নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এইচ বি রিতার কবিতা 

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৩ | ০১:৪১ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ | ০১:৪১ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
এইচ বি রিতার কবিতা 

১. 

যুদ্ধের ড্রাম

যখন জাতিগত সংঘর্ষ এবং দ্বন্দ্ব দেখা দেয়,

সর্বত্র একটি সীমানা টানা হয়, পক্ষ বেছে নেওয়া হয়

যুদ্ধের ড্রামগুলি তখন জোরে এবং স্পষ্টভাবে বেজে ওঠে

যুদ্ধের ক্রদ্ধতা নিয়ে মানুষের জীবন স্থবির হয়ে পড়ে।

দক্ষিণ সুদানের পূর্বাঞ্চলের জোংলেই রাজ্য

বিরোধপূর্ণ দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলীয় ক্রেইনিক শহর

গোত্রে গোত্রে সংঘর্ষ-প্রতিদ্বন্দ্বীতা তীব্র হয়

চলমান হয়-কেনিয়ার অঞ্চলে জমি-চারণভূমি নিয়ে জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ।

রাজনীতি, ধর্ম বা আদর্শে

যুদ্ধের কারণগুলি অবিরামভাবে পরিবর্তিত হয়,

ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণ ঝুঁকিতে পড়ে

মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পথ চলতে থাকে।

ছিন্নভিন্ন পরিবার, ধ্বংস হওয়া ঘরবাড়ি

শূন্যে বন্দী নিরীহ জীবন

ট্রমা এবং ব্যথা, স্থায়ী ক্ষতচিহ্ন নিয়ে অতীতের স্মৃতি,

একটি ভুতুড়ে কষ্টে পরিণত হয়।

শান্তি আলোচনা এবং কূটনীতির চেষ্টা-

কিন্তু একগুঁয়েমি এবং অহংকার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়

অবিশ্বাস এবং ভয়-বিভাজন আরও গভীর করে

শান্তি বজায় রাখা তখন অসম্ভব বলে মনে হয়।

নিরাময় এবং পুনর্মিলনে,

বিশৃঙ্খলা এবং দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও, সমবেদনা এবং সহানুভূতিতে  জ্বলতে পারে আলোর ঝলক।

আন্তর্জাতিক সংঘাত, একটি মর্মান্তিক কাহিনী,

মানুষের মূর্খতা, চূড়ান্ত ব্যর্থতা।

২. 

ডার্টি পলিটিক্স

নোংরা রাজনীতি-একটি প্রতারণার খেলা

সততা এবং সত্য থেকে পিছিয়ে মিথ্যা এবং

কারসাজির নেতৃত্ব দেয়

যেখানে প্রতিশ্রুতির পরিবর্তে ক্ষমতা ও লোভ-

অঙ্কুরিত হয়

মিথ্যা প্রচারণা

কলঙ্ক এবং কেলেঙ্কারী

বিরোধীদের আক্রমণ

এবং সুনাম ডুবিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা

অর্থের আলোচনা, দুর্নীতির পদচারণা,

প্রভাব বিস্তার এবং লুকানো কথোপকথন,

বিশেষ স্বার্থ লবিস্টরা জনগণের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করার

চেষ্টা করে।

নোংরা রাজনীতি,

একটি ক্যান্সারের ব্যাধি যা গণতন্ত্র ও শান্তিকে

চিবিয়ে খেয়ে ফেলে

তবুও লড়াকুদের মনে আশা থেকে যায়

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য আলোর ঝিকিমিকিতে

কিছু স্বপ্ন আগামীর রথে চড়ে।

৩. 

গ্লোবাল পলিটিক্স

বৈশ্বিক রাজনীতি-জাতি, স্বার্থ এবং শক্তির একটি

জটবদ্ধ জাল, যা ওঠানামা করে

জটিল সমস্যা, চলমান দ্বন্দ্ব, ঝুঁকি যেখানে বিদ্যমান থাকে।

বিশ্ব মঞ্চে নেতা ও কূটনীতিকদের জোট

বৈশ্বিক গোলকধাঁধায় আলোচনা এবং কৌশল চালায়

চলমান গতিতে।

বিশ্ব ঐক্যের আহ্বানে দারিদ্র্য, বৈষম্য, জলবায়ু পরিবর্তন

সন্ত্রাসবাদ এবং ক্রমবর্ধমান হুমকি থেকে

সমাধানের জন্য একটি গ্লোবাল রুম প্রয়োজন।

বিশ্ব সম্প্রদায় গড়ে তুলতে বৈচিত্র্য এবং অন্তর্ভুক্তি, গ্রহণযোগ্য মূল্যবোধ

মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে একটি শান্তির

বিশ্ব নিয়ে আমাদের-কথা বলতে হবে।

বিশ্ব রাজনীতি-সহজ নয়, কঠিন কাজ

তবুও বিশ্ব অপেক্ষা করছে এমন নেতাদের জন্য

যারা বৈষম্য মুক্ত একটি বিশ্ব গড়তে;

আশা ও অনুপ্রেরণার আলোয় তুমুল বজ্রপাতে একটি  ঝাঁকুনি দিতে পারে।

৪. 

