নিউইয়র্ক     শনিবার, ৩রা জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সুইস ব্যাংকের অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কোনো তথ্য চায়নি

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২২ | ০৬:৩০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২২ | ০৬:৩১ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
সুইস ব্যাংকের অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কোনো তথ্য চায়নি

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে অর্থ জমা করা বাংলাদেশিদের বিষয়ে কোনো তথ্য সরকার চায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টকে’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। বলেন, এসব তথ্য পাওয়ার বিষয়ে কীভাবে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যায়, সে বিষয়ে সরকারকে সব ধরনের তথ্য আমরা দিয়েছি। কিন্তু আলাদাভাবে অর্থ জমা করার বিষয়ে কোনো অনুরোধ আসেনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করতে সুইজারল্যান্ড প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী এ ধরনের তথ্য কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে বিনিময়ের জন্য আমাদের কিছু নিয়ম এবং চুক্তি আছে। সুতরাং আমাদের (বাংলাদেশকে) এরকম কোনো প্রক্রিয়া বের করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করতে পারি।

তথ্য গোপন রেখে সুইজারল্যান্ড অবৈধ অর্থ জমা করার বিষয়টিতে উৎসাহিত করছে কি-না, এমন প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত চুয়ার্ড বলেন, আমরা নিশ্চিতভাবে এটা উৎসাহিত করি না। সুইস ব্যাংকিং ব্যবস্থার খ্যাতি বিশ্বব্যাপী। এটা অনেক বড় ব্যাপার। এটা আমাদের দেশের জিডিপি’র ১০ শতাংশের মতো।

সুতরাং এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, সুইস ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। গত কয়েক বছর ধরে সুইজারল্যান্ড কেবল আন্তর্জাতিক সংস্কারে অবদান রাখেনি, বরং কিছু ক্ষেত্রে নতুন নীতি প্রণয়নে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। অবৈধ অর্থ হস্তান্তর, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মতো বিষয়ও রয়েছে এর মধ্যে। সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক বা এসএনবি’র ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছরে বাংলাদেশিরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ। প্রতি ফ্রাঁ বাংলাদেশি ৯৫.৭০ টাকা হিসাবে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।

দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের যে টাকা জমা রয়েছে, তার বেশির ভাগটাই অবৈধভাবে অর্জিত এবং বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের কতোজনের কতো টাকা আছে তার তালিকা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক আদেশে সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট। পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তাও জানতে চান আদালত। মন্ত্রীরা বরাবরই বলে এসেছেন, অর্থপাচারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশিরা কতো টাকা জমা রেখেছে, ওই তথ্য প্রতি বছর সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক দিয়ে থাকে।

ওই অর্থ অবৈধপথে আয় করা হয়েছে কিনা, এটি আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। দুই দেশের মধ্যে গত এক দশকে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে এর পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি ডলার জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেকগুলো সুইস কোম্পানির উপস্থিতি রয়েছে এবং আমরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা করছি। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য সুইজারল্যান্ড কাজ করছে এবং তাদের জন্য মানবিক সহায়তা দিচ্ছে জানিয়ে নাতালি চুয়ার্ড বলেন, আমরা এই সমস্যার সমাধান চাই। এর জন্য রাখাইনে যে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করার প্রয়োজন, সেটি এখনো তৈরি হয়নি। আমরা সেটি সবাই মিলে করার চেষ্টা করছি। সূএ : মানবজমিন
পরিচয়/এমউএ

শেয়ার করুন