গত২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনার মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল- এমন অভিযোগ তুলে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তার প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড।
শুক্রবার (১৯ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তুলসি গ্যাবার্ড এই ঘটনাকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক ষড়যন্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “ওবামা প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা একটি দীর্ঘমেয়াদী অভ্যুত্থানের ভিত্তি তৈরি করেন এবং ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ভুয়া গোয়েন্দা তথ্য তৈরি করেন।” তিনি দাবি করেন, এই ষড়যন্ত্রে যে বিতর্কিত নথি ব্যবহার করা হয়েছিল, তা তৈরি করেছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিশ্লেষক ক্রিস্টোফার স্টিল এবং সংশ্লিষ্টরা জানতেন এই নথিকে অবিশ্বস্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
গ্যাবার্ড বলেন, “আমরা আজ যে তথ্য প্রকাশ করছি, তা স্পষ্ট করে দেখায় যে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্টের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তাকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা।”
তুলসির মতে, এই ষড়যন্ত্রে যাঁরা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। “এভাবে বিচার না হলে ভবিষ্যতে এমন ষড়যন্ত্র আবার ঘটবে”- বলেছেন তিনি।
গ্যাবার্ড জানান, তিনি ইতিমধ্যে তার দাবির পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগে বিভিন্ন নথি জমা দিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ওবামা প্রশাসনের সাইবার হুমকি সংক্রান্ত একটি আংশিক গোপন গোয়েন্দা মূল্যায়ন এবং তৎকালীন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক জেমস ক্ল্যাপারের কার্যালয়ের কিছু গোপন মেমো।
এই অভিযোগে নাম রয়েছে বেশ কয়েকজন সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তার- তৎকালীন সিআইএ পরিচালক জন ব্রেনান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, এফবিআই উপপরিচালক অ্যান্ড্রু ম্যাকাবে এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
এই অভিযোগের মাধ্যমে রাশিয়া হস্তক্ষেপ ইস্যুতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদিও রবার্ট মুলারের নেতৃত্বাধীন তদন্তে বলা হয়েছিল, রাশিয়া ২০১৬ সালের নির্বাচনে ‘বিস্তৃত ও পদ্ধতিগতভাবে’ হস্তক্ষেপ করেছিল, তবে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের সঙ্গে তাদের যোগসাজশের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় তুলসি গ্যাবার্ডের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। তার গোয়েন্দা অভিজ্ঞতা না থাকা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাবের কারণে এই নিয়োগ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।