সংগঠনের সার্বিক মঙ্গলে বিশ্বাসী নয় এমন কতিপয় ব্যক্তির ইগো-র সমস্যায় জালালাবাদ এসোসিয়েশান এর ভবন সংক্রান্ত অচলাবস্থার অবসান হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান শেফাজ ও সদ্য সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও পরবর্তিতে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম।

গত ২রা জুন এষ্টোরিয়ার জালালাবাদ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলেন মিজানুর রহমান শেফাজ আরো বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশানের ভবন সংক্রান্ত সকল সিদ্ধান্ত সদ্য সাবেক মইনুল হক চৌধুরী হেলাল – মিজানুর রহমান কমিটি কর্তৃক সংগঠনের পুর্ববর্তী সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত ও সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক গ্রহণ করা হয়েছে। সাবেক কোষাধ্যক্ষ মইনুল ইসলামসহ কোন একক ব্যক্তির কোন ভুমিকা ছিলনা। তিনি উপস্থিত সাংবািদকবৃন্দকে এই মর্মে সংশ্লিষ্ট সকল নথিপত্রের অনুলিপিও হস্তান্তর করেন।

মিজানুর রহমান শেফাজ আরো বলেন, বর্তমান কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় ভবন ক্রয় বাবদ ব্যয়কৃত অর্থের হিসাবও প্রদান করা হয়। যাতে সদ্য সাবেক সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলাল ও সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুল রহমান, দায়িত্বগ্রহণকারী সভাপতি বদরুল হােসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামের স্বাক্ষর রয়েছে।

মিজানুর রহমান আরো বলেন, কোথাও লুকোচুরির কিছু নেই, সব কিছুই ডকুমেন্টেড রয়েছে।

সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও পরবর্তীতে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম বলেন, জালালাবাদ ভবন প্রতিষ্ঠা ছিল তাঁর নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি যা বাস্তবায়নে সদ্য সাবেক কমিটি সহযোগিতা ছিল সর্বসম্মত। একটি নন প্রফিট সংগঠনের পক্ষে মর্টগেজ পাওয়া খুব কঠিন বিধায় আলাদা আরেকটি কর্পোরেশন করে ভবনটি ক্রয় করা হয়েছে এবং সেখানেও অস্বচ্ছতার কিছু নেই কারণ প্রয়োজনে ভবনটি জালালাবাদ এসােসিয়েশানের কাছে হস্তান্তর জটিল কোন কাজ নয় বলে তিনি জানান।

সংকট নিরসনে সাবেক ৬ সাধারণ সম্পাদকের সাথে সহযোগিতা না করার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা সাসপেনশন প্রত্যাহারের ব্যাপারে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রক্ষা করতে পারেনি বলে তিনিও তাদের ভুমিকাকে কার্যকর বলে মনে করেননি।

মইনুল ইসলাম আরো বলেন, জালালাবাদ ভবন নিয়ে অব্যাহত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। প্রায় ৯ লক্ষ ডলার মুল্যে ক্রয় করা হলেও বর্তমানে ভবনটির বাজার মুল্য রয়েছে প্রায় ১.৩ মিলিয়ন ডলার।

ভবন ক্রয়কে কেন্দ্র করে বর্তমান কার্যকরী কমিটি তাকে সাসপেন্ড করার বিষয়ে মইনুল ইসলাম বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশানের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সাধারন সভার সিদ্ধান্ত হতে পারে, কার্যকরী কমিটির নয়। তিনি আগামী ১১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ সভা সকল জালালাবাদবাসীর জন্য উম্মুক্ত করার দাবী জানিয়ে বলেন জালালাবাদ এসোসিয়েশান সকল জালালাবাদবাসীর, তাই সেই সংগঠনের সাধারণ সভা কেন নিয়ন্ত্রিত হবে?

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ বলেন, আপনারা জানেন প্রবাসের অন্যতমআঞ্চলিক এবং বৃহত্তর সিলেটবাসীর প্রাণের সংগঠনজালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনকের ভবন ক্রয় নিয়ে সংকট চলছে। আমি মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইন্‌ক এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আজকের সাংবাদিকসম্মেলনে আমাকে সময় দেয়ার জন্য আমি আপনাদের কাছেকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

সম্মানিত সাংবাদিক বন্ধুরা, জালালাবাদ এসোসিয়েশনঅব আমেরিকা ইন্‌ক এর ভবন ক্রয়কে কেন্দ্র করে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারে আপনাদের মাধ্যমে সম্মানিত জালালাবাদবাসীর কাছে সঠিক তথ্য তুলে ধরারজন্যই আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলন।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা, জালালাবাদ এসোসিয়েশনপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ভবন ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল কিন্তু কখনো আমারা সফল হতেপারিনি। বিগত কার্যকরি পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গৃহীত রেজ্যুলেশন মোতাবেক এবং সেই সাথে ট্রাস্টি বোর্ডের মতামতের ভিত্তিতে বর্তমান ভবনটি ক্রয় করতেসম্মত হই।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা, জালালাবাদ এসোসিয়েশনএকটি নন-প্রফিট সংগঠন। আপনারা সবাই জানেন নন-প্রফিট সংগঠনের নামে কোন লোন নেয়া যায় না।

আমাদের সকলের অনুরোধে গত কার্যকরি পরিষদেরকোষাধ্যক্ষ ও বর্তমান কার্যকরি পরিষদের সাধারণ সম্পাদকমঈনুল ইসলাম তার নামে বাড়ির লোন করতে সম্মত হন এবংআমরা ভবনটি ক্রয় করতে সক্ষম হই। আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার শেষ পর্যায়ে আমরা বাড়িটি ক্রয় করি। পরবর্তীতে নির্বাচিত কার্যকরি কমিটিকে দায়িত্ব হস্তান্তরের সময়ক্রয়কৃত ভবনের সম্পূর্ণ নথিপত্র, হিসাব সঠিকভাবেবুঝিয়ে দেয়া হয়। সেই হিসাবে বর্তমান সভাপতি বদরুলহোসেন খান স্বাক্ষর করেছেন। আমাদেরও স্বাক্ষর রয়েছে। এই ভবনটি সম্পূর্ণ নিয়ম অনুযায়ী ক্রয় করা হয়েছে। (সংযোজন)

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা এখানে আরেকটি বিষয় আমিউল্লেখ করতে চাই, জ্যাকসন হাইটসে জালালাবাদের ভবনেরজন্য বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি এবং ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম আজিজকে কার্যকরি কমিটিরসভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল এবং কার্যকরিকমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বরআমাদের একাউন্ট থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার ট্রান্সফারকরি। সেই ভবন নিয়ে সমস্যা হলে তিনি তিন দিনের মাথায়২০২১ সালে ১ জানুয়ারি এক চেকে সেই অর্থ আমাদেরফেরত দেন। এ নিয়েও বিভ্রান্তির সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।

সাংবাদিক বন্ধুরা, এখন সভাপতি ও বর্তমান কার্যকরিকমিটির কোন কোন সদস্য এই ভবন ক্রয় নিয়ে অসত্য তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে এই জটিল অবস্থার সৃষ্টি করেন।জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বিদায়ী কার্যকরি কমিটিরপক্ষ থেকে আমি সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সম্মানিতজালালাবাদবাসীকে সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে আশ্বস্ত করতেচাই ভবনটি সঠিক নিয়মেই ক্রয় হয়েছে। সম্মানিতজালালাবাদবাসীর কাছে আমার অনুরোধ আপনারা মিথ্যা তথ্য, বিভ্রান্তমূলক বক্তব্যে বিভ্রান্ত না হয়ে জালালাবাদবাসীরস্বপ্নের ভবনটি রক্ষা করুন, আপনাদের স্বপ্ন পূরণেসহযোগিতা করুণ এবং প্রিয় সংগঠনকে এগিয়েনিতে হাত বাড়িয়ে দিন।