নিউইয়র্ক     শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড. আরএম দেবনাথ

সব সুবিধা ব্যবসায়ীদের জন্য জনগণের জন্য কী?

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৫:০১ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
সব সুবিধা ব্যবসায়ীদের জন্য জনগণের জন্য কী?

কিছুদিন আগে সরকারের একজন পদস্থ কর্মকর্তা এক সেমিনারে বলেছেন, গুজবের সময় ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা আমানতকারীরা তুলে নিয়েছেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে তারা টাকা আবার জমা দিচ্ছেন। এ খবরটি সামান্য কিছুটা উদ্বেগের-আতঙ্কের। তাই খবরটির ভেতরে গেলাম। দেখলাম, কোন তারিখ থেকে কোন তারিখের মধ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকা তোলা হয়েছে, সেটা খবরে নেই। এখন সমস্যা হচ্ছে আমানতকারীরা প্রতিদিন টাকা তোলেন এবং প্রতিদিন টাকা জমা দেন। এতে আমানত বাড়ে অথবা কমে। আবার কোনো কোনো মাসে, বছরের কোনো কোনো সময়ে আমানত বাড়ে, আবার কখনো কখনো কিছুটা কমে। কিন্তু গড়ে গিয়ে ব্যাংকে আমানত বাড়েই, কমে না। এ অবস্থায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বলা উচিত ছিল কোন সময়ের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। ব্যাংকে বিষয়টি নিয়ে বিশদ আলোচনা করা যেত। বিশেষ করে আরেকটি খবরের প্রেক্ষাপটে আমি এ কথাটি বলছি। যেমন ডিসেম্বর মাসের ৬ তারিখে একটি খবরের কাগজে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের অক্টোবর শেষে ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ছিল ১২ লাখ ৫১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। ২০২১ সালের একই সময়ে আমানতের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬২ কোটি টাকা। আর ২০২২ সালের অক্টোবরে তা বেড়ে হয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। দেখা যাচ্ছে, অক্টোবর মাসেও আমানত বেড়েছে। তাহলে কী আমানতকারীরা নভেম্বর মাসে ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে আবার জমা দিচ্ছেন? জানি না। আমার কাছে তথ্য নেই। তবে এটা বুঝি গ্রাহকদের টাকা তোলা ও জমা নিয়ে এমন কথা সচরাচর পদস্থদের বলা উচিত নয়। কথা বলতে হবে তথ্য ও সময়ের ভিত্তিতে। না হলে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। যা হওয়া উচিত নয়। শুধু এই ঘটনা নয়। প্রায়ই সরকারের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং নেতারা এমন কথা বলেন যে তাতে আতঙ্কের সৃষ্টি না হয়ে পারে না। যেমন ২০১৮ সালের জুনের ৩ তারিখে সরকারের একজন মন্ত্রী একটি ব্যাংকের নাম উল্লেখ করে বলেন, সেখানে টাকা আনতে গেলে কষ্ট হয়। অর্থাৎ তিনি বলতে চাইছেন টাকা তোলা যায় না। এ ধরনের অভিযোগ মন্ত্রীরা করতে পারেন না। তারা পারেন শুদ্ধিমূলক ব্যবস্থা নিতে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাতে টাকার অভাব ঘটলে ব্যাংককে জরিমানা-শাস্তি দেয়া যায়। বস্তুত দেখা যাচ্ছে সরকারের ভেতরেই অনেক কথা হয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত মুহিত সাহেব অনেক সময় এমন সব কথা বলতেন যাতে প্রায়ই বিতর্কের সৃষ্টি হতো। অনেক সময় এমনও বলা হয়েছে, সরকারের ভেতরে সরকার আছে। এটা কেমন করে হয়? সরকার একটা ‘কালেক্টিভ বডি’। মূল কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী এবং বাকিরা তা অনুসরণ করবেন।

দ্বিমত থাকলে তা বলা হবে দলের ভেতর। এই যেমন এখন দলের ভেতর অনেক বিষয় নিয়ে কথা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শুনবেন, সিদ্ধান্ত দেবেন। এ মুহূর্তে অর্থনীতির এ সংকটকালে ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল’ (আইএমএফ) নানা শর্ত নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম দফায় ভর্তুকি নিয়ে আইএমএফ অনেক জোর-জবরদস্তি করে। সারের ওপর ভর্তুকি তুলে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী তা শোনেননি। বরং কৃষিতে সারসহ অন্যান্য উপকরণে ভর্তুকি বাড়িয়েছেন। তার ফল আমরা হাতেনাতে পাচ্ছি। চাল, শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি উৎপাদন অনেক বেড়েছে। এতদিন অন্তত চালের অভাবে ছিলাম না, এখনো নেই।

আমরা আইএমএফে কোনো ঋণের জন্য যাইনি। বরং আমরা আমাদের রিজার্ভের টাকা থেকে শ্রীলংকাকে ধার দিয়েছি। এমনকি এর ওপর ভিত্তি করে রফতানি উন্নয়ন তহবিল গঠন করেছি, কিন্তু পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে টান পড়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। আমদানি খরচ বেড়েছে মারাত্মকভাবে। সেভাবে রেমিট্যান্স ও রফতানি বাড়েনি। আন্তর্জাতিক বাজারে যুদ্ধের কারণে সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। মন্দার পদধ্বনি চারদিকে। ‘স্ট্যাগফ্লেশনের’ শিকার হতে পারে বিশ্ব। আমরাও টানাটানির সংসারে গিয়েছি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে ঋণের জন্য। ঋণ তারা দেবে। তবে বরাবরের মতোই এ ঋণও শর্তাধীন। এখানেই প্রশ্ন। কী কী শর্ত? দ্বিতীয় প্রশ্ন কোন শর্তগুলো মানা যায়, কোনগুলো মানা যায় না। তবে শর্ত মানার কোনো বাধ্যবাধকতা আছে কিনা এটাও বিচার্য। প্রথমেই দেখা যাক প্রধান শর্তগুলো কী? একটি কাগজে দেখলাম শর্তগুলো নিম্নরূপ: বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার ব্যবস্থা প্রবর্তন, ‘নয়-ছয়’ সুদের হার বাতিলকরণ, ঋণের সুদ বাড়ানো, কর আদায়ে জোর পদক্ষেপ গ্রহণ, ভর্তুকি হ্রাস এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা বরাদ্দ বৃদ্ধিকরণ। এবার দেখতে হয় কোন শর্তগুলো মানা যায়। অবশ্য শর্ত বলছে না। বলছে সংস্কার (রিফর্ম)। তবে তাই হোক। ডলারের বিপরীতে টাকার মান বর্তমানে বেশকিছুটা নিয়ন্ত্রিত। এতদিন ছিল প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত। ফলে ডলারের দাম ৮০-৮৮ টাকায় সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছিল বহুদিন, কিন্তু সাম্প্রতিক সংকটে শক্ত ‘গিট’ কিছুটা শিথিল করতে হয়েছে। ফলে এক লাফে ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ১০৬-১০৭ টাকা। তাও না, ‘কার্ব মার্কেটে’ এর দাম অনেক বেশি। হুন্ডিওয়ালারা রেমিটারদের অনেক বেশি দর দিচ্ছে। তাহলে করণীয় কী? একদম ‘মুক্ত’ করে দিলে কি ডলারের দাম আরো বেড়ে যাবে? বাড়লে আমদানিকারকদের বিপদ। আমদানি মূল্য বাড়বে। তার মানে সাধারণ ভোক্তাদের এর বোঝা বহন করতে হবে। আবার মুক্তবাজার অর্থনীতি মানলে ডলারের মূল্য খোলাবাজারে ছেড়ে দিতেই হয়। ‘আইএমএফ’ও তাই চাইছে। কী করব আমরা? অর্থমন্ত্রী বলবেন কি? পরের ইস্যু সুদহার। যে যুক্তিতে অর্থাৎ বাজার অর্থনীতির যুক্তিতে ডলারের মূল্য খোলাবাজারে ছেড়ে দিতে হবে, ঠিক একই যুক্তিতে ‘নয়-ছয়’ সুদনীতিও পরিত্যাগ করতে হবে। আমানত ও ঋণের ওপর সুদহার কত হবে তা ঠিক করবে বাজার। এটা কি করব আমরা? সমস্যা এখানে অন্যত্র। এটা অর্থমন্ত্রীর প্রিয় বিষয়। তিনি ঋণের ওপর কম সুদের ঘোরতর সমর্থক, বলা যায় অন্ধ সমর্থক। অথচ আইএমএফ বলছে, এটা বাজারের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। গভর্নর বলছেন ‘উপযুক্ত’ সময়ে ছাড়া যেতে পারে। সুবিধাজনক বা উপযুক্ত সময় কখন হবে—এ কথা কে জানে। তবে বাজার এরই মধ্যে বলছে অন্য কথা। অর্থমন্ত্রী এবং গভর্নরের কথা না শুনে অনেক ব্যাংক এরই মধ্যে বেশি সুদে আমানত নিতে শুরু করেছে। কিছুটা প্রতিযোগিতাও এক্ষেত্রে  ব্যাংকে ব্যাংকে পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং তা হওয়াও উচিত। অধিকাংশ অর্থনীতিবিদই তা মনে করেন। ৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতি অথচ ৬ শতাংশ সুদ আমানতে। এটা রীতিমতো জুলুম। এতে আমানতকারীদের টাকার ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়। মূল্যস্ফীতির সমান সুদ দিলেও টাকার ক্রয়ক্ষমতা ঠিক থাকত, কিন্তু তা হচ্ছে না। অধিকন্তু এতে দেশে সঞ্চয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এটা আমেরিকা নয় যে নাগরিকদের সঞ্চয়ের দরকার নেই। সঞ্চয় আমাদের রক্তে। দুর্দিনের সম্বল। কারণ দুর্দিনে সরকার আমাদের দেখে না। নিজের বলই আসল বল। এছাড়া রয়েছে আরো অনেক যুক্তি। যে যুক্তিতে ঋণের সুদের হার কম হতে হবে তা হচ্ছে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। এর অবস্থা কী? ব্যবসায়ীরা তো বিদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, অনেকে পাচারে আগ্রহী। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে অদক্ষতার। ঋণে সুদের হার কম থাকলে ব্যবসায় অদক্ষতা বাড়ে।

কম সুদের কারণে ব্যবসায়ীরা দক্ষতা বৃদ্ধির চেষ্টা করেন না। কারণ তার দরকার নেই। তৃতীয়ত সস্তা ঋণ ব্যবসায়ীদের অহেতুক ব্যবসা সম্প্রসারণে উৎসাহিত করে। সস্তা ঋণ পেয়ে তারা যেখানে-সেখানে শিল্প-ব্যবসা বাড়াতে যান। গিয়ে মার খান। এখনই দেখা যাচ্ছে ১২-১৩ শতাংশ সুদের পরও অনেক ব্যবসায়ী অহেতুক ব্যবসা সম্প্রসারণ করে এখন বিপদে। বহু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত ক্যাপাসিটি তৈরি করে এখন ব্যাংকের কাছে ধরা খেয়েছেন। ব্যাংক পড়েছে বিপদে। এ অবস্থায় সস্তা ঋণ ব্যবসায়ী, ব্যাংক ও সরকারকে বিপদে ফেলবে। সবচেয়ে বড় কথা ‘কস্ট অব ক্রেডিট’ উৎপাদন খরচের কত শতাংশ? অর্থ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে একটি স্টাডি করে বলুক সে তথ্য। দেখা যাবে ‘কস্ট অব ক্রেডিট’ মোট খরচের সামান্য। ফলে অন্যান্য খরচের উৎপাদনশীলতা না বাড়িয়ে শুধু সুদের হার কম কেন? আরো কথা আছে। সস্তা ঋণ দিয়ে আমাদের স্টক এক্সচেঞ্জের বারোটা বাজানো হচ্ছে না কি? যেহেতু ঋণ সস্তা এবং অত্যন্ত সহজলভ্য, এ কারণে কোনো ব্যবসায়ী স্টক এক্সচেঞ্জে যেতে চান না। তারা তাদের লাভ শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চান না। ব্যাংকের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তারা ব্যবসা করেন। স্টক এক্সচেঞ্জ এ কারণে কাজ করছে না। যত দিন না ব্যবসায়ীদের স্টক এক্সচেঞ্জমুখী করা যাবে ততদিন ‘স্টক এক্সচেঞ্জ’ মরা প্রতিষ্ঠানই থেকে যাবে। এছাড়া দেখা যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা সস্তায় ঋণ নিচ্ছেন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ফাইন্যান্স করার জন্য। এটা অর্থমন্ত্রী পছন্দ করেন না বলেই জানি। তিনি এ কথা বহুবার বলেছেন। ব্যাংকের আমানত স্বল্পমেয়াদি অথচ শিল্প ঋণ দীর্ঘমেযাদি। এতে মিচম্যাচ হয় দায় ও সম্পদের মধ্যে, যা খুবই খারাপ ঘটনা। এ সত্ত্বেও কী করে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ব্যাংকগুলো দিয়ে যাচ্ছে। আগে ছিল বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক এবং বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা। এগুলো এখন নেই। শুনেছি কিছু বিনিয়োগ কোম্পানি দীর্ঘমেয়াদি ফাইন্যান্স দেয়ার চেষ্টা করছে। সরকারের উচিত ওইসবের মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা করে ব্যাংকগুলোকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়া থেকে মুক্ত করা। ব্যাংক থেকে বর্তমানে শুধু শিল্পে দীর্ঘমেয়াদি ঋণই দিতে হয় না, তাদের শিল্প চালু রাখার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটালেরও জোগান দিতে হয়। এসব করে ব্যাংকের সর্বনাশ হচ্ছে। খবর নিলেই জানতে পারা যাবে। এসব কারণেই সস্তা ঋণের বিপক্ষে আমি। সস্তার তিন অবস্থা। এ তিন অবস্থা ব্যাংকের জন্য, ঋণগ্রহীতার জন্য, দেশের জন্য। এ অবস্থায় অর্থমন্ত্রী কী করবেন, আমাদের জানা দরকার। বোঝা যাচ্ছে এ বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে নানা মত বিরাজমান। খবরের কাগজ পড়ে অন্তত তাই মনে হয়। সব ক্ষেত্রে মনে হয় প্রধানমন্ত্রীকেই হস্তক্ষেপ করতে হবে।

ব্যবসায়ীদের সব কথা মানা যে যায় না তা শেষ পর্যন্ত বুঝতে হবে। যেমন মানা যায় না তাদের কর অবকাশের ঢালাও চাহিদা। আইএমএফ বলছে কর রাজস্ব বাড়াতে হবে। এটা আইএমএফকে বলতে হবে কেন? এটা তো সবারই দাবি। রাজস্ব বাড়াতে গিয়ে ঢালাওভাবে বহুগুণে বেড়েছে টিআইএনধারীর সংখ্যা। সংখ্যা অনুপাতে রাজস্ব বেড়েছে কতগুণ তাও বিবেচনা করে দেখা দরকার। যেটা করা দরকার তা হচ্ছে কারা কর দিতে পারেন, অথচ দেন না তাদের ধরা উচিত। দেশে কত সংখ্যক ইউনিয়ন পরিষদ আছে? এসব নির্বাচনে প্রার্থীরা কোটি কোটি টাকা খরচ করেন। তাদের আয়ের উৎস, প্রদত্ত করের খোঁজ করা দরকার। তাহলে অনেক কর পাওয়া যাবে। এদিকে কর অব্যাহতি যেভাবে দেয়া হয়েছে/ হচ্ছে, তা অনেকের মতে অযৌক্তিক। অনেকটা ঢালাওভাবে তা দিতে বাধ্য হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। একটি পত্রিকায় দেখলাম, কেবল ২০১৭-১৮ অর্থবছরেই ব্যাপক কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কৃষি ও ভ্যাট খাতে অব্যাহতি নাকি সবচেয়ে বেশি। বলা হচ্ছে, বছরে কর ছাড়ের পরিমাণ আড়াই লাখ কোটি টাকা। ভাবা যায়, যে দেশে কর-জিডিপি অনুপাত মাত্র ৯-১০ শতাংশ সেখানে কর রেয়াতে যায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। আশার কথা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এই কর রেয়াতের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে। যদি এ খাতে কিছুটা অগ্রগতি দেখানো যায়, তাহলে প্রচুর রাজস্ব বাড়বে এবং তা বাড়া দরকার। এখন ব্যবসায়ীদের দেশের স্বার্থে এগিয়ে আসা উচিত। শুধু ‘নিলে’ চলবে না, ‘দিতে’ও হবে। ড. আরএম দেবনাথ: অর্থনীতি বিশ্লেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। বণিকবার্তা-র সৌজন্যে

শেয়ার করুন