নিউইয়র্ক     বৃহস্পতিবার, ১লা জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ  | ১৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

খুচরা বিক্রি ও উৎপাদন হ্রাস

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে শ্লথগতি

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:৩৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:৩৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে শ্লথগতি

শিকাগোর টার্গেট স্টোরে ক্রেতারা ছবি : রয়টার্স

চলতি বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। গ্রাহক পর্যায়ে মোটরযান ও বিলাসবহুল পণ্য কেনার হার কমে যাওয়ায় এ প্রভাব পড়েছে। এর মাধ্যমে একটি জিনিস নিশ্চিত, উচ্চ সুদ হারের কারণে বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে দেশটির অর্থনীতি মন্থরগতিতে চলছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, দেশটিতে শ্রমবাজার ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। এর প্রভাবে খুচরা বিক্রিও কমছে। পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদনও কমে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, গত মাসেও যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন কমেছে। তার পরও ফেডারেল রিজার্ভ আগামী মে মাসে আরো একবার সুদহার বাড়ানোর কথা বলছে, যা এর আগে জুনে বাড়ানো হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। ১৯৮০ সালের পরে এবারই আর্থিক নীতি খুব দ্রুত শক্ত করছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ওহিওর কলম্বাসের ন্যাশনওয়াইডের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বেন আইআরস বলেন, ‘‌সুদহার বৃদ্ধির যে নেতিবাচক প্রভাব এরই মধ্যে তা পরিবারগুলো অনুভব করতে শুরু করেছে। অন্যদিকে লম্বা সময় ধরে থাকা উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে ক্ষতিপূরণের খরচও কমানো হচ্ছে। যদিও চাকরি ও আয়ের ক্ষেত্রে বেশ শক্তিশালী অবস্থান দেখা যাচ্ছে। তারপরও ভোক্তা খাতে ফাটল বেশ বিস্তৃত হচ্ছে। এছাড়া কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির কার্যক্রমে যদি কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তাহলে অর্থনীতি মন্দায় পড়ে যাওয়ার মতো কোনো চূড়ান্ত ধাক্কার সম্মুখীন হবে।

দেশটির বাণিজ্য বিভাগ জানায়, মার্চে খুচরা বিক্রি কমে দাঁড়িয়েছে ১ শতাংশে। ফেব্রুয়ারির তথ্য কিছুটা পুনর্বিবেচনা করে বলা হয়, আগে ৪ শতাংশ বিক্রি কমার পূর্বাভাস দেয়া হলেও পরে সেটি পরিবর্তন করে দশমিক ২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। রয়টার্সের পরিচালিত জরিপে অর্থনীতিবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, বিক্রি দশমিক ৪ শতাংশ কমবে। যদিও বছরওয়ারি হিসেবে মার্চে তা বেড়েছে ২ দশমিক ৯ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রেই খুচরা বিক্রিতে বেশ অবনমন হয়েছে। অটো ডিলারদের বিক্রি কমেছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ, আসবাবপত্রের দোকানের বিক্রি কমেছে ১ দশমিক ২ শতাংশ, ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স স্টোরে বিক্রি কমেছে ২ দশমিক ১ শতাংশ। ভবন নির্মাণের উপাদান ও বাগানের যন্ত্রপাতির সরবরাহও অনেকাংশে কমেছে।

জামাকাপড়ের দোকানে বিক্রি কমেছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ, পেট্রলের বিক্রিও বেশ হতাশাজনক অবস্থানে রয়েছে, যা কমে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। গ্যাসোলিন সার্ভিস স্টেশন ছাড়া পেট্রলের বিক্রি কমেছে দশমিক ৬ শতাংশ। কিন্তু অনলাইন খুচরা বিক্রি বেড়ে ১ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে। শখ বা নিজেকে খুশি করার বিষয়গুলোয় খরচ বেড়েছে পরিমিতভাবে। খাদ্য সেবা ও পানীয় বিক্রয়কেন্দ্রে পরিষেবা ও খুচরা বিক্রি বেড়েছে দশমিক ১ শতাংশ। খুচরা বিক্রি এভাবে পেছনে টানার ফলে ফেডের বছরব্যাপী সুদহার বৃদ্ধি প্রচারণায় বেশ প্রভাব পড়ে। ফলে অভ্যন্তরীণ চাহিদায় লাগাম টেনে মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে। গত সপ্তাহের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মার্চে চাকরির প্রবৃদ্ধি ও পরিষেবা খাতের প্রবৃদ্ধিও ধীর হয়েছে।

দেশটির শ্রমবিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্চে আমদানি খরচ কমে গেছে দশমিক ৬ শতাংশ। যেখানে ফেব্রুয়ারিতে সংখ্যাটা ছিল দশমিক ২ শতাংশ। ফলে ১২ মাসের মধ্যে গত মার্চে আমদানি খরচে নিমজ্জন দেখা দিয়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ওয়াল স্ট্রিটের স্টকও এ সময় কমতির দিকে ছিল। তাতে বেশকিছু মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে যায় ও মার্কিন ট্রেজারি ব্যর্থতার মুখে পড়ে।

শেয়ার করুন