গত ২৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার পর সে ফলাফল প্রত্যাখান করেন সভাপতি পদপ্রার্থী মাকসুদ চৌধুরী। সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত বিজ্ঞপ্তিতে তিন বলেন, চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচনে কারচুপির ফলাফল প্রত্যাখান ! দীর্ঘ দশ বছর বছর অনুস্টিত চট্রগাম সমিতির নির্বাচনের দিন ঘোষিত মুল ফলাফলের সাথে আজকে ঘোষিত পেইজ বুক ফলাফলের কোন সম্পর্ক নাই! গত ২০ অক্টোবর নির্বাচনের দিন প্রতিধন্ধি প্রার্থীদের প্রতিনিধি, অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য এবং মিডিয়া কর্মীদের সামনে ঘোষিত ভোটের ফলাফলের সাথে আজকে ঘোষিত পেইজবুক ফলাফলের কোন সম্পর্ক নাই! এই ফলাফল মাকসুদ মাসুদ পরিষদ প্রত্যাখান করেছে!
প্রত্যাখ্যানের কারন :
১) নির্বাচনের দিন পেনসিলভেনিয়া কেন্দ্রে আইডি বিহীন। যে ভোট গ্রহন করা হয়েছে তা গ্রহনযোগ্য নয় , কারন নির্বাচন কমিশন নিজেই ঘোষনা করেছেন NO ID, NO VOTE ! নির্বাচন কমিশনের বিধিমালায় স্পস্ট করে বলা আছে “ভোট দিতে আইডি অবশ্যই হাতে রাখতে হবে” ! যা অন্যান্য কেন্দ্রে মানা হলেও সু পরিকল্পিত ভাবে পেনসেলভিনিয়ায় মানা হয়নি! ফলে চার চারটি ভোট আইডি বিহীন গ্রহন করা হয়েছে যা নির্বাচনের চারদিন পর কমিশন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আইডি সংগ্রহ করে স্বাক্ষর নিয়ে এসেছেন! যা যেকোন নির্বাচনের ইতিহাসে বিরল !
২) চ্যালেন্জ ভোটের কথা বলা হলেও তা গননার জন্য মাকসুদ মাসুদ প্যানেলের কোন প্রতিনিধি ডাকা হয়নি, এমনকি কোথায় ভোট গুলো গননা হয়েছে অথবা আদো গননা হয়েছে কিনা মাকসুদ – মাসুদ প্যানেল জানে না!
৩) কিকারনে চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষনায় ৬ দিন সময় নিতে হলো? ৪) নির্বাচনের ফলাফল গোপনে ঘোষনা করা হলো কেন?
৪) মোট ছয়টি চ্যালেন্জ ভোটের কথা বলা হলেও চারটি গননা হলো বাকী দুটির পরিনতি কি? চট্রগ্রাম বাসীর দাবী মেশিনে গননা করে যে ফলাফল পাওয়া গেছে ওঠাই চুড়ান্ত ফলাফল, সাজানো বানানো কোন ফলাফল আমরা মানিনা মানব না।
মাকসুদ- সিরাজির সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য
সংবাদ সম্মলেন পঠিত লিখিত বত্তব্যে সাসুদ সিরাজী পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন গত ২০ অক্টোবর ২০২৪ রবিবার প্রবাসের অন্যতম বৃহত সামাজিক সংগঠনটন চিটাগাং এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে। উক্ত নির্বাচনের ফলাফল এবং বেশ কিছু অনিয়ম নিয়ে বিস্তারিত জানানোর জন্য আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। আমাদের বিশ্বাস আপনাদের মাধ্যমে উত্তর আমেরিকার সকল চট্টগ্রামবাসী আমাদের বক্তব্য জানতে পারবেন।
২০ অক্টোবর নির্বাচন হয়েছে মোট চারটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়, তার মধ্যে একটি ব্রুকলীন, একটি কুইন্সের জ্যামাইকাতে বাকী দুইটির মধ্যে একটি কানেক্টিকাটের স্টামপোর্ডে এবং অপরটি পেনসিলভেনিয়ার আপার ডারবিতে। নিউ ইয়র্কে ভোট শুরু হয় সকাল নয়টায় এবং শেষ হয় সন্ধ্যা সাতটায়, নিউইয়র্কের বাইরের স্টেট গুলোতে শুরু হয় সকাল দশটায় এবং শেষ হয় বিকাল ছয়টায়। ভোট গ্রহণ শেষ করে প্রতিটি কেন্দ্রের ফলাফল কেন্দ্র ভিত্তিক ঘোষণা করা হলেও চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করার ক্ষেত্রে গড়িমসির করতে থাকে, নিউইয়র্ক নিউজার্সী, কানেক্টিকাট ও পেনসেলভিনিয়াসহ বিভিন্ন স্টেট থেকে শতশত চট্টগ্রামবাসী যখন চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছিল, ঠিক তখনি বলা হলো পেনসিলভেনিয়াতে চারটি চ্যালেঞ্জ ভোট রয়েছে এবং ঐ ভোট গুলো গণনা করতে হবে, যা আমাদের প্যানেলের প্রতিনিধির মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, আমরা যখন জানতে চাই কেমন চ্যালেঞ্জ ভোট তারা জানাই ঐ চারটি ভোট যারা দিয়েছেন তারা আইডি দেখাতে পারেনি তাই চ্যালেঞ্জ ভোট হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তখন শতশত চট্টগ্রামবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়ে, আমাদের অপেক্ষার পালা বেড়ে যেতে থাকে, রাত তখন আনুমানিক ১১ টার কাছাকাছি তখন পেইজ বুক লাইফের মাধ্যমে দেখতে পেলাম নির্বাচন কমিশনার ফলাফল ঘোষণা করছেন এবং ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী সভাপতিসহ মাকসুদ মাসুদ প্যানেলের ১৩ জন প্রার্থী এবং সাধারণ সম্পাদকসহ তাহের আরিফ পরিষদের ৬ জন প্রাার্থী জয়ী হয়েছেন। তখন চট্টগ্রামবাসী বিজয় উৎসব করতে থাকে। এবং মিছিল সহকারে পুরো চার্চ ও ম্যাকডোনাল্ড প্রদক্ষিণ করে। পরক্ষণেই জানতে পারলাম গুটি কয়েক ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনকে ঘিরে ধরেছে এবং বলেছে এই নির্বাচনের ফলাফল তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন! কারণ তারা চাই পেনসিলভেনিয়াতে অবৈধ ভাবেগ গ্রহণ করা চারটি ভোট গণনা করতে হবে।
নির্বাচন শেষ হয়েছে প্রায় ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে যাচ্ছে এখনো পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেনি! যা উত্তর আমেরিকার সকল চট্টগ্রামবাসীদের চরমভাবে হতাশ করেছে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত বিধিমালাতে স্পটভাবে বলা আছে নো আইডি, নো ভোট। প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে বিশাল আকারে একাদিক সাইন ছিল। তাহলে আইডি ছাড়া ভোট গ্রহণ কেন? নির্বাচন কমিশন নিজেরাই নিজেদের দেয়া বিধিমালা ভঙ্গ করেছেন।
দীর্ঘ দশ বছর চট্টগ্রাম সমিতিতে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি এবং গত ৮ বছর কোন নির্বাচন হয়নি, সংগঠনকে গতিশীল করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিনের গ্রুপিংকে বন্ধ করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয় এবং এই অন্তবর্তীকালীন কমিটি দীর্ঘ ১৮ মাস কাজ করেছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনটিকে গতিশীল করার জন্য। এই নির্বাচন কমিশনার ৫ মাসের ও বেশী সময় নিয়ে নির্বাচন করেছে, তাদের এত সময় ক্ষেপণ করার পরও অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে পুনরায় প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য প্যানেলের আজ্ঞাবহ আরেকজন নির্বাচন কমিশনার নতুন ষড়যন্ত্রের লিপ্ত হয়েছেন। আমরা গত দুদিন ধরে অপেক্ষা করেছি নির্বাচন কমিশনারের ঘোষণা শুনার জন্য কিন্তু কোন ঘোষণা এখনো শুনতে পায়নি। তাই বাধ্য হয়ে আজ আপনাদের মাধ্যমে পৃথিবীর সকল চট্টগ্রামবাসীদের জানাতে চাই তাদের আসল চরিত্র।
মেশিনের যে ফলাফল এবং নির্বাচনের দিন কমিশনের পক্ষ থেকে যে ফলাফল আমাদেরকে হস্তগত করা হয়েছে তাতে আমরা বেসরকারি ভাবে ১৩টি পদে জয়ী হয়েছি, অপর প্যানেল ৬ টি পদে জয়ী হয়েছেন।
আমরা আপনাদের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করতে চাই চট্টগ্রামবাসী দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারিনি এবং গত ২০ অক্টোবর অনেক উৎসাহভাবে ভোট দিয়েছে বিশেষ করে নিউইয়র্কে। সুতরাং মানুষের দেয়া গণতান্ত্রিক রায় পরিবর্তনের কোন রকম চেষ্টা করবেন না।