নিউইয়র্ক     মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া

জনগণ চায় শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, এতে যুক্তরাষ্ট্র অখুশি কেন ?

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৩ | ১০:৫২ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৬ মে ২০২৩ | ১০:৫২ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
জনগণ চায় শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, এতে যুক্তরাষ্ট্র অখুশি কেন ?

বাংলাদেশের জনগণ এখন রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের ব্যাপারে সচেতন। ১৪ বছর ধরে দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বজায় থাকায় তাদের এই অধিকার নিশ্চিত হয়েছে বলে জনগণ মনে করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর দেশে দারিদ্র্য কমেছে, খাদ্য নিরাপত্তা বেড়েছে; শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গৃহায়নসহ সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। তাহলে মানুষ কেন চাইবে না এই উন্নয়নের নেত্রীর হাতেই সোনার বাংলা সুরক্ষিত থাকুক ? যেখানে আমেরিকা বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে- সেখানে অন্যান্য দেশ ভূয়সী প্রশংসা করছে। ২০২২ সালের বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরে মানবাধিকার সংস্থা এলকপ বলেছে, সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে ইতিবাচক। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার অর্থাৎ মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। সে জন্য এই রাষ্ট্রের কাছে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা অনেক বেশি।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। আর যোগাযোগ ব্যবস্থা হলো অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। ২০২২ সালে পদ্মা সেতু উদ্বোধন, মেট্রোরেল উদ্বোধন এবং ১০০টি সেতু উদ্বোধন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ এক নবযুগ সূচনা করেছে। সার্বিকভাবে বেড়েছে জীবনযাত্রার মান। বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘটেছে। এলকপের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জ্বালানির বাজার অস্থির হয়ে পড়ায় সাময়িক কিছু সমস্যা হলেও বাংলাদেশ তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ বরাবরের মতো সচেষ্ট ছিল। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সবশেষ বিশাল অনুপ্রবেশের পর থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশের কক্সবাজারের অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোতে এখন প্রায় ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থী অবস্থান করছে। বাংলাদেশ সরকার সমস্যাটিকে বরাবরই উদারভাবে গ্রহণ করেছে এবং তাদেরও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের জন্য দুটো আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ও তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সাথে শান্তিপূর্ণ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

আগের মতো ২০২২ সালেও বৃদ্ধদের ভাতা, গৃহায়ন ইত্যাদি আর্থ-সামাজিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে কাজ করে গেছে। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী বিল-২০২২ জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। ফলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব নাগরিকের অধিকার সমভাবে রক্ষিত হবে। এতে নারী-পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়ে গেল। ধর্মপালনের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের লক্ষ সুদূরপ্রসারী। এর আগের কয়েক বছরে দুর্গাপূজার সময়ে মূর্তি ভাঙচুরের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটলেও গত বছর এ রকম ঘটনা তুলনামূলকভাবে কম ঘটেছে। এমনকি বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অত্যন্ত স্বাধীনভাবে কাজ করে থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানবাধিকার ও জাতীয় পরিস্থিতি নিয়ে আমেরিকা নিরপেক্ষ অবস্থানে নেই। আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের উদ্বেগের পেছনে বাংলাদেশের অনেক ব্যক্তি বা দলের ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশ একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। যখন বিদেশিরা এসে নাক গলায়, তখন জনগণের খারাপ লাগারই কথা। র‌্যাবের ওপর মার্কিন সরকার ২০২১ সালে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যে বাহিনীর ওপর তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের পরামর্শেই ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাদের সব প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছিল। যেভাবে তারা বাহিনীটাকে তৈরি করেছে, তারা তো সেভাবেই কাজ করছে। তাহলে হঠাৎ কেন তারা এই নিষেধাজ্ঞা দিল? হয়তো তারা উন্নয়নের কাজ অব্যাহত থাকুক তা চায় না, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের জন্য যেসব উন্নতি করেছে, সেটা তারা হয়তো গ্রহণ করতে পারছে না। সে জন্য মনগড়া ও ভিত্তিহীন কিছু অভিযোগ উত্থাপন করার চেষ্টা করছে। এমনকি গত বছর ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের একটি শোকের দিনে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিএনপির ভাষায় গুম হওয়া একজন নেতার বাসায় গেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচন, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বললেও যুক্তরাষ্ট্রের আসল আগ্রহ আসলে ভূ-রাজনীতিগত।

এই অঞ্চলে চীনবিরোধী যে বিশেষ বলয় তৈরির চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র, তারা চায় না বাংলাদেশ তার বাইরে চলে যাক। যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য কাজ করছে; মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তখন তারা লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে; যারা ভুক্তভোগী, তাদের পক্ষে নয়। আমেরিকার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যদি বলা হয় সেখানে প্রায় প্রতিদিন একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে এমনকি স্কুল, শপিংমল, রেস্তোরাঁয় হত্যাকাণ্ড ঘটছে। স্কুলশিক্ষার্থীরা, সাধারণ মানুষ হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা সশস্ত্র ব্যক্তির হাতে নিহত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাদের নিজেদের ব্যাপারে আরও মনোযোগী হওয়া। তাদের দেশের কী অবস্থা? তাদের উচিত শিশুদের জীবন রক্ষা করা। তারা নিজেদের লোকজনের ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

অপরদিকে গত ৩ বছরে আমেরিকায় পুলিশ কর্তৃক ৩ হাজার ৭৬ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অপরাধ তথ্যকেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালে এক বছরেই ৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৬ জন মানুষ নিখোঁজ হয়েছে। এর মধ্যে কেবল ডিসেম্বর মাসেই ৮৫ হাজার ৪৫৯ জন আমেরিকান নিখোঁজ হয়েছে। একই সময়ে বাংলাদেশে নিহত হয়েছেন মাত্র ৩ জন আর নিখোঁজ হয়েছে হাতেগোনা কয়েকজন। যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে আবু গারিব কারাগার, গুয়ানতানামো বে কারাগারের মতো কারাগার, যেখানে বন্দিদের অমানুষিক নির্যাতন করা হয় এবং মানবাধিকার খর্ব করা হয়। বন্দিদের ওপর পুলিশ ও কারা কর্মকর্তাদের নিষ্ঠুর আচরণ, জাতিগত বৈষম্য, নারী বন্দিদের ওপর যৌন নিপীড়ন, পুলিশ কর্তৃক বৈদ্যুতিক শক ও রেস্ট্রেইন্ট চেয়ার ব্যবহারসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী নানা নির্যাতনমূলক কৌশল যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে প্রচলিত বলে জাতিসংঘের নিপীড়নবিরোধী কমিটি মত দিয়েছে। এ রকম কোনো কারাগার এই বাংলাদেশে নেই।

বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে চারদিকে শত নেতিবাচক খবরের মাঝেও প্রবৃদ্ধিতে আশা জাগিয়েছে বাংলাদেশ। জিডিপির অগ্রগতিতে অনেক আগেই পাকিস্তানকে পেছনে ফেলার পর করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলোতে গত বছর ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ ভারতকেও পেছনে ফেলেছে। গত মাসে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশের চেয়ে ভারতের মাথাপিছু আয় এখন ২৮০ ডলার কম। ভারতের মতো একটা বিশাল সমৃদ্ধ দেশকে অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচকে টপকে যাওয়া অবশ্যই বাংলাদেশের একটি বড় অর্জন। তদুপরি, গত বছর আইএমএফের আউটলুকে ভারতকে পেছনে ফেলার পর বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. কৌশিক বসু বাংলাদেশের উত্থানের প্রশংসা করে বলেছিলেন, এমার্জিং ইকোনমির যে কোনো দেশের এগিয়ে যাওয়া ভালো সংবাদ। মনে রাখতে হবে মাত্র ৫ বছর আগেও জিডিপিতে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে ২৫ শতাংশ এগিয়ে ছিল। করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি যখন ধুঁকছে, তখনো বাংলাদেশ রেকর্ড ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। চলতি অর্থবছরে তা ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

বর্তমান বিশ্বে প্রবৃদ্ধি অর্জন ও অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নীতি নির্ধারণ ও কার্যাবলি নিয়ে রীতিমতো গবেষণা হচ্ছে এখন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যা থেকে বাঁচতে যে দেশটির এক কোটিরও বেশি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল, অর্থনৈতিক শক্তিমত্তার কারণে তারাই এখন মিয়ানমার থেকে ভয়ে পালিয়ে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে পারছে। তা ছাড়া সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ২০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে বাংলাদেশ। যেভাবে ঋণ দেওয়া হচ্ছে, সেটি সাধারণত দুর্বল অর্থনীতির দেশকে দেওয়া হয়। এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ ও মাইলফলক হয়ে থাকবে।

অপরদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালে প্রকাশিত ‘এইড ফ্রম বাংলাদেশ’ শিরোনামের এক নিবন্ধে বিশ্বব্যাংকের সাবেক উপদেষ্টা আবিদ হাসান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রশংসা করে সম্প্রতি লিখেছেন, ২০ বছর আগেও চিন্তা করা যেত না যে, ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানের দ্বিগুণ হবে। বাংলাদেশের বর্তমান অগ্রগতি অব্যাহত থাকলে এটি ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক শক্তিকেন্দ্রে পরিণত হবে। তিনি আরও লিখেছেন, পাকিস্তানের এখনকার পরিস্থিতির পরিবর্তন না ঘটলে ২০৩০ সালের দিকেই হয়তো বাংলাদেশের কাছে সাহায্য চাইতে হবে। ১৯৭৫ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া বাংলাদেশ জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির সুপারিশ অনুযায়ী, ২০২৬ সাল এলডিসির তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে।

করোনাকালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ সব উন্নত দেশের অর্থনীতি যেখানে দিশাহারা ও গতিহীন, সব দেশে যেখানে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে- সেখানে বাংলাদেশ কোন জাদুমন্ত্রবলে উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে, সমগ্র বিশ্বের কাছে এটাই এখন বিস্ময়ের কারণ। মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিছু সাহসী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে করোনার নেতিবাচক প্রভাব থেকে অনেকটাই মুক্ত রেখেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুদের হার কমিয়ে, ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়িয়ে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য লেনদেনে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহারে বিধিনিষেধ শিথিল করে দেশীয় শিল্পকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হয়েছে। পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে দ্রুতই করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। এ বিষয়ে বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের বৈশ্বিক অর্থনীতিবিদরাও গত বছর পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর বড় মাপের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা এবং নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও অর্থনীতি খুলে দেওয়ার মতো সরকারের সাহসী পদক্ষেপ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করছে। মূলত, গত এক যুগে শেখ হাসিনার শাসনামল বাংলাদেশের এ বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উত্থানে মূল ভূমিকা পালন করছে। এ সময়ে দেশের অর্থনীতি তরতর করে এগিয়ে গেছে, তিন গুণেরও বেশি বড় হয়েছে জিডিপি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নতুন রেকর্ড অর্জন করেছে। ছাড়িয়েছে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক। আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামো খাতে হয়েছে বিস্ময়কর উন্নয়ন। ফলে দ্য ইকোনমিস্টের ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬৬টি উদীয়মান সবল অর্থনীতির দেশের তালিকায় বাংলাদেশ নবম স্থান দখল করেছে। উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের কাছে বাংলাদেশের এ সাফল্য বিস্ময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারীর ক্ষমতায়নসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীদের চেয়ে এগিয়ে আছে। খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের পাশাপাশি দারিদ্র্য হ্রাসের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সাফল্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিসরে। যারা একদিন এই দেশকে নিয়ে তাচ্ছিল্য করেছিল, তারাই আজ প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ যে আজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব সূচকই তার সাক্ষ্য বহন করছে। কোনো বিদেশি চক্রান্তকারী এই দেশের উন্নয়নের মানসকন্যা শেখ হাসিনার উদ্ভট সমালোচনা করলে এই দেশের জনগণ তার কঠোর জবাব দেবে। – অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, ট্রেজারার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবেক চেয়ারম্যান ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।কালবেলার সৌজন্যে

এসএ/এমএএস/এমইউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন