ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির শাসকগোষ্ঠীকে পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য বলে বর্ণনা করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি আরব লিগের দূতদের বলেছেন, এই শাসকগোষ্ঠী থেকে ইউক্রেনকে মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে মস্কোর। অর্থাৎ মস্কোর লক্ষ্য হলো ইউক্রেনের সরকারকে উৎখাত করা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যত রাশিয়া তার গতিবিধি উল্টে দিয়েছে। অর্থাৎ শুরুর দিকে তারা লুহানস্ক সহ রাশিয়া সীমান্তের কিছু এলাকার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দিয়ে তাদেরকে মুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এখন তারা বলছে ইউক্রেনের শাসকগোষ্ঠীকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতই তাদের লক্ষ্য। ফলে এক সময় তারা পুরো ইউক্রেনকে দখল করে নেয়ার টার্গেটের কথা বলবে না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। কারণ, যুদ্ধ শুরুর দিকে ক্রেমলিন বলেছিল তারা জেলেনস্কির সরকারকে উৎখাত করতে চায় না। এটা তাদের লক্ষ্যও নয়।
রাশিয়ার ব্যারেজ ও বিমান ইউক্রেনের ভিতরে বিভিন্ন শহরে অব্যাহত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে এমন মন্তব্য করলেন সের্গেই ল্যাভরভ। এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যখন কৃষ্ণ সাগরের বন্দর দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানি শুরু করতে যাচ্ছে তখন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বললেন। ইউক্রেন যদি এই খাদ্যশস্য রপ্তানি করতে পারতো, তাহলে বিশ্বে খাদ্য সংকট সহজ হয়ে আসতো। এ নিয়ে সপ্তাহান্তে একটি চুক্তি হয়, তা সত্তে¡ও রাশিয়া ওডেসা বন্দরে হামলা চালায়। রোববার দিনশেষে কায়রোতে আরব লিগের সম্মেলনে এর দূতদের সামনে বক্তব্যকালে ল্যাভরভ বলেন, এই অগ্রহণযোগ্য শাসকগোষ্ঠী থেকে মুক্ত করতে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ মস্কো। ইউক্রেনকে রাশিয়ার ঘোর শত্রæ হয়ে উঠতে কিয়েভ এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ল্যাভরভ। তিনি বলেন, ইউক্রেন এবং রাশিয়া একত্রে বসবাস করতো যদি! আমরা অবশ্যই ইউক্রেনের জনগণকে এই শাসকগোষ্ঠীর কবল থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করবো। এই শাসকগোষ্ঠী জনবিরোধী এবং ইতিহাসবিরোধী।
ল্যাভরভ যুক্তি দেন যে, মার্চে কিয়েভ তার অবস্থান পরিবর্তন করে। প্রকাশ্যে রাশিয়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে দেখে নেয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। উপরন্তু ইউক্রেনকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করে পশ্চিমারা। ওই মার্চেই শত্রæতা বন্ধে একটি চুক্তিতে প্রস্তুত ছিল রাশিয়া। ল্যাভরভ বলেন, এক্ষেত্রে পশ্চিমারা রাশিয়াকে বুদ্ধি দেয় যে, যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে পরাজিত না করা পর্যন্ত ইউক্রেন যেন কোনো সমঝোতা শুরু না করে।
ওদিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে জাতিসংঘ ও তুরস্কের সামনে একই রকম চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। তবে কবে নাগাদ খাদ্যশস্য ইউক্রেন রপ্তানি শুরু করবে তা পরিষ্কার নয়।