নিউইয়র্ক     শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড

১১ বছর আগেই পেরিয়ে গেছে ৪৮ ঘণ্টা তবুও মেলেনি বিচার

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১০:১৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১০:১৯ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
১১ বছর আগেই পেরিয়ে গেছে ৪৮ ঘণ্টা তবুও মেলেনি বিচার

১১ বছরে শুকিয়ে গেছে মায়ের চোখের জল, দাখিল হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ বদলেছে ৯৪ বার। অথচ হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচারের ঘোষণা দেয় সরকার। ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে আজ ১১ বছর পূর্ণ হলো সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের। তবুও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার মিলবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রযন্ত্রের উপর আঙুল তোলার জন্য এই হত্যাকাণ্ডের বিচার-ব্যর্থতাই কি যথেষ্ট নয়। এভাবেই এই প্রতিবেদকের কাছে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।

নিহত সাংবাদিক সাগর সারোয়ারের পরিবার জানায়, সাগরের মা সালেহা মনির আজও বিচারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। যদিও তিনি জানেন না জীবদ্দশায় আদৌ বিচার দেখে যেতে পারবেন কিনা। জানি না।’

দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে নিহত সাংবাদিক সাগরের মা এবং মেহেরুন রুনির শাশুড়ি সালেহা মনির বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত কবরের কাছে যাইনি। প্রতিজ্ঞা ছিল সাগরের খুনিকে দেখেই কবর জিয়ারত করতে যাব। কিন্তু সেটি আদৌ পারব কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তারপরও আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া। হয়তো সাগরের খুনিকে দেখার জন্যই আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন। সবাইকে বলে গেছি- যদি আমি মারা যাই তাহলে আমার ছেলের পাশাপাশি আমাকে মাটি (কবর) দিও।’

সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত বারবার পেছানোর প্রসঙ্গ এনে সালেহা মনির বলেন, এটি সম্পূর্ণই সাজানো নাটক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইচ্ছা করলেই পারে। কিন্তু কোথাও একটা বাধা রয়েছে, যার জন্য বারবার তদন্ত প্রতিবেদন পিছিয়ে যাচ্ছে। এতে আমাদের ‘হ্যারেস’ করা হচ্ছে। আমি মনে করি তদন্ত কর্মকর্তারা যা পাওয়ার পেয়ে গেছেন, কিন্তু তা উপস্থাপন হচ্ছে না। কোনো কিছুর বাধার কারণেই বারবার তদন্ত পিছিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, র‌্যাব যদি না পারে তাহলে ছেড়ে দিক। ওনারা কেন ধরে রেখেছেন। আবার ‘ভিকটিমের’ পরিবারদেরও ওনারা বিভিন্ন ধরনের আশ্বাস দিচ্ছেন। এটি সম্পূর্ণই চোর-পুলিশ খেলার মতো।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর রাজাবাজারের ভাড়া ফ্ল্যাটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নৃশংস হত্যার শিকার হন মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের তৎকালীন বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি। বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিলেও আজও প্রকৃত রহস্য বা খুনিরা গভীর অন্ধকারেই রয়ে গেছে।

এদিকে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা রহস্য উন্মোচন না হলে শিগগিরই কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। গতকাল শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচি এ দাবি জানানো হয়। ৯৪ বার সময় দেওয়ার পরও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি র‌্যাব। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল

শেয়ার করুন