বিপ্লবী চেতনা

বিপ্লবী চেতনা, একটি উজ্জ্বল শিখা

পরিবর্তনের জন্য একটি আবেগ যা রাতকে আলোকিত করে

অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে অস্ত্রের আহ্বানে

একটি যুদ্ধের আর্তনাদ যা উচ্চস্বরে প্রতিধ্বনিত হয়।

প্যারিসের রাস্তা থেকে কিউবার পাহাড়,

নেপালের পাহাড় থেকে সোয়েতো শহর পর্যন্ত

একটি মুক্ত বিশ্ব এ ভবিষ্যত ধরে রাখার জন্য;

জনগণ জেগে ওঠে, ঐক্যবদ্ধ ও সাহসী হয়ে।

তারা উঠে দাঁড়ায় অত্যাচারী ও স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে

লোভ ও ঘৃণার বিরুদ্ধে

ন্যায়বিচার ও একটি ন্যায্য ভাগ্যের জন্য

তারা নিপীড়ন এবং ভয়ের শিকল ভেঙে

অশ্রু ঝরানো ছাড়াই গড়ে তোলে নতুন পৃথিবী।

বিপ্লবের চেতনা, একটি শক্তি

যার গণনা হয় না

এ এক এমন একটি শক্তি যাকে দমন করা যায় না

বা প্রশ্নবিদ্ধ করা যায় না

এই চেতনা নিপীড়িতদের উত্তোলন করে

তাদের আওয়াজ দেয়;

এটি ক্ষমতাবানদের বিকল্প ছাড়াই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়।

বিশ্ব বিপ্লবীদের করতালির জোর আমাদের দেখায়,

একত্রিত জনগণের শক্তি বিশ্বকে উন্নত করতে পারে।

৫.

দুটি কণ্ঠ

‘পৃথিবী একটি গোলক ধাঁধা, যন্ত্রণার সর্বোচ্চ জায়গা’

বিড়াল চোখের মানুষটা ঘুরে বসলো

বলল, ঠিক হচ্ছে না!

‘দেখছো না, ব্যথাগুলো কেমন করে দখল করছে মন

সন্ধ্যা নামতেই অন্ধকার সব ঢেকে দেয়’

কিন্তু আমি পৃথিবীকে আলোকবর্তিকা হিসেবে দেখি,

এখানে গোলাপ ফুটে, ভালোবাসায় রোজ তৈরি হয়

নতুন সব গল্প -তার কণ্ঠস্বর জোরালো হয়ে উঠলো।

‘তুমি অন্ধ, অথবা স্বপ্নে হারিয়ে যাচ্ছে, যন্ত্রণাময়

পৃথিবীতে তুমি কিভাবে সৌন্দর্য খুঁজে পাও?’

কারণ আমি অন্ধকারেও আলো দেখতে পাই

‘তবে-ব্যথা, কলহ, জীবনের নিষ্ঠুরতা আর কষ্ট? তুমি

কি দেখতে পাচ্ছো না, রোজ কত শত ফুল ঝরে পড়ে?’

দেখছি! আমি আরও অনেক কিছু দেখছি, ভালো-মন্দের সাথে সম্মুখ পথে আশাও দেখছি! প্রতিটি ব্যথার জন্য

একটি শিক্ষা আছে, জানো তো? প্রতিটি সংগ্রাম, পরিণত হওয়ার একটি সুযোগ।

দুটি কণ্ঠ কথা বলেছিল, নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গিতে

অন্ধকার ও আলোর জগত নিয়ে

তাদের সংলাপে একটা স্ফুলিঙ্গ জ্বলে উঠছিল

একটা নতুন বোঝাপড়া, ভাবনা-যা একটু একটু করে;

পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তোলে।

অনেকটা কবিতায় যেমন ভাবের বিন্যাস

জীবনে যেমন বোধের সঞ্চার-

ঠিক তেমনি, বলায় কলায় যেমন মানুষ ভয় কাটিয়ে

ওঠার উপায় খুঁজে পায়।

এসএ/এমএএস/এমউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন