‘ডিজিটাল কোয়ালিটি অভ লাইফ ইনডেক্স ২০২৩’, অর্থাৎ ডিজিটাল জীবনমান (ডিকিউএল) সূচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সার্ফশার্ক। এ সূচকে গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের ছয় ধাপ অবনমমন হয়েছে। সার্ফশার্ক-এর ৫ম বার্ষিক ডিকিউএল সূচকে ১২১টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশে আছে ৮২তম অবস্থানে। আর এশিয়ার ৩২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ২৫তম। ইন্টারনেট সামর্থ্য, ইন্টারনেটের মান, ই-অবকাঠামো, ই-নিরাপত্তা, ই-গভর্নমেন্ট—এই পাঁচটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে সার্ফশার্কের ডিজিটাল জীবনযাত্রার মান নির্ধারণ করা হয়।জাতিসংঘের ওপেন সোর্স তথ্য, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উৎসের উপর ভিত্তি করে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।
পাঁচটি সূচকের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো করেছে ইন্টারনেটের মানে। এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৫তম। সূচক অনুযায়ী, বাংলাদেশের ইন্টারনেটের গতি বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে ৫ শতাংশ কম। ইন্টারনেটের গতিতে সবার চেয়ে এগিয়ে সিঙ্গাপুর। ইন্টারনেটের গতির বৈশ্বিক গড় ৫৩ এমবিপিএস হলেও সিঙ্গাপুরে ইন্টারনেটের গতি ৩০০ এমবিপিএস। আর বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির ইন্টারনেট হচ্ছে ইয়েমেনের। দেশটির ইন্টারনেটের গড় গতি ১১ এমবিপিএস।
বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের ইন্টারনেটের গড় গতি ২০ এমবিপিএস। মোবাইল ফোনের ইন্টারনেটের গতিতে ৩১০ এমবিপিএস নিয়ে প্রথম স্থানে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আর ১০ এমবিপিএস গতি নিয়ে মোবাইল ফোনের ইন্টারনেটের গতিতে সবার চেয়ে পিছিয়ে আছে ভেনেজুয়েলা।ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ৭৩ শতাংশ কম, আর ব্রডব্যান্ডের গতি ৩১ শতাংশ কম।
গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ৪১ শতাংশ বেড়েছে, আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি বেড়েছে ২৩ শতাংশ। ই-গভর্নমেন্ট সূচকে বাংলাদেশ আছে ৭৩তম আস্থানে। এটি মূলত কোনো দেশের সরকারের ডিজিটাল পরিষেবা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রস্তুতির নির্ণায়ক। এই সূচকেও বাংলাদেশ বৈশ্বিক গড়মানের নিচে আছে। ইন্টারনেট ক্রয়ক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের অবস্থান ৭৭তম।
ডিকিউএল সূচক অনুযায়ী, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কেনার সামর্থ্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশিদের মাসে ৪ ঘণ্টা ২৬ মিনিট কাজ করতে হয়। যদিও এটি বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে কম। আর মোবাইল ইন্টারনেট কেনার জন্য বাংলাদেশিদের মাসে ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট ২৮ সেকেন্ড কাজ করতে হয়। লুক্সেমবার্গের তুলনায় এটি ৬ গুণ বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে সাশ্রয়ী মোবাইল ইন্টারনেট পাওয়া যায় লুক্সেমবার্গে।
বাংলাদেশ ই-অবকাঠামো বিভাগে ৮৪তম অবস্থানে রয়েছে। সামগ্রিক সূচকে বাংলাদেশ ভারতের (৫২তম) চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও, পাকিস্তানের (৯৩তম) চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। ই-সিকিউরিটি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ১০ ধাপ নেমে বিশ্বে ৮৫তম স্থানে রয়েছে।