। জার্মানির এই বিপুল সোনার মজুত ইউরোজোনের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য এক মজবুত স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে।

৩. ইতালি: প্রায় ২,৪৫২ টন ইতালির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে মজু্ত রয়েছে প্রায় ২,৪৫২ টন সোনা, যা পরিচালনা করে ব্যাঙ্কা ডি’ইতালিয়া। তাদের এই সোনার মজুত কয়েক দশক ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে এবং এটি দেশটির অর্থনৈতিক আস্থা ও জাতীয় সম্পদ সংরক্ষণের এক উজ্জ্বল প্রতীক।

৪. ফ্রান্স: প্রায় ২,৪৩৭ টন ফ্রান্সের ভান্ডারে রয়েছে প্রায় ২,৪৩৭ টন সোনা, যার বেশিরভাগই প্যারিসের মাটির নিচের সুরক্ষিত ভল্টে রাখা আছে। ইউরোজোনের অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে, ফ্রান্সের এই সোনার মজু্ত তাদের অর্থনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৫. রাশিয়া: প্রায় ২,৩৩৩ টন গত এক দশকে ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে রাশিয়া বিদ্যুৎ গতিতে তাদের সোনার মজুত বাড়িয়ে চলেছে। এখন প্রায় ২,৩৩৩ টন সোনা নিয়ে, তারা একদিকে খনি থেকে উত্তোলন এবং অন্যদিকে কৌশলগত ক্রয়ের মাধ্যমে এক অপ্রতিরোধ্য সোনার দুর্গ গড়ে তুলেছে।

৬. চীন: প্রায় ২,২৭৯ টন এবং আরও বাড়ছে : চীনের সরকারি হিসাবে সোনার মজু্ত প্রায় ২,২৭৯ টন, তবে লাগাতার ক্রয়ের কারণে এর আসল পরিমাণ সম্ভবত আরও অনেক বেশি। নিজেদের অর্থনীতিকে বহুমুখী এবং আর্থিকভাবে স্বাধীন করার লক্ষ্যে, চীন সোনাকে বিশ্বব্যাপী মুদ্রার ঝুঁকির বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী রক্ষাকবচ হিসেবে দেখছে।

৭. সুইজারল্যান্ড: প্রায় ১,০৪০ টন : সুইজারল্যান্ডের মোট সোনার মজুতের পরিমাণ প্রায় ১,০৪০ টন, যা তাদের মুদ্রা সুইস ফ্রাঁর স্থিতিশীলতাকে ধরে রেখেছে। যদিও সুইজারল্যান্ড ২০০০-এর দশকের শুরুতে তাদের মজুত কিছুটা কমিয়েছিল, তবুও এটি আজও সোনার জন্য বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবেই পরিচিত।

৮. ভারত: প্রায় ৮৮০ টন ভারত লাগাতার তাদের সোনার মজু্ত বাড়িয়ে চলেছে এবং এখন রেকর্ড ৮৮০ টন সোনা ধারণ করছে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক মুদ্রার ভান্ডারকে শক্তিশালী করতে সোনা কেনা অব্যাহত রেখেছে, যা ভারতীয় অর্থনীতিতে সোনার অপরিহার্য ভূমিকা তুলে ধরে।

৯. জাপান: প্রায় ৮৪৬ টন জাপানের হাতে রয়েছে প্রায় ৮৪৬ টন সোনা, যা তাদের বিশাল বৈদেশিক মজুতের একটি ছোট অংশ হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক চাপ এবং সতর্ক মুদ্রানীতির এই সময়ে, এই সোনা তাদের আর্থিক নিরাপত্তা প্রদানে এক নীরব শক্তি হিসেবে কাজ করে।

১০. নেদারল্যান্ডস: ৬২৩ টন ডাচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে রয়েছে প্রায় ৬২৩ টন সোনা। সম্প্রতি, তারা তাদের সোনার ভান্ডার দেশের আরও কাছে সরিয়ে এনেছে, যা জাতীয় অর্থনৈতিক সুরক্ষার জন্য ভৌত সোনার গুরুত্বকে আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।