নিউইয়র্ক     বুধবার, ৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২১শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেশি-হাড়ের ক্ষমতা কমছে মহাকাশে আটকেপড়া দুই নভোচারীর

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪ | ০৩:২৯ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২৪ | ০৩:২৯ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
পেশি-হাড়ের ক্ষমতা কমছে মহাকাশে আটকেপড়া দুই নভোচারীর

গত জুন মাসে মহাকাশে রওনা দেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোচর সুনীতা উইলিয়ামস। মাত্র ৮-১০ দিনের জন্য মহাকাশ সফরের প্রস্তুতি নিয়ে বুচ উইলমোরের সঙ্গে ইলন মাস্কের বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানে চেপে পাড়ি জমান সুনীতা উইলিয়ামস। কিন্তু মহাকাশযানের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মহাশূন্যেই আটকে রয়েছেন ওই দুই নভোচারী।

জানা যায়, মহাকাশযানের যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে মহাকাশচারীদের মহাকাশে রেখে দেওয়াই নিরাপদ পন্থা।

প্রথমে মনে করা হয়েছিল যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে সুনীতাদের নিয়ে ফিরবে বোয়িং স্টারলাইনার। পরে জানা যায়, তাদের না নিয়েই পৃথিবীতে ফিরে আসবে মহাকাশযানটি। সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ওই মহাকাশযান ফিরে আসবে পৃথিবীতে।

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বোয়িং স্টারলাইনার নামের ওই মহাকাশযান থেকে হিলিয়াম গ্যাস লিক হচ্ছিল। সেই অবস্থায় পৃথিবীতে ফেরার চেষ্টা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেছিল নাসা। বোয়িং স্টারলাইনার সুনীতাদের ছাড়াই ফিরে আসার ফলে সংস্থার বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। অন্তত সাড়ে ১২ কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বোয়িং।

তবে মহাকাশযানের যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়ে বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে আসছে। মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে যুক্তদের একাংশের অভিযোগ, ছিদ্রপথে হিলিয়াম বেরিয়ে আসছে, তা আগে থেকেই জানত নাসা এবং বোয়িং। এখনই সুনীতা এবং তার সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোরের পৃথিবীতে ফেরার সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছে না আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে আরও একটি মহাকাশযান পাঠাবে নাসা। ইলন মাস্কের নিজস্ব মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেস এক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে করে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে বলে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।

আগামী ৬ মাস আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রেই কাজ করবেন সুনীতা এবং বুচ। মহাকাশে গবেষণার কাজেই তারা কাটিয়ে দেবেন এই দীর্ঘ সময়।

তবে সময় যত এগোচ্ছে, বাড়ছে আশঙ্কা। দীর্ঘ দিন ধরে মহাকাশে আটকে থাকায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে সুনীতা ও বুচের। যদিও নাসা দাবি করছে, সুনীতা এবং ব্যারির প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা নেই।

শরীরের ওপর অভিকর্ষের নিরবচ্ছিন্ন টান না থাকায় মহাকাশে মানবদেহের পেশি ও হাড়ের ঘনত্ব দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। দুই সপ্তাহ পরেই পেশির ঘনত্ব ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। ছয় মাস থাকলে তা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়াও মহাকাশে থাকলে দ্রুত হারে কমতে থাকে লাল রক্তকণিকার পরিমাণ। সে ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে রক্তাল্পতার মতো শারীরিক সমস্যারও।

নাসার রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি দিন কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমাচ্ছেন সুনীতা ও বুচ। তাদের ওজন যাতে না কমে যায় তার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে পুষ্টিকর খাবার ও পানীয়ের।

প্রসঙ্গত, নভোচারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দিন মহাকাশে থেকেছেন নাসার ফ্র্যাঙ্ক রুবি। তিনি ৩৭১ দিন আন্তর্জাতিক মহাকাশে কাটিয়েছিলেন। মহাকাশে একটানা সবচেয়ে বেশি সময় থাকার রেকর্ড রাশিয়ান নভোচর ভ্যালেরি পলিয়াকভের। ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে তিনি মির মহাকাশ স্টেশনে ৪৩৭ দিন কাটিয়েছিলেন। সূত্র: ঢাকা পোষ্ট।

শেয়ার করুন