অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অভিযোগে কানাডায় আশ্রয়প্রার্থী এক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ (আইসিই)। কানাডিয়ান প্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডায় আশ্রয়প্রার্থী ওই তরুণের নাম মাহিন শাহরিয়ার। মাহিন ২০১৯ সাল থেকে কানাডায় বসবাস করছেন। তবে, যুক্তরাষ্ট্রে আটকের পর তাঁকে ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে কানাডা।
কানাডিয়ান প্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলো সীমান্ত এলাকায়। মাহিন জানান, তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। তাই কিছুদিন বাড়ির বাইরে থাকতে চেয়েছিলেন। তখন এক বন্ধু তাঁকে কোথাও ঘুরতে যেতে বলেন, যেখানে তিনি নিজের মতো করে কিছুদিন থাকতে পারতেন। এরপরই বেরিয়ে পড়েন মাহিন। কিন্তু তিনি যে স্থানটিতে যান, সেটি ছিল কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের খুব কাছাকাছি। পরে মাহিন বুঝতে পারেন, তিনি সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে চলে গেছেন। মাহিন বলেন, ‘আমি শুধু বন্ধুর দেওয়া দিকনির্দেশনা অনুসরণ করছিলাম। হঠাৎ দেখি আমি যুক্তরাষ্ট্রে। এটা আমার উদ্দেশ্য ছিল না।’
মাহিন জানান, সীমান্তে প্রবেশের পর তিনি নিজেই মার্কিন সীমান্তরক্ষীদের কাছে গিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কর্মকর্তারা তাঁকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অভিযোগে আটক করেন।
আইসিই কর্মকর্তারা মাহিনের আইনজীবী ওয়াসিম আহমেদকে জানিয়েছেন, তাঁরা মাহিনকে ফেরত নিতে কানাডাকে বাধ্য করবে না। একই সঙ্গে, মাহিনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোও সম্ভব নয়। কারণ, তাঁর কাছে কোনো বৈধ নথিপত্র নেই।
মাহিনের আইনজীবী ওয়াসিম আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি এখন জরুরি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টে শুনানির আবেদন করছেন, যাতে মানবিক কারণে কানাডা সীমান্ত সেবা সংস্থা (সিবিএসএ) মাহিনকে ফেরত নিতে রাজি হয়। তিনি বলেন, ‘কানাডা ছাড়ার আগে মাহিন সেখানে বৈধভাবে বসবাস করছিলেন। তাঁর মা ও বোন দুজনেই কানাডায় বৈধ অবস্থায় আছেন এবং তিনিও সেখানে পরিবারের সদস্য হিসেবে বসবাস করছিলেন।’
কানাডিয়ান প্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ সেপ্টেম্বর মাহিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নথিতে স্বাক্ষর করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চান না। কারণ, তাঁর পরিবার ইতিমধ্যেই কানাডায় আশ্রয় পেয়েছে এবং তাঁর নিজের আবেদনও এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মাহিন আসলে কোথায় যাবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
মাহিন জানান, তাঁর মা-বাবার বিচ্ছেদ হওয়ার পর তিনি, তাঁর মা ও বোন কানাডায় পালিয়ে আসেন। তিনি তাঁর মা এবং ছোট বোনের ভরণপোষণের জন্য উবার চালাতেন।