সংবাদ সম্মেলন করতে পছন্দ করেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজের ক্ষমতার নয় বছরেও তিনি দেশে কোনো সংবাদ সম্মেলন করেননি। অন্য দেশে গেলেও ভারতের শর্ত থাকে, সাংবাদিকরা মোদিকে কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না। যদিও গত জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় মোদি বাধ্য হয়েছিলেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে। যুক্তরাষ্ট্র ওই সফরের আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভারতকে চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু এবার নিজ দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সংবাদ সম্মেলন করতে দিলেন না মোদি।
যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল মোদি-বাইডেন দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর মার্কিন প্রথা অনুযায়ী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করতে। যেকোনো দেশের নেতার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর হোয়াইট হাউসে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করা যুক্তরাষ্ট্রের রীতি। কিন্তু জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসা বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর কোনো রকম প্রশ্নোত্তর পর্বের মুখোমুখি হতে মোদি রাজি হননি। ভারতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল, প্রশ্নোত্তর পর্ব বা সংবাদ সম্মেলন কোনোটাই করা হবে না। এমনকি বাইডেনও আলাদাভাবে কোনো সংবাদ সম্মেলন করতে পারবেন না।
তবে এভাবে থামিয়ে রাখা যায়নি বাইডেনকে।
জি-২০ শেষ করেই তিনি উড়াল দেন ভিয়েতনামের উদ্দেশ্যে। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েই ভারত প্রসঙ্গ টেনে আনেন। ভারতের নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান জানিয়ে দেন। বাইডেন বলেন, কোনো দেশকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে গেলে এই বিষয়গুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
যদিও মোদির বেশ প্রশংসাও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভিয়েতনামে তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের বন্ধুত্ব ও অংশীদারত্ব আরও জোরদার কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে আমি ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যা আমি সব সময় করে থাকি, এবারও তাই করেছি। শক্তিশালী ও সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়ে তুলতে মানবাধিকারকে সম্মান করা, নাগরিক সমাজ ও স্বাধীন গণমাধ্যমের ভূমিকা থাকা যে গুরুত্বপূর্ণ, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরেছি। একই সঙ্গে জি-২০ সম্মেলন নিয়ে মোদির নেতৃত্ব ও আতিথেয়তার প্রশংসা করে তাকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন বাইডেন।
এদিকে ভিয়েতনামে সংবাদ সম্মেলনে ভারত প্রসঙ্গে বাইডেনের কথাগুলো নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দল কংগ্রেস। কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে লিখেছেন, বাইডেনকে মোদি বলেছিলেন, প্রেস কনফারেন্স করব না, করতেও দেব না। কিন্তু তা কাজে এল না। মোদির মুখের ওপর বাইডেন যা যা বলেছেন, ভিয়েতনামে গিয়ে সেটাই তিনি জানিয়ে দিলেন। মোদিকে তিনি বলে গেছেন যে, নাগরিক সমাজ ও মুক্ত গণমাধ্যমের ভূমিকা ও মানবাধিকারকে সম্মান দেখানো জরুরি। সূত্র : মানবজমিন