করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের প্রতিবাদে চীনে বিক্ষোভ চলছে। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে চীনে এটাই বড় ধরনের বিক্ষোভ। বিশেষ করে গত বৃহস্পতিবার জিনজিয়াং প্রদেশের উরুমকিতে একটি আবাসিক ভবনে আগুনে ১০ জনের মৃত্যুর পর চীনের বড় শহরগুলোতে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চীনের তরুণদের হাতে ‘এ ফোর সাইজের’ সাদা কাগজ দেখা যায়। এ জন্য চলমান আন্দোলনকে অনেকে ‘সাদা কাগজের বিক্ষোভ কিংবা সাদা কাগজের বিপ্লব’ বলছেন।
বিক্ষোভকারীরা বাকস্বাধীনতা না থাকার প্রতীক হিসেবে সাদা কাগজ দেখাচ্ছেন। এর উদ্দেশ্য হলো—স্পষ্টভাবে কিছু না বলেই নিজেদের কথাটা জানানো, লোকেরা যা বলতে পারে না, প্রতীকীভাবে সেটা বলা। কেউ কেউ এ বিক্ষোভকে ‘সাদা কাগজের বিপ্লব’ বলে মন্তব্য করেছেন।
হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সমালোচনামূলক পোস্ট, সংবাদ প্রতিবেদন ও স্পষ্টভাষী অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলো ইন্টারনেট থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে। বিক্ষোভে ‘সাদা কাগজ’ উঁচিয়ে ধরে তারই প্রতীকী প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
বিক্ষোভে সাদা কাগজ ব্যবহারের ঘটনায় চীনের সবচেয়ে বড় স্টেশনারি চেইন এমঅ্যান্ডজি বিপাকে পড়েছে বলে বলা হচ্ছে। সারা দেশে তাদের ৮০ হাজারের বেশি খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে।
চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া একটি নথিতে বলা হয়, এমঅ্যান্ডজি আজ মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে ‘এ ফোর সাইজের’ কাগজ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। এমন গুজবে গতকাল সোমবার তাদের শেয়ারের দাম ৩ দশমিক ১ শতাংশ পড়ে যায়।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের ‘শূন্য করোনা নীতি’ বাস্তবায়নে আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে জমে থাকা ক্ষোভ এই বিক্ষোভে রূপ নেয়। উরুমকির বাসিন্দাদের ভবনে আটকে পড়া ও উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হওয়ার জন্য এ কঠোর বিধিনিষেধকে দায়ী করা হচ্ছে। এ ঘটনায় বাণিজ্যিক নগরী সাংহাইসহ চীনের বড় শহরগুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। দেশটিতে সোমবারও বিক্ষোভ হয়। দিনভর বিক্ষোভকারীদের দমাতে কঠোর অবস্থান নিতে দেখা যায় পুলিশকে।