আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রচারে ধনকুবের তথা টেসলা-কর্তা ইলন মাস্ককে পাশে পেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প প্রশাসনে বিশেষ গুরুত্ব পান মাস্ক। তবে সম্প্রতি সেই সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে।
এক সময়ের বন্ধু এখন তাঁর অন্যতম ‘শত্রু’। মাস খানেক আগে দুই ‘বন্ধু’র বিরোধ চরমে উঠেছিল। কথা হচ্ছে, ইলন মাস্ক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের। দু’জনের সম্পর্ক ঠেকেছিল তলানিতে। তবে পরিস্থিতি পাল্টেছে, সময় গড়িয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনে করেন, খারাপ মানুষ নন মাস্ক। তবে সময় খারাপ যাচ্ছে তাঁর!
সম্প্রতি সমীক্ষা সংস্থা ‘গ্যালপ’-এর একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। সেই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, জানুয়ারির তুলনায় আমেরিকায় মাস্কের জনপ্রিয়তা অনেকটা কমেছে! সেই বিষয়ে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি জানি না ওই সমীক্ষা সঠিক কি না। তবে আমার মনে হয়, ও (মাস্ক) এক জন ভাল মানুষ। তবে তার সময় খারাপ সময় যাচ্ছে। কিন্তু অবশ্যই ও ভাল মানুষ, এটা আমার বিশ্বাস।’’
উল্লেখ্য, গত ৭ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ‘গ্যালপ’ একটি সমীক্ষা চালায়। তারা হাজার জন আমেরিকানের কাছে ১৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সম্পর্কে জানতে চায়। সেই ১৪ জনের মধ্যে ছিলেন যেমন মাস্ক, তেমনই ছিলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, পোপ লিও চতুর্দশও। সেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জানুয়ারির তুলনায় জুলাইয়ে মাস্কের জনপ্রিয়তা কমেছে ২৪ পয়েন্ট। ৬১ শতাংশ উত্তরদাতা মাস্কের সম্পর্কে নেতিবাচক মতামত দিয়েছেন। তবে ৩৩ শতাংশ উত্তরদাতার পছন্দের তালিকায় ছিলেন মাস্ক। বাকি ছয় শতাংশ মুখ খুলতে চাননি মাস্কের সম্পর্কে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রচারে ধনকুবের তথা টেসলা-কর্তা মাস্ককে পাশে পেয়েছিলেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান প্রার্থীর প্রতি মাস্ক সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন। ট্রাম্পের হয়ে প্রচারও করেছেন। ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প প্রশাসনে বিশেষ গুরুত্ব পান মাস্ক। তাঁকে প্রেসিডেন্টের বিশেষ পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁর জন্য গড়ে দেওয়া হয়েছিল আলাদা একটি দফতর। সেই সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতর (ডিওজিই)-এর কাজ ছিল অপ্রয়োজনীয় খরচে কাটছাঁট করে সরকারের সাশ্রয়ের ব্যবস্থা করা। ট্রাম্প এবং মাস্কের ঘনিষ্ঠতা দিন দিন বাড়ছিল। কিন্তু সম্প্রতি একটি বিলকে কেন্দ্র করে দু’জনের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। যে বিলকে ট্রাম্প ‘বড় ও সুন্দর’ বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন, প্রকাশ্যে তার সমালোচনা শুরু করেন। এক সময়ের মধুর সম্পর্ক তিক্ততার রূপ নেয়। ট্রাম্পকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও ছাড়েননি মাস্ক। ডিওজিই ছেড়ে দেন তিনি। তবে মার্কিন কংগ্রেসের উভয়কক্ষে পাশ হওয়ার পর আইনে পরিণত হয়েছে ট্রাম্পের সেই ‘বড় ও সুন্দর’ বিল। তার পরই নিজের নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা করেন মাস্ক। নাম দিয়েছেনন ‘আমেরিকা পার্টি’। তবে মাস্কের দলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বলেও জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।