১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

খালি পেটে উপকারী পাঁচ পানীয়

সারাদিন সজীব থাকতে সকালে সঠিক খাবার ও পানীয় বাছাই করা জরুরি। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি পান করা দারুণ অভ্যাস। তবে এ পানির সঙ্গে অন্য উপাদান মিশিয়ে নিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।এতে পানির উপকারিতার সঙ্গে যোগ হয় মেশানো উপকরণের গুণ।

আদা পানি : আদায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান হজমশক্তি বাড়ায়, গ্যাস ও বদহজম কমায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। উপাদানটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করার পাশাপাশি ব্যথা উপশমে সহায়তা করে। আদা পানি প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। পানীয়টি তৈরি করতে এক খন্ড আদা ছুলে ধুয়ে নিন। চার কাপ পানি ফুটতে দিন। পানি ফুটে উঠলে আদা ছেঁচে পানিতে দিন। ১০ মিনিট ফোটান। এবার পানিটা ছেঁকে পান করুন। চাইলে এর সঙ্গে মধু বা লেবুর রস মিলিয়েও পান করতে পারেন।

লেবু পানি : লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড পিত্তরস উৎপাদনে সাহায্য করে, যা খাবার সঠিকভাবে হজম করতে এবং গ্যাস, বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করতে সহায়ক। এছাড়া, প্রস্রাবের অম্লত্ব কমিয়ে কিডনি পাথর প্রতিরোধে সাহায্য করে। লেবুর ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও টানটান রাখতে সাহায্য করে। লেবু পানি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে। সকালে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। তবে যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে তাদের এ পানীয়টি এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ।

মেথি পানি : মেথিতে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। সেইসঙ্গে অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা, ও কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো হজমের নানা সমস্যা দূর করে। মেথি বীজে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে যা রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল ও শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া মেথি ত্বক ও চুলের জন্য খুব উপকারী। এটি গরমজনিত ত্বকের সমস্যা, যেমন – ঘা, ফোড়া, খুশকি ও ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি খেলে শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত হয়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। দুই চা চামচ পরিমাণ মেথি ভালো করে ধুয়ে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে পানিটা খেতে হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে মেথি পানি খাওয়া ভালো।

চিয়াবীজ ভেজানো পানি : চিয়াবীজে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা রেখে ওজন কমাতে সাহায্য করে। চিয়াবীজ রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড কোলেস্টেরল কমাতে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানিতে এক থেকে দুই টেবিল চামচ পরিমাণ চিয়াবীজ যোগ করা হয়। সারা রাত ভিজিয়ে রাখলে পানীয়টি আঠালো হয়। এতে মধু, অন্য যে কোনো ফল মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে।

গ্রিন টি : সকালে এককাপ চা না হলে যেন দিনটা শুরুই হতে চায় না বেশিরভাগ মানুষের। তবে চায়ের সঙ্গে দুধ-চিনি মেশানো বন্ধ করুন। এর বদলে পান করুন চিনি ছাড়া গ্রিন টি। এই চায়ে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বক ভালো রাখতে কাজ করে। এটি ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও ভীষণ উপকারী। সেইসঙ্গে বাড়ায় মেটাবলিজমও। তবে এই চা সরাসরি খালি পেটে পান না করে আগে একমুঠো ভেজানো ড্রাই ফ্রুটস খেয়ে নিন। তারপর গ্রিন টি-এর কাপে চুমুক দিন।