ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ২ নম্বর সড়কের ২৯ নম্বর বাড়িটি (তৎকালীন ১৩৯/এ) পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দিতে কোর্ট অব সেটেলমেন্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মালিকানা দাবি করে সাংবাদিক আবেদ খানের করা রিট খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আবেদ খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ওই বাড়ি নিয়ে করা পৃথক দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ সোমবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, ১৯৭২ সালে বাড়িটির তৎকালীন মালিক তা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর সরকার ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করে। এই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে মালিকানা দাবি করে আবেদ খানসহ তাঁর পরিবারের ৯ সদস্য ১৯৮৯ সালে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে মামলা করেন। এই মামলায় ১৯৯২ সালে কোর্ট অব সেটেলমেন্টের দেওয়া রায়ে বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্তি সঠিক বলা হয়। এরপর বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদ খান ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ৬ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন।
অন্যদিকে ১৯৮৭ সালের এক আবেদন দেখিয়ে এস নেহাল আহমেদ নামের এক ব্যক্তি একই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে ১৯৯৬ সালে আরেকটি মামলা করেন। এ মামলায় ১৯৯৭ সালের ১৬ জুলাই রায় দেন। রায়ে বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে অবমুক্ত করতে এবং নেহাল আহমেদ বাড়ির দখল পেতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়। এ রায়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সরকারের পক্ষে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে একটি রিট করে। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন।
পৃথক রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। অপর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী কাজী আকতার হামিদ, নকিব সাইফুল ইসলাম ও মো. আবুল হাশেম।
রায়ের পর কাজী মাঈনুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাড়িসহ ধানমন্ডির ওই জায়গার আয়তন এক বিঘা। হাইকোর্টের রায়ের ফলে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে বাড়িটি সরকারের মালিকায় থাকল। ওই বাড়ি নিয়ে আবেদ খানসহ তাঁর পরিবারের ৯ সদস্য সেটেলমেন্ট কোর্টে একটি মামলা করে ১৯৯২ সালে হেরে যান। সেটেলমেন্ট কোর্টের রায় গোপন করে সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে আবেদ খান ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। তথ্য গোপন করে রিট করায় হাইকোর্ট তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন