চীন ও ইরানকে ‘উদ্বেগজনক রাষ্ট্র’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জনগণের ধর্মীয় স্বাধীনতা গুরুতরভাবে লঙ্ঘণের অভিযোগে রাষ্ট্রদুটিতে এ তালিকায় আনা হয়েছে। শুক্রবার (২ নভেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সই করা বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিবৃতিতে ব্লিনকেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকার ও সরকারঘনিষ্ঠ বিভিন্ন গোষ্ঠী কেবল ধর্মবিশ্বাসের অজুহাতে সাধারণ জনগণকে হয়রানি করছে, হুমকি দিচ্ছে, কারাবন্দি করে রাখছে। এমনকি হত্যাও করছে।
‘দেশগুলোর এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনসম কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র চুপ থাকতে পারে না। তাই তাদের উদ্বেগজনক রাষ্ট্রের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হলো।’ তিনি আরও জানান, উদ্বেগজনক রাষ্ট্রের তালিকায় থাকা কোনো দেশ যদি নিজেদের নাম মুছতে ওয়াশিংটনের সহযোগিতা চায়, সেক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসন থেকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া হবে।
চীন ও ইরানের আগে বিভিন্ন সময়ে এ তালিকায় থাকা দেশগুলো হলো পাকিস্তান, সৌদি আরব, তাজিকিস্তান, কিউবা, আলজেরিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কোমোরোস, ভিয়েতনাম, উত্তর কোরিয়া, তুর্কমেনিস্তান, মিয়ানমার ও ইরিত্রিয়া।
তাছাড়া রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বেসরকারি আধা সামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপকেও উদ্বেগজনক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ ও ইউক্রেনে কাজ করছে ওয়াগনার বাহিনী।
এ বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বোরখা ও হিজাব ঠিকমতো না পরার অভিযোগে ২২ বছর বয়সী তরুণী মাশা আমিনিকে আটক করে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ। পরে পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনার পরপরই ইরানজুড়ে অভূতপূর্ব সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত দেড় মাসের বিক্ষোভে ইরানের নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ গেছে ৩ শতাধিক মানুষের। সেই সঙ্গে অন্তত ১৪ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, ইরানে ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থী শাসকদের বিরুদ্ধে লংখ্যালঘু বাহাই সম্প্রদায়ের লোকজনকে নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ইরানের শাসকগোষ্ঠী সম্প্রদায়টির ওপর নানা ধরনের অত্যাচার চালিয়ে আসছে। চলতি বছর এ দমন-পীড়ন আরও বেড়েছে। সূত্র : রয়টার্স