ফুটপাতে দীর্ঘ লাইন। সকলের সঙ্গেই প্লাস্টিকে মোড়া একটি করে দেহ। যা নিয়ে অপেক্ষায় আপাদমস্তক পিপিই কিট-এ মোড়া প্রিয়জনেরা। কোভিডে মৃতদের দেহ বয়ে নিয়ে শ্মশানের বাইরে দীর্ঘ লাইনে এ ভাবেই ভিড় করেছেন বহু বাসিন্দা। তারাই স্ট্রেচারে করে দেহগুলিকে শ্মশানে ঢোকাচ্ছেন। এ দৃশ্য কোভিডধ্বস্ত চীনের।
রোববার ৫৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে চীনের সাম্প্রতিক কোভিড পরিস্থিতির মর্মান্তিক চিত্র তুলে ধরেছেন মার্কিন জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানী এরিক ফিঙ্গল ডিং। যা দেখে শিউরে উঠেছে সমাজমাধ্যম।
সোমবার টুইটারে এই ভিডিওর সঙ্গে এরিক লিখেছেন, শ্মশানের বাইরে দীর্ঘ লাইন। ভাবুন, নিজের প্রিয়জনের শেষকৃত্যের জন্য অপেক্ষা করাই শুধু নয়, তাদের দেহও বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে।
কর্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করলেও এরিকের মাতৃভূমি চীন। তার এই ভিডিওটি ইতিমধ্যেই ভাইরাল। তা ৪৮.৬ হাজার বার দেখা হয়েছে। চীনের কোভিড পরিস্থিতির করুণ চিত্র ধরা পড়েছে ওই ভিডিওতে।
এরিক দাবি করেছেন, চীনের অবস্থা এতটাই খারাপ, যার প্রভাব পড়তে পারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। না শুধু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কথা নয়, বিশ্বের অর্থনীতিতে প্রভাব প়ড়ার কথাও বলেছেন তিনি।
এদিকে এক চীনা সমাজকর্মী জেনিফার ঝেং চীনের একটি মর্গের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছেন, যে ছবি দেখলে যে কোনও দেশেরই বুকে ভয় ধরবে। দেখা যাচ্ছে, সারসার মৃতদেহ পড়ে রয়েছে মর্গে। জেনিফারের দাবি, গত দুদিনেই এই সব দেহ এসেছে হাসপাতালে। করোনা সংক্রমণের জেরেই এই পরিস্থিতি বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
শুধু এই একটাই ফুটেজ নয়, কয়েকদিনে বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেছেন জেনিফার। একটি ভিডিওতে দেখিয়েছেন, কীভাবে হাসপাতালে ঠাঁই না পেয়ে রাস্তায় পড়ে রয়েছেন রোগীরা।
অপর একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালে উপচে পড়া রোগীর ভিড়। বেশির ভাগ রোগীর নাকেই লাগানো অক্সিজেন, চিকিৎসায় ব্যস্ত চিকিৎসক ও নার্সেরা। দুজন রোগীর মাঝে জায়গা প্রায় নেই বললেই চলে।
বিশ্লেষকদের দাবি, চীন সঠিক পরিস্থিতির ছবিটা বিশ্বের সামনে আনছে না, তার ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে। হাসপাতাল বা মর্গে ভিড়ের ছবি যদি সত্যি হয়, তাহলে সংক্রমণ যে মাত্রা ছাড়া, তা বেশ বোঝা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকেই কোভিডের উপরূপ ‘বিএফ.৭’-এর সংক্রমণে বির্পযস্ত চীন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে দাবি, চলতি মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত চীনে ২৪ কোটি ৬ লক্ষ আক্রান্ত হয়েছেন। চীনের ন্যাশনাল হেল্থ কমিশনের ফাঁস হওয়া রিপোর্টে তা বলা হয়েছে বলে দাবি সংবাদমাধ্যমটির।