নিউইয়র্ক     মঙ্গলবার, ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে আরো যে পরিবর্তন আনতে পারেন ট্রাম্প

জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভের আইন সংশোধনের চিন্তাভাবনা ট্রাম্পের, দুশ্চিন্তায় অভিবাসীরা

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪ | ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪ | ১২:৪৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভের আইন সংশোধনের চিন্তাভাবনা ট্রাম্পের, দুশ্চিন্তায় অভিবাসীরা

প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জনের সুযোগ বন্ধ করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দায়িত্ব নেওয়ার দিনই এ সংক্রান্ত আইন বাতিলে নির্বাহী আদেশ দিতে পারেন তিনি।বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার রানিং মেট জেডি ভ্যান্সের যৌথ ওয়েবসাইটে এ বিষয়ক নির্বাহী আদেশের একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে।

ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই নির্বাহী আদেশ যদি বাস্তবায়িত হয় তবে কেবল যারা অবৈধ অভিবাসী তাদের সন্তানই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ হারাবে না। পাশাপাশি, যারা নাগরিক হওয়ার প্রাথমিক ধাপ ‘গ্রিন কার্ড’ পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তারাও প্রভাবিত হবেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ফেডারেল এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হবে যে, অনাগত সন্তানদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিক হওয়ার জন্য পিতা-মাতার অন্তত একজনকে মার্কিন নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

ট্রাম্প-ভ্যান্সের নির্বাহী আদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, এটি মার্কিন সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে অভিবাসন আইনজীবীরা মনে করেন, এটি ঠিক নয়। তারা বলছেন, নির্বাহী আদেশ এই আইন পাস হলে তারা বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ করবেন।

নির্বাহী আদেশের পর এটি আইন হিসেবে পাস হলে, তা বাংলাদেশি ও ভারতীয় প্রবাসীদের জন্য এক বিশাল ধাক্কা হয়ে দেখা দেবে। গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চের বিশ্লেষণ অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৮ লাখ ভারতীয় আমেরিকান আছে। যাদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ বা ১৬ লাখ যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছে। নতুন আইন হলে, এই অভিবাসীদের অনেকেই আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে আর স্থায়ী বাসিন্দা বা নাগরিক হতে পারবেন না।

অভিবাসন সংক্রান্ত ট্রাম্পের এ পরিকল্পনার কারণে বেশি দুশ্চিন্তায় আছেন দেশটির বৈধ কাগজপত্র বিহীন অর্ধলক্ষাধিক বাংলাদেশি দম্পতি। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় ভুগছে দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে বৈধতার জন্য আইনি লড়াই করা অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবার।

অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপারে বৃহস্পতিবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে তার কিছু করার নেই। তাদের তিনি ফেরত পাঠাবেনই।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট বলেন, অবৈধদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি কোনো পণ্যের মূল্যতালিকা নয়। এটি সত্যিই এমন কিছু নয়। আমাদের আসলে কিছু করার নেই। যখন কেউ খুন ও হত্যা করে, যখন মাদক সম্রাটরা দেশকে ধ্বংস করেছে, তখন তাদের সেসব (নিজ) দেশে ফেরত যেতে হবে। কারণ তারা আর এখানে থাকবে না।

ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি রাজীব এস খান্না বলেন, ‘ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের জন্য কোনও স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব না দেওয়ার পরামর্শ দেয় ৷ এটি প্রায় নিশ্চিতভাবে মার্কিন সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনীর লঙ্ঘন। ট্রাম্পের ভুল ব্যাখ্যার মোকাবিলায় সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করি।’

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৩ সালের মার্চ নাগাদ আমেরিকার অভিবাসন প্রক্রিয়ার কর্মসংস্থানভিত্তিক ‘গ্রিন কার্ডের’ অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা ভারতীয়র সংখ্যা এক মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক কেটো ইনস্টিটিউটের অভিবাসন বিষয়ক পরিচালক ডেভিড বিয়ার এই তথ্য দিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, মৃত্যু ও বয়স উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে কিছু ভারতীয় এ তালিকা থেকে বাদ পড়বেন। নতুন আইন পাস হলে, এসব কারণ বিবেচনায় নিলে বলা যায়—এসব ভারতীয়দের গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষার সময় হবে ৫৪ বছর। আর যদি এসব কারণ বিবেচনা না করা হয়, তবে অপেক্ষা হতে পারে ১৩৪ বছর। এই দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষায় ৪ লাখ ১৪ হাজার ভারতীয় মারা যাবেন এবং ১ লাখের বেশি ভারতীয় শিশু ২১ বছর পূর্ণ হওয়ার পর নির্ভরশীল ভিসা বা ‘ডিপেনডেন্ট ভিসার’ বৈধতা হারাবে এবং গ্রিন কার্ডের তালিকা থেকে বাদ পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে আরো যে পরিবর্তন আনতে পারেন ট্রাম্প

প্রেসিডেন্ট (নির্বাচিত) ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসনকে তার অ্যাজেন্ডার শীর্ষে রেখেছিলেন। তিনি দেশের দক্ষিণ সীমান্তে, তার ভাষায় ‘নজিরবিহীন শৃঙ্খলা’ আরোপ করার অঙ্গীকার করেন।

ট্রাম্প আরো অঙ্গীকার করেন যে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম দিনেই তিনি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবৈধ অভিবাসী বহিষ্কার অভিযান শুরু করবেন।

নির্বাচনী প্রচারণার পুরো সময় জুড়ে ট্রাম্প অভিবাসনকে একটি সঙ্কট হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি অবৈধ অভিবাসন এবং নতুন অভিবাসী আটকানোর লক্ষ্যে এক রাশ বিতর্কিত নীতি দ্রুত বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার করেছেন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) ফ্লোরিডায় ট্রাম্প তার বিজয় ভাষণে বলেন, ‘আমরা আমাদের সীমান্ত ঠিক করবো…আমরা চাই লোকজনকে আবার ঢুকতে দিতে। তাদেরকে আইনসম্মত পথে আসতে হবে।’

তবে, লাখ লাখ মানুষের পুনরায় প্রবেশের প্রক্রিয়া পরিচালনা করা জটিল আইনগত এবং ব্যবস্থাপনামূলক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

বেশকিছু ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছে তার অভিবাসন নীতি। এ নীতির অংশ হিসেবে বিশাল ডিটেনশন ক্যাম্প নির্মাণ, অভিবাসীদের ব্যাপক গণপ্রত্যাবাসন, সীমান্তরক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি, সামরিক ব্যয়ের বড় অংশ সীমান্ত নিরাপত্তায় বরাদ্দ রাখা এবং সন্দেহভাজন ড্রাগ কার্টেল ও অপরাধী গ্যাং সদস্যদের আদালতের শুনানি ছাড়াই বের করে দেয়ার জন্য ১৭৯৮ সালের ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ প্রয়োগ করা হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

ট্রাম্প আরো বলেছেন, অভিবাসন আদালতে শুনানির অপেক্ষায় থাকা অভিবাসীদের স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে যাওয়ার সুযোগ বা তার ভাষায় ‘‍ক্যাচ-অ্যান্ড-রিলিজ’ নীতির প্রয়োগ বন্ধ করবেন তিনি। একই সঙ্গে ‘রিমেইন ইন মেক্সিকো’ নীতিও পুনরায় চালু করবেন। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এ নীতি চালু ছিল। এর আওতায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে চাওয়া অভিবাসীদের তাদের মামলা চলাকালে মেক্সিকোয় অপেক্ষা করতে হতো।

তবে অবৈধ অভিবাসীদের গণআটক বা এসব পরিকল্পনার অর্থায়ন নিয়ে কোনো পরিকল্পনার কথা এখনো জানাননি তিনি। এছাড়া অতিরিক্ত সীমান্তরক্ষী নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন বলে পলিটিকোয় প্রকাশিত এক নিবন্ধে উঠে এসেছে। সামরিক বাজেটের কিছু অংশ সীমান্ত নিরাপত্তায় ব্যবহারের প্রস্তাব আদালতে খারিজ হয়ে যেতে পারে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।

হিব্রু ইমিগ্র্যান্ট এইড সোসাইটির (এইচআইএস) প্রধান নির্বাহী মার্ক হেটফিল্ড বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, এখানে একটা লাইন আছে এবং সবাইকে ওই লাইনে দাঁড়াতে হবে। বেশিভাগ সময়, সেরকম কোনো লাইন থাকে না।’

মাইগ্রেশন পলিসি ইন্সটিটিউটের একটি প্রতিবেদনে একই কথা বলা হয়েছে। তারা বলছে, ভিসার জন্য একাধিক পথ আছে, প্রত্যেকটির নিজস্ব অপেক্ষার সময় আছে, যা নির্ধারণ করে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য আবেদনকারীকে কতদিন অপেক্ষা করতে হবে।

বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা এবং নির্দিষ্ট দেশের জন্য কোটার এই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে। অনেক আবেদনকারীকে দশকের পর দশক অপেক্ষা করতে হয়।

পুনরায় প্রবেশে কড়াকড়ির কারণে অনেক কাগজ-পত্র বিহীন অভিবাসী কোনোভাবেই এসব লাইনে যোগ দিতে পারেন না।

যেসব অভিবাসীর যুক্তরাষ্ট্রে ‘বেআইনিভাবে থাকার’ ইতিহাস আছে, তাদের পুনরায় প্রবেশের রাস্তা ১৯৯৬-এর দ্য ইমিগ্রেশন রিফর্ম অ্যান্ড ইমিগ্র্যান্ট রেসপন্সিবিলিটি অ্যাক্ট বন্ধ করে দিয়েছে।

যারা চলে গিয়ে আবার ঢুকতে চান, তাদের মধ্যে যারা ১৮০ দিনের বেশি কিন্তু এক বছরের কম সময় বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ছিলেন, তারা তিন বছরের জন্য পুনরায় প্রবেশ করতে পারবেন না। যারা এক বছরের বেশি সময় বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন, তাদের ওপর ১০ বছরের নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

বেআইনি উপস্থিতির মধ্যে ভিসার মেয়াদ শেষে রয়ে যাওয়া বা যাচাই ছাড়া প্রবেশ অন্তর্ভুক্ত।

ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছেন তিনি তার প্রথম মেয়াদে যত লোককে বহিষ্কার করেছিলেন, এবার তার চেয়ে বেশি করবেন।

ট্রাম্প আধা-সামরিক ন্যাশনাল গার্ড দিয়ে কাগজপত্র-বিহীন অভিবাসীদের আটক করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি ১৮ শ’ শতাব্দীর আইন এলিয়েন্স এনেমিস অ্যাক্ট-এর কথাও বলেছেন, যার মাধ্যমে যেসব দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বৈরী বলে গণ্য করা হয়, সেসব দেশ থেকে আসা লোকজনকে বহিষ্কার করা যাবে।

ট্রাম্পের লক্ষ্য হচ্ছে যেসব অভিবাসীর বৈধ কাগজপত্র নেই, তাদের সংখ্যা ব্যাপক হারে কমিয়ে আনা। তার সমর্থকরা এই পরিকল্পনাকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। কিন্তু বিরোধীরা যুক্তি দিচ্ছেন যে, এর ফলে অনেক আইনগত লড়াই শুরু হবে এবং ব্যবস্থাপনার দিক থেকে ঝামেলা সৃষ্টি করবে।

আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক জেরেমি রবিন্স ভিওএ-কে লেখা এক ইমেইলে বলেন, ‘কোনো প্রেসিডেন্ট যদি গণ বহিষ্কার নীতি অনুসরণ করতে যান, তাহলে সেটা করতে সরকারের বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ হবে এবং একই সময় অর্থনীতির ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করবে।’

রবিন্স ইমেইলে লেখেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, নীতি নির্ধারকরা এবং আমেরিকান জনগণ বুঝুক এর মধ্যে কী জড়িত আছে, করদাতাদের লাখ লাখ ডলার খরচ হবে, ইতোমধ্যে চাপে থাকা শিল্পখাত বিধ্বস্ত হবে, লাখ লাখ মানুষ ডিটেনশন সেন্টারে আটক এবং হাজার হাজার পরিবার ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যাবে যার ফলে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা আর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হবে।’

ধারণা করা হচ্ছে, প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের সময় শুরু করা ‘রিমেইন ইন মেক্সিকো’ প্রোগ্রাম আবার চালু হবে। এই নীতি অনুযায়ী আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের আবেদন প্রক্রিয়া চলার সময় তাদের মেক্সিকোতে থাকতে বাধ্য হয়।

আরো একটা নীতিমালা পুনরায় চালু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে অভিবাসীদের দ্রুত বহিষ্কার করা যায় এবং যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অভিবাসন কমিয়ে আনা যায়।

ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় আরেকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যা হলো, বাইডেন প্রশাসন অভিবাসীদের কিছু নির্দিষ্ট গ্রুপকে আইনসম্মতভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়ে যে পদক্ষেপ নিয়েছিল, তা বাতিল করা।

বাইডেনের নীতির অধীনে, কিউবা, হেইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনেজুয়েলা, এই চারটি দেশ থেকে আসা প্রতি মাসে ৩০ হাজার অভিবাসীকে শর্ত সাপেক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে আইনসম্মতভাবে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়। ট্রাম্প এই রাস্তা বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছেন।

যারা যুক্তরাষ্ট্রে আসবে তাদের যাচাই করার প্রক্রিয়া আরো জোরদার করার জন্য ট্রাম্প ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকা পুনরায় চালু করে আরো দেশ অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি একটি ‘মতাদর্শ যাচাই’ প্রক্রিয়া শুরু করতে চান যার মাধ্যমে যেসব ব্যক্তিকে ট্রাম্প ‘বিপজ্জনক, পাগল, ঘৃণাপূর্ণ, বিদ্বেষী এবং বেপরোয়া’ বলে বর্ণনা করেন, তাদের নিষিদ্ধ করা হবে।

ট্রাম্পের প্রচারণা দল বলছে এই পদক্ষেপ জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করবে, যদিও এগুলো বৈষম্য এবং অধিকার নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্প আরো বলেন, ‘যেসব শিশু যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিয়েছে যখন তাদের বাবা-মা বেআইনিভাবে দেশে ছিলেন, তাদের জন্মসূত্রে নাগরিক হওয়ার অধিকার তিনি বাতিল করবেন। এই পদক্ষেপকে সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর আলোকে দেখতে হবে এবং ধারণা করা হচ্ছে, তা কঠোর আইনগত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।’

ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির প্রতি তার মূল সমর্থকের সমর্থন রয়েছে, কিন্তু সেটা বিরোধিতার মুখে পড়ছে আইন বিশেষজ্ঞ এবং অধিকার সংগঠনগুলোর কাছে। তারা যুক্তি দেখাচ্ছে, গণ বহিষ্কার এবং যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে পারে এবং আদালতে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

এইচআইএস-এর মার্ক হেটফিল্ড বলেন, নতুন ট্রাম্প প্রশাসন আইনসম্মত অভিবাসন নিয়ে কী করবে, তা নিয়ে অধিকারকর্মীরা উদ্বিগ্ন।

হেটফিল্ড বলেন, ‘তিনি যদি শরণার্থী কর্মসূচি বন্ধ করতে চান তখন আমরা সম্ভবত মামলা করবো…কিন্তু শেষ কথা হচ্ছে, শরণার্থী কর্মসূচির ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের অনেক ক্ষমতা আছে। আর রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশ্নে, তিনি সীমান্তে এসে আবেদন করা অসম্ভব করে তুলবেন, যেমন তিনি করেছিলেন তার রিমেইন ইন মেক্সিকো কর্মসূচি দিয়ে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় তরুণ-নেতৃত্বাধীন অভিবাসী সংগঠন ইউনাইটেড উই ড্রিম-এর রাজনৈতিক পরিচালক মিশেল মিং বলেন, ‘তারা অভিