ব্রিটেনে যখন ওয়ার্ক পারমিটসহ অন্যান্য ভিসার জন্য কঠোর শর্তের বেড়াজাল, তখন ব্রিটেনের পাশের দেশ আয়ারল্যান্ডে অপেক্ষাকৃত সহজে মিলছে ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা। তবে, অপেক্ষাকৃত কম খরচ ও শর্ত থাকলেও শুধু দক্ষতা না থাকার কারণে আয়ারল্যান্ডের ভিসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বাংলাদেশিরা।
লন্ডনের লেক্সপার্ট সলিসিটর্সের প্রিন্সিপাল সলিসিটর ব্যারিস্টার শুভাগত দে শনিবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ড। চলতি বছর এখন পর্যন্ত নতুন করে প্রায় ১৯ হাজার ওয়ার্ক পারমিটের অনুমোদন দিয়েছে আইরিশ ডিপার্টমেন্ট অব এন্টারপ্রাইজ, ট্রেড অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট বিভাগ। কাজের দক্ষতা সম্পন্ন
বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের জন্য ইউরোপে আয়ারল্যান্ড একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে।
জানা গেছে, ২০২১ সালে হেলথ কেয়ারসহ নানা খাতে কর্মী সংকটে পড়ে আয়ারল্যান্ড। এরপর শিথিল হয় দেশটির এমপ্লয়মেন্ট পারমিট। যার ফলে ২০২২ সালে ৪০ হাজার ওয়ার্ক পারমিটের অনুমোদন দেয় আইরিশ ডিপার্টমেন্ট অব এন্টারপ্রাইজ, ট্রেড অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট। এরমধ্যে স্কিল এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ও সাধারণ কর্মসংস্থান পারমিট অন্যতম। আর এ ভিসায় সর্বনিম্ন বেতন রাখা হয়েছে বছরে ৩০ হাজার ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩২ লাখ টাকা।
আয়ারল্যান্ডে কারিগরি শিল্পের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা দেশ থেকে এনেছেন অল্প কিছু দক্ষকর্মী। স্বাস্থ্য বিভাগ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতেও অনেক বাংলাদেশি ভিসা পেতে পারেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট খাতে কর্মরতরা।
আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ও ওয়ার্ক ভিসা আলাদা। প্রথমে আবেদন করতে হয় ওয়ার্ক পারমিটের, পরে ওয়ার্ক ভিসার। স্বল্প ও দীর্ঘ উভয় মেয়াদের জন্য দেওয়া হয় এই ভিসা। প্রথমে দুই বছরের জন্য ভিসা দেওয়া হলেও, পাঁচ বছর বৈধভাবে থাকলেই দেশটিতে ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন বা স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে পারবেন আগতরা।
আয়ারল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা প্রভাষক আব্দুস শহীদ শনিবার জানান, আয়ারল্যান্ডে একজন ছাত্র এলেও ইউকের তুলনায় খুব সহজে এদেশে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রেও সহজে এদেশে স্থায়ী হওয়া যায়। গত দুই বছরে এদেশে ওয়ার্ক পারমিট ও স্টুডেন্ট ভিসায় বিপুল সংখ্যক ভারতীয় এসেছেন। হাসপাতালগুলো ভারতীয় কর্মীতে ঠাসা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, কাজের দক্ষতা ও
অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশিরা সেভাবে এদেশে আসতে পারছেন না।
আয়ারল্যান্ড থেকে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু হয় খুব তাড়াতাড়ি। কিন্তু বাংলাদেশিরা যখন ইন্ডিয়ার আয়ারল্যান্ডের দূতাবাসে ভিসা আনতে যান তখন বেশিরভাগ বাংলাদেশিই ভিসা পান না। কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকলে দুবছরে হাজার হাজার ভারতীয় কর্মী যেভাবে এখানকার ভিসা পেয়েছেন, বাংলাদেশিরাও তেমনি পেতেন। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন