গত ১৫ আগষ্ট নিউইয়র্কে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। বাংলাদেশে এ বছর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুরো নিউইয়র্ক শহর যেন ১৫ আগস্ট হয়ে উঠেছিল বঙ্গবন্ধুময়। বিভিন্ন আয়োজনে শুধু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীই নন, সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।

শুধুমাত্র নিই ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকাতেই দুই দিনে অনুষ্ঠিত হয় আটটি পৃথক অনুষ্ঠান। কোনো কোনো য়োজনে বিশাল ডিজিটাল স্ক্রিনে ভেসে ওঠে বঙ্গবন্ধুর ছবি ও ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। এছাড়া ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন, জ্যামাইকা ও অ্যাস্টোরিয়া এলাকাতেও শোক দিবসের অনুষ্ঠান পালিত হয়।

এদিন নিউইয়র্কজুড়ে নানা রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের স্যালুট, আলোচনা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, দোয়া মাহফিল, আপ্যায়ন, গাছের চারা ও জায়নামাজ বিতরণ। প্রতিটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ, আওয়ামী পরিবার, জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী, একাত্তরের প্রহরী ফাউন্ডেশন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উদযাপন কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী ফোরাম ইউএসএ, গোপালগঞ্জ ফাউন্ডেশন আমেরিকা ইনকসহ বিভিন্ন সংগঠন।

গত ২০ বছর যাবত জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী নামের সংগঠনটি পরম শ্রদ্ধায় উদযাপন করে আসছে। এবারও শাকিল মিয়া, মীর নিজামূল হক, মো: আলম নমি, মামুন মিয়াজী ও সোহেল গাজীর সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও তত্তাবধানে ১৫ আগষ্ট শুক্রবার দুপুর থেকে জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ ষ্ট্রীটে নবান্ন রেষ্টুরেন্টের সমানে দোয়া মাহফিল, চারা গাছসাথ ও জায়নামাজ বিতরণ ও সহস্রাধিক মানুষকে আপ্যায়নের কর্মসূচি পালন করে জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী।

জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর সাথে স্বেচ্ছায় রক্দান কর্মষুচী পালন করে শাহ ফাউন্ডেশন ।

এবার নিউ ইয়র্কে বঙ্গবন্ধু স্মরণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে কোনদিন বালার মাটি থেকে নিঃশেষ করা যাবে না। শেখ মুজিব সেই বিস্ময় যাকে মানচিত্র থেকে উৎখাত করতে চাইলে তিনি বিশ্ব মানচিত্রের বন্ধু হয়ে উঠেন।

বক্তারা আরও বলেন, এবার ১৫ আগস্টে সারা বিশ্বে বাস্তবে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, বাঙালির হৃদয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অম্লান, অক্ষয় এবং চিরঞ্জীব। তিনি ছিলেন এবং আছেন।

প্রসঙ্গত, বিগত সরকারের আমলে এই দিনটিতে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারী পর্যায়ে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হতো। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের নতুন অন্তবর্র্তী সরকার দিবসটিতে সরকারি ছুটি বাতিল করে। ফলে গত ১৫ বছর পর এবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনসুলেটে ‘১৫ আগস্ট’ উদযাপন করা হলো না।