১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অর্থনীতি

যে ডলার আছে তা বাংলাদেশের আপৎকালীনের জন্য পর্যাপ্ত নয় জানালেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন

যে ডলার আছে তা বাংলাদেশের আপৎকালীনের জন্য পর্যাপ্ত নয় জানালেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন

বর্তমানে আমাদের কাছে যে পরিমাণ ডলার আছে তা বাংলাদেশের আপৎকালীনের জন্য পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডলারের ডিমান্ড তো কমে যাচ্ছে, সে হিসাবে ডলারের দামও কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে দুই মিলিয়ন ডলার নিয়ে নিয়েছে দাম একই পর্যায়ে রাখার জন্য। তা আমদানিকারকদের জন্য চাপ হয়ে যাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ডলারের দাম কিছুটা যদি স্থিতিশীল না রাখি তাহলে খারাপ প্রভাব পড়বে। যারা রেমিট করে তাদের বিষয়টাও দেখতে হবে। কারণ তারাই তো আমাদের চালিকাশক্তি।’

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা ডলার কিনছি সেটা ঠিক। কিন্তু এখন আমাদের কাছে যে ডলার আছে তা বাংলাদেশের আপৎকালীনের জন্য পর্যাপ্ত নয়। ধরুন দেশে বড় ধরনের কোনো একটা কিছু হলো। তখন দ্রুত যদি কিছু আনতে হয়, তখন কী হবে। ফরেন এক্সচেঞ্জ শুধু আমদানির জন্য ব্যবহার করা হয় সেটা আপনাদের ভুল ধারণা। সেভ কিছু না থাকলে বিপদ হবে।’

তিনি বলেন, ‘এটা আমি টের পেয়েছি যখন আমি ২০০৭/০৮ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলাম তখন। সে সময় সিডর, আইলা হলো, তখন অনেক ঝামেলা হয়েছে। যাই হোক, সে সময় আমরা সেটা সামাল দিয়েছিলাম। সুতরাং এসবের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ঠিক করেছে রিজার্ভটা বিল্ডআপ করা দরকার।’

বৈঠকের বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আজকের বৈঠকে কিছু বৈচিত্র্য ছিল। আমরা সার, কিছু খাদ্যপণ্য আমদানি করি। কিন্তু এবার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেমন: চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরকে আপগ্রেড করার জন্য সেখানকার রানওয়ে আপগ্রেড করার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুম আরও আধুনিকায়ন করার জন্য একটা প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছি। এ ছাড়া অকটেন আনার অনুমোদন দিয়েছি। বর্তমানে অকটেনের কিছুটা ঘাটতি আছে। দেশের অভ্যন্তরে অকটেনের চাহিদা আছে। তাই আমরা চাই না যে দেশে কোনো রকমের জ্বালানির সংকট হোক।’

চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরের মান উন্নয়নে কী করা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের রানওয়েটা গ্রেড-১-এর স্পেস বাড়ানো দরকার। বিশেষ করে বড় বিমান ওঠানামা করতে হলে রানওয়েটা গ্রেড-২তে উন্নীত করতে হবে। একই সঙ্গে ঢাকার কন্ট্রোল রুমটা আরও আধুনিক করা হবে। কেনা হচ্ছে ৫০ হাজার টন অকটেন, ব্যয় ৪১৩ কোটি টাকা

দেশের চাহিদা মেটাতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাসোলিন ৯৫ আনলেডেড (অকটেন) আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৪১৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রতি ব্যারেলের মূল্য ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ২০ মার্কিন ডলার। কেনা হচ্ছে ৪৭২ কোটি টাকার সার, নির্মাণ হবে বাফার গুদাম

কৃষি মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ৯৫ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৩৫ হাজার টন এমওপি এবং ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনা হবে। এই সার কিনতে ব্যয় হবে ৪৭২ কোটি ৮ লাখ ৬৬ হাজার ২৫০ টাকা। সার কেনার পাশাপাশি সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে রাজশাহীতে ২৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার একটি গুদাম নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।