যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি দাঙ্গার পর তখনকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পদক্ষেপ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন হোয়াইট হাউজের সহযোগী হোপ হিকস এবং ট্রাম্পের কন্যা ইভানকা ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ জুলি র্যাডফোর্ড। ট্রাম্পের ওই কর্মকাণ্ড বা গৃহীত পদক্ষেপ তাদেরকে পেশাগত দিক দিয়ে আহত করেছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে এই দু’জনের মধ্যে টেক্সট বা বার্তা বিনিময়ে এসব তথ্য ফুটে উঠেছে। ক্যাপিটল হিল বিদ্রোহ নিয়ে প্রতিনিধি পরিষদের সিলেক্ট কমিটির তদন্তে ধরা পড়েছে তা।
ওই তদন্ত রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে। তাতে ডনাল্ড ট্রাম্পের অনেক অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সিএনএন লিখেছে ট্রাম্প ইস্যুতে ৬ই জানুয়ারি র্যাডফোর্ডকে হোপ হিকস লিখেছেন, ভবিষ্যতের প্রতিটি সুযোগকে তিনি (ট্রাম্প) একদিনেই শেষ করে দিয়েছেন। এর মধ্যে স্থানীয় প্রাউড বয়েজ চ্যাপ্টারটির সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা উল্লেখ না করলেও তা তিনি করে ফেলেছেন। এর ফলে আমাদের যাদের কাজ নেই বা বেকার, তারা বেকারই থাকবে। এ অবস্থায় আমি খুব ক্ষিপ্ত ও বিরক্ত।
এখন মনে হচ্ছে আমরা সবাই দেশীয় সন্ত্রাসী। হোপ হিকস আরও লিখেছেন, এর ফলে আমরা সবাই বেকার হয়ে পড়েছি। যেন আমরা অস্পৃশ্য। আমি যেন উন্মাদ হয়ে গেছি। জবাবে র্যাডফোর্ড লিখেছেন, আমি জানি এমন পরিস্থিতিতে একটি কাজ খুঁজে পাওয়ার সুযোগ নেই। তিনি ‘ভিসা’ থেকে একটি কাজের সুযোগও হারিয়েছেন। এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে র্যাডফোর্ড লিখেছেন, তারা তাকে একটি ‘ব্লো অফ মেইল’ পাঠিয়েছে।
ডনাল্ড ট্রাম্পের আয়কর ফাঁকি, ৬ই জানুয়ারির দাঙ্গায় তার সম্পৃক্ততা, উস্কানি দেয়া ইত্যাদি বিষয় উঠে এসেছে ৮৪৫ পৃষ্ঠার ওই রিপোর্টে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়েও বাঁকা বক্তব্য দিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট ঠিক কাজ করেনি। ডেমোক্রেটরাও ভাল কাজ করেনি। তবে সে যা-ই হোক, তদন্তে দেখা গেছে- ট্রাম্প ব্যাপক মাত্রায় আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন। নানা উপায় অবলম্বন করেছেন এক্ষেত্রে। এক সময় দেখানো হয়েছে তার বার্ষিক আয় ও ব্যয় কড়ায়গণ্ডায় সমান। ফলে তাকে আয়কর দিতে হয়নি। এই তদন্ত রিপোর্টের অংশ বিশেষ হোপ হিকস ও র্যাডফোর্ডের ওই বার্তা বিনিময়।
ক্যাপিটল হিলে হামলা হয় ৬ই জানুয়ারি। এর এক মাস আগে হোয়াইট হাউজের সহযোগীর পদ ত্যাগ করেন অ্যালিসা ফারাহ গ্রিফিন। এ প্রসঙ্গ তুলে ধরে হোপ হিকস পরে বলেন, অ্যালিসা একজন জিনিয়াস মনে হচ্ছে। এরপরই এ দু’জন ট্রাম্পের জামাই জ্যারেড কুশনার এবং ইভানকা ট্রাম্পের ননদ কারলি ক্লোসকে নিয়ে আলোচনা করেন। কারলি ক্লোস একজন সুপারমডেল। তারা টুইটারে বলাবলি করেন যে, নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ছিল আমেরিকা বিরোধী।