যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পরীক্ষাও পরিবর্তন আনা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেসের (ইউএসসিআইএস) নতুন পরিচালক জোসেফ এডলো ।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এডলো বলেন, “নাগরিকত্ব পরীক্ষাটা এখন খুব সহজ। কেবল উত্তর মুখস্থ করলেই পাস করা যায়। এটি আইন অনুযায়ী সঠিকভাবে হচ্ছে না বলে আমি মনে করি।”
ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে অভিবাসন ব্যবস্থায় কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে, তা স্পষ্ট করেছেন এডলো। বর্তমান প্রশাসন অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং ব্যাপক নির্বাসন অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থাটি দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এই ভিসা প্রক্রিয়ায় সেসব কোম্পানিকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত যারা বিদেশি কর্মীদের বেশি বেতন দিতে রাজি।
এডলো বলেন, এই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হলে রিপাবলিকান দলের অভ্যন্তরে ভিসাবিরোধী গোষ্ঠীর সমালোচনা অনেকটাই হ্রাস পাবে। কারণ, অনেকের অভিযোগ— বিদেশি কর্মীরা কম বেতনে কাজ করায় দেশীয় শ্রমবাজারে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
তবে, প্রযুক্তি খাতের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি এই প্রোগ্রামের পক্ষে। তাদের মতে, মার্কিন বাজারে পর্যাপ্ত যোগ্য কর্মী পাওয়া যায় না, তাই বিদেশিদের ওপর নির্ভরতা বাড়াতে হয়।
এডলো বলেন, “আমার প্রিয় একটি বক্তব্য হলো— এইচ-১বি ভিসাসহ অভিবাসনের নানা অংশ মার্কিন অর্থনীতিকে সম্পূরক হিসেবে সাহায্য করবে, বদলি নয়।”
বর্তমানে বছরে প্রায় ৮৫ হাজার এইচ-১বি ভিসা লটারির মাধ্যমে ইস্যু করা হয়। প্রস্তাবিত এই পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়নের জন্য ফেডারেল সরকারের বিধি প্রণয়ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
এডলো আরও বলেন, নাগরিকত্ব পরীক্ষার বর্তমান কাঠামোও বদলানো হবে। বর্তমানে, ১০০টি প্রশ্ন থেকে যেকোনো ১০টি করা হয়, যার মধ্যে ৬টির সঠিক উত্তর দিতে হয়।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এটি ২০ প্রশ্নে বাড়ানো হয়েছিল এবং উত্তীর্ণ হতে ১২টি সঠিক উত্তর প্রয়োজন ছিল। এডলো জানিয়েছেন, আবার সেই সংস্করণে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
২০২০ সালে অস্থায়ীভাবে ইউএসসিআইএস-এর নেতৃত্ব দেওয়ার পর এবার সিনেট কর্তৃক পূর্ণাঙ্গভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন জোসেফ এডলো। এখন থেকে তিনি নাগরিকত্ব, কাজের ভিসা, শরণার্থী ও আশ্রয় কার্যক্রমের তদারকি করবেন।
তিনি বলেন, “আমার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন অবশ্যই একটি নেট পজিটিভ হওয়া উচিত। যদি কেউ অর্থনৈতিক খাতে উন্নয়ন এবং জাতীয় স্বার্থে অবদান রাখে, তাহলে তার অভিবাসনের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত।”
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইউএসসিআইএস এমন অভিবাসীদের গ্রিনকার্ড পাওয়া কঠিন করে তোলে যারা সরকারি সহায়তা গ্রহণ করতেন, যদিও এডলো বলেছেন, তিনি সেই নীতিতে ফিরে যেতে চান না।
তবে আশ্রয় ব্যবস্থায় কিছু নিয়ন্ত্রণমূলক পরিবর্তন এনেছিল এজেন্সি, যা একাধিকবার ফেডারেল কোর্টে চ্যালেঞ্জ হয়েছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।