ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা অব্যাহত রাখতে একমত হয়েছে ন্যাটো সদস্যরা। রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে দুইদিনের বৈঠক শেষ হয়েছে ন্যাটোর। এই বৈঠকের পূর্বে ইউক্রেন আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চেয়েছে ন্যাটোর কাছে। এতে সম্মত হয়েছে সামরিক জোটটি। এছাড়া, যতদিন প্রয়োজন ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিয়ে যাওয়ার পক্ষেও মত দিয়েছে রাষ্ট্রগুলো। খবর ডয়চে ভেলের।
ন্যাটোর বৈঠকের প্রথম দিন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা সাংবাদিকদের কাছে বলেন, আমাদের আরো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। আইআরআইএস, হকস, প্যাট্রিয়টের মতো সিস্টেম প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রয়োজন ট্রান্সফরমার এবং জেনারেটর। মূলত, গত কয়েক সপ্তাহে রাশিয়া ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং গ্যাসের মজুত লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউক্রেনের অভিযোগ, ইউক্রেনের মানুষদের ঠান্ডায় মেরে ফেলতে চাইছে রাশিয়া।
সে জন্যই নির্দিষ্টভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিতে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। মঙ্গলবার ন্যাটোর বৈঠকেও সেই একই প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, রাশিয়া বুঝে গেছে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে তারা এই যুদ্ধ জিততে পারবে না। একের পর এক অঞ্চল তাদের হাতছাড়া হয়েছে। তা-ই এখন ইউক্রেনের বেসামরিক মানুষের উপর আক্রমণ শুরু হয়েছে। নষ্ট করা হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। কুলেবা জানিয়েছেন, ট্রান্সফরমার এবং জেনারেটরের সাহায্যে সমস্ত নাগরিকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র নষ্ট করা হলেও মানুষ যাতে আলো পান, হিটার চালাতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হবে। এই কারণেই ন্যাটোর কাছে ট্রান্সফরমার এবং জেনারেটর দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
কুলেবার ভাষায়, ট্রান্সফরমারের সাহায্যে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করব আর এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে রাশিয়ার রকেট ধ্বংস করবো, যাতে তারা আর আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস করতে না পারে। ন্যাটোর প্রধান জানিয়েছেন, প্রথম দিনের বৈঠকে ন্যাটোর দেশগুলি ইউক্রেনকে আরো বেশি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দিতে সম্মত হয়েছে।
এর আগে জার্মানির কাছে প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম চেয়েছিল ইউক্রেন। অত্যাধুনিক এই সিস্টেম ন্যাটোর অনুমোদন না নিয়ে জার্মানি ইউক্রেনকে দিতে পারবে না বলে জানিয়েছিল। এদিনের বৈঠকে সে বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে ন্যাটোর সমস্ত দেশই একটি বিষয়ে সহমত হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ জয় করার মতো জায়গায় আর নেই। সে কারণেই তারা আবহাওয়াকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে ফের আলোচনা হয়েছে। তবে এদিন কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা স্থির করা হয়নি।