চলমান বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ইরানের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা ও তাদের সম্পদ জব্দ করা নিশ্চিত করবে জার্মানি।’ ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আনালেনা বেয়ারবক এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘যারা রাস্তায় নারী ও মেয়েদের মারধর করে, তারা ইতিহাসের ভুল পথে দাঁড়িয়ে আছে। যারা প্রতিবাদ করতে গিয়ে মারা গেছে, তারা স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাওয়া ছাড়া আর কিছু চায়নি।’
ইরানের জনগণের উদ্দেশে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে আছি। এবং আপনাদের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।’ এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ১৭ অক্টোবর ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিক পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর পর সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ দমন করতে সহিংস পথ বেছে নেয় ইরান সরকার। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানাল জার্মানি।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ইরানের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নরওয়ে ভিত্তিক ইরান মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১০ শিশুসহ কমপক্ষে ১৮৫ জন নিহত হয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, চলমান বিক্ষোভে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পস, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ২০ সদস্য নিহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে।
গত শনিবার প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি তেহরানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলে বিক্ষুব্ধ নারী শিক্ষার্থীরা ‘বিদায় হও, রাইসি’ বলে স্লোগান দিয়েছেন। একই দিনে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল হ্যাক হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পরিচয়/সোহেল