ফুটবল বিশ্বের অন্যতম নক্ষত্রের ক্যারিয়ারে ৯৯৮ ম্যাচে ৭৮৮ গোল। সাতটি ব্যালন ডি’অর। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা জয়। সঙ্গে রয়েছে অসংখ্য মাইলস্টোন ও ট্রফি। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্ব ফুটবলকে নিজের পায়ে নাচিয়ে চলেছেন লিওনেল মেসি। তবে জীবনে সব পেলেও, তার কাছ থেকে এখন ‘অধরা’ বিশ্বকাপ। এর আগে চারবার ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে এই কাতার বিশ্বকাপই মেসির কাছে শেষ সুযোগ। বিশ্বকাপ না জিততে পারার জন্য তাকে অনেক কটাক্ষ হজম করতে হয়েছে। কেন তার সঙ্গে দিয়েগো মারাদোনার তুলনা করা হয়, সেটা নিয়েও সহ্য করতে হয়েছে অনেক অপমান। যদিও মেসির মা সেলিয়া মারিয়া কুকসিটিনির বিশ্বাস তার লিও এবার সব অপমানের জবাব দিয়ে বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফিরবেন।
মেসির ফুটবল জীবনের শেষ বিকালে এসে তাই আরও একবার মেসির মাকে বলতে শোনা গেল, মেসি কত কষ্ট করেছে, তা আমি বলে বোঝাতে পারব না। একটা ম্যাচ জিততে, নিজের পারফরম্যান্সকে আরও উন্নত করতে নিজেকে কীভাবে নিংড়ে দিয়েছে তা বলতে গেলে আমায় সাহিত্যিক হতে হয়। আমি বিশ্বাস করি, ঈশ্বর এতটা নিষ্ঠুর হতে পারেন না। বিশ্বাস করি, এবার অন্তত মেসি সেরা হবে। বিশ্বাস করি, এবার অন্তত লিওকে ন্যায়বিচার দেবেন ঈশ্বর।
টানা ৩৬ ম্যাচে অপরাজিত থেকে মেসির গোলে এগিয়ে গিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু সৌদি আরবের বিরুদ্ধে এগিয়ে থেকেও ১-২ ব্যবধানে হেরে মাঠ ছেড়েছিলেন মেসি। স্বভাবতই নিজেদের নখে-দাঁতে শান দিয়ে নিয়েছিলেন মেসির সমালোচকরা। তারপর থেকে নাকি বারবার প্রভু যিশুর কাছে মাথা নিচু করেছিলেন সেলিয়া। লাগাতার প্রার্থনা করেছেন গত কয়েকদিন।
মেসির গোল উদযাপন । ছবি: ইন্টারনেট
অবশেষে মেক্সিকোর বিপক্ষে সাফল্য। সেলিয়ার বিশ্বাস মেক্সিকোর বিপক্ষে জয়টাই হতে চলেছে মেসিদের টার্নিং পয়েন্ট। মারিয়া কুকসিটিনির দাবি, অমন টাফ ফার্স্ট হাফের পর, যে খেলাটা সেদিন খেলল আমার ছেলেরা ওটাই মোমেন্টাম দিয়ে দেবে। আমরা পোল্যান্ডকে হারাবই। গ্রুপ শীর্ষে থেকে নকআউটে যাব। শেষটাও করব এইভাবেই।
উল্লেখ্য, মেসি দল আর্জেন্টিনা পোল্যান্ডের বিপক্ষে সফল হবেন কিনা সেটা জানা নেই। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা। তারপর আরও একটি ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে নামবে আর্জেন্টিনা। রত্নগর্ভা মারিয়া কুকসিটিনির স্বপ্ন সত্যি হোক। বিশ্বজুড়ে অগণিত মেসির সমর্থকরা এই আশায় রয়েছেন। বাকিটা সময় বলবে। সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল