অধিকৃত তিব্বতের বিমানঘাঁটিতে চীনা যুদ্ধবিমান এবং ড্রোনের আনাগোনা বেড়েছে। অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংয়ের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) গত ৯ ডিসেম্বরের রাতের দুই দেশের সেনাদের সংঘর্ষের পরে চীন এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে দাবি করেছে ভারত।
কয়েক দিন ধরেই ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সূত্র চীনা বিমানবাহিনীর তৎপরতার বাড়ছে বলে জানিয়ে আসছিল। এ বার ম্যাক্সারের (উপগ্রহের সাহায্যে তোলা মানচিত্র সরবরাহকারী মার্কিন সংস্থা) তোলা স্যাটেলাইট চিত্রেও তার প্রমাণ মিলল।
গত ১৪ ডিসেম্বর তোলা ম্যাক্সারের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে, অধিকৃত তিব্বতের চাংডু বাংডা বিমানঘাঁটিতে রুশ সহযোগিতায় তৈরি সুখোই এসইউ-৩৫ (ন্যাটো জোটের দেয়া নাম ২এক্স ফ্ল্যাঙ্কার) যুদ্ধবিমান, এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান ও অত্যাধুনিক গোয়েন্দা বিমান অ্যাওয়াক্স (এয়ারবোর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম)। শাংজি কেজে-৫০০ সিরিজেরি এই বিমান ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীর প্রস্তুতি সম্পর্কে নিখুঁত তথ্য সংগ্রহে সক্ষম।
আরোও পড়ুন।চীন সফর করবে উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধি দল
এর পাশাপাশি, চীনা বিমানবাহিনীর আধুনিকতম ড্রোন ‘ডব্লিউজেড-৭’ (সোয়ারিং ড্রাগন) মোতায়েন করা হয়েছে ওই ঘাঁটিতে। ২০২১ সালে বিমানবাহিনীতে কাজ শুরু করা এই ড্রোন একটানা ১০ ঘণ্টা উড়ে নজরদারি চালাতে পারে। পাশাপাশি, মাঝারি পাল্লার ‘ভূমি থেকে ভূমি’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকে আঘাত হানার জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য চিহ্নিত করে দিতে পারে।
ম্যাক্সারের তোলা ১৪টি ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাওয়াংয়ের সংঘর্ষের পর চাংডু বাংডা বিমানঘাঁটিতে বেশ কিছু অস্থায়ী হ্যাঙ্গার তৈরি করেছে চীন। ভারতের দাবি চীনের উদ্দেশ্য একটাই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তাওয়াংয়ের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বের বিমানঘাঁটি থেকে দ্রুত ফাইটার স্কোয়াড্রনগুলোকে মোতায়েন করে ফেলা।
এদিকে, চীনা বিমানবাহিনীর তৎপরতার পরেই ভারতীয় বিমানবাহিনীও এলএসিতে তৎপরতা বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের হাসিমারা এবং আসামের তেজপুর বিমানঘাঁটিতে জারি হয়েছে সতর্কতা।
প্রসঙ্গত, গত ৯ ডিসেম্বর রাতে তাওয়াংয়ের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি ও ভারতীয় সেনা সংঘর্ষ বাঁধে। ২০২০ সালের ১৫ জুনের গালওয়ান-কাণ্ডের মতো প্রাণহানি না ঘটলেও এই সংঘর্ষের ঘটনায় দুইপক্ষেরই বেশ কয়েক জন সেনা আহত হন। সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার