ঢাকা: বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকার থাকলেও প্রায় ৭৩ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা খরচ নিজেরাই বহন করে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে ২৪ দশমিক চার শতাংশ মানুষ অতিরিক্ত ব্যয়ের মধ্যে পড়ে। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই এটা বেশি দেখা যায়।
সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দিবস-২০২২ উপলক্ষে গতসোমবার (১২ ডিসেম্বর) কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইন্সটিটিউটের আয়োজনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা বলেন, ভারত, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপের মতো দেশে কিডনি রোগীসহ অনেক জটিল রোগীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা চালু রয়েছে। স্বাস্থ্যবীমা চালুসহ সরকারি সহায়তা সঠিকভাবে পেলে বাংলাদেশের মানুষকেও বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব। সরকারকেই এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা, জনগণকে সুস্থ রাখলে দেশের জিডিপি বাড়বে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাউথ ইস্ট ইউনির্ভাসিটির প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চ্যান্সেলর এমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম শমসের আলী। তিনি বলেন, অসংক্রমক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ আধুনিক জীবনধারা। তাই আমাদেরকে জীবন ধারা পরিবর্তনের দিকে জোর দিতে হবে।
শমসের আলী বলেন, আমাদের দেশে রোগীর তুলনায় ডাক্তার, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা কর্মীর সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। তাই সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে উচ্চতর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অধিক সংখ্যক দক্ষ ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা কর্মী তৈরি করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহাবুব বলেন, সাবর্জনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকার যেন দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় এবং অধিক ব্যবহৃত ওষুধগুলোর নিদির্ষ্ট ও স্বল্পমূল্য নির্ধারণ করে দেয়, যাতে সাধারণ মানুষ সেসব মেডিসিন সুলভে কিনে সেবন করতে পারে। সব মানুষের চিকিৎসা পাওয়া একটি মৌলিক অধিকার।
কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, কিডনি রোগীদের কার্ড চালু করতে চাই। যার মাধ্যমে তারা বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ও চিকিৎসা পেতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগীতা দরকার।
তিনি বলেন, দেশে প্রতি বছর ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয়। তাদের মধ্যে ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজনের চিকিৎসার অভাবে ৭৫ ভাগ রোগীর মৃত্যু হয়। এছাড়া হঠাৎ কিডনি বিকল হয়েও প্রতি বছর আরও ২০ হাজার রোগী মারা যান। এই রোগীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য জেলা পর্যায়ে ডায়ালাইসিস সেবা চালুসহ প্রতিটি মেডিকেল কলেজে কিডনি সংযোজনের ব্যবস্থা করা দরকার। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কিডনি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রুহুল আমিন রুবেল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস টিনি ফেরদৌস রশিদ প্রমুখ।