সেরা আয়োজক হিসেবে সার্টিফিকেট পেয়ে গেছে কাতার বিশ্বকাপ ২০২২। সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করে বিশ্বসেরা আসর আয়োজন করে চারিদিকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। এবার সেই স্বীকৃতিটা পেয়েছে খোদ ফিফা সভাপতির কাছ থেকে। যদিও শুরু থেকেই কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে নানা সমালোচনা ও বিতর্ক ছিল। কিন্তু এই কাতার বিশ্বকাপেই ফুটবলপ্রেমীরা সাক্ষী হলেন একের পর এক অনন্য রেকর্ডের!
‘ফেভারিট’ তকমা পাওয়া অনেক সাবেক চ্যাম্পিয়ন দলের বিদায়, এশিয়া ও আফ্রিকার দলগুলোর গর্জন এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক দর্শক উপস্থিতি। সব মিলিয়ে এক দুর্দান্ত আয়োজন ছিল এবারের বিশ্বকাপ।
সেটি মনে করিয়ে দিয়েছেন বিশ্ব ফুটবল পরিচালনাকারী সর্বোচ্চ ব্যক্তি। সেজন্য ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো মনে করেন, কাতার বিশ্বকাপই ইতিহাসের সেরা বিশ্বকাপ! গ্রুপ পর্যায়ে উঠে আসা ৩২টি দলের প্রশংসা করে ইনফান্তিনো বলেছেন, ‘নানা সমালোচনা থাকার কারণে আমি এই বিশ্বকাপের সবগুলো ম্যাচ দেখেছি। খুব সহজে ও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, এটি বিশ্বকাপের সর্বকালের সেরা গ্রুপ পর্ব ছিল। একইসঙ্গে স্টেডিয়ামের মান ছিল দারুণ এবং দর্শকের ভিড়ও হয়েছে প্রচুর। প্রতিদিন গড়ে ৫১,০০০ দর্শক দেখা গেছে ম্যাচগুলোতে। এটা ফুটবলের জন্য অনেক আন্দদায়ক বিয়ষ ছিল।’
ফিফা সভাপতি আরো বলেন, ‘শুধু স্টেডিয়াম কিংবা দোহার রাস্তাতেই নয়, টেলিভিশনেও ফুটবল উপভোগ করা দর্শকসংখ্যা নতুন রেকর্ড গড়েছে কাতার বিশ্বকাপে এসে। টেলিভিশনে সংখ্যাটা রেকর্ড ভেঙেছে। আমরা ইতোমধ্যে ২০০ কোটির বেশি দর্শক পেয়েছি, যা সত্যিই অবিশ্বাস্য! ২৫ লাখ মানুষ দোহার রাস্তায় দাঁড়িয়ে এবং লাখো মানুষ প্রতিদিন স্টেডিয়ামে এসে খেলা দেখেছেন। তারা সম্মিলিতভাবে উল্লাস করেছেন এবং নিজেদের দলকে সমর্থন দিয়েছেন।’
আর বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতিটি মহাদেশের দল নকআউট পর্বে প্রতিনিধিত্ব করেছে। এটাকে ফুটবলের জন্য ইতিবাচক দিক বলছেন ইনফান্তিনো। এ পর্যায়ে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) থেকে তিনটি দেশ (এটিও প্রথমবারের মতো) এবং আফ্রিকান ফুটবল কনফেডারেশন (সিএএফ) থেকে দুটি দেশ (ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো) প্রতিদ্বন্ধিতা করেছে। কাতার বিশ্বকাপ দেখিয়ে দিয়েছে যে এখন আর বিশ্বকাপে ছোট দল বা বড় দল বলে কিছু নেই। বিশ্বকাপের এসব চমক নিয়ে ইনফান্তিনো বলেন, ‘এখন আর বড় দল ও ছোট দল বলে কিছু নেই। সবার মান ছিল কাছাকাছি। প্রথমবারের মতো সব মহাদেশের জাতীয় দল নকআউট পর্বে গেল। এটা দেখায় যে ফুটবল এখন সত্যিই বৈশ্বিক একটি খেলা।’
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রা সংস্থার প্রধান ব্যক্তির এমন বয়ান নিশ্চিতভাবে কাতারের সব কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে। ভবিষ্যতে যা আরো বড় বড় খেলার আসর আয়োজনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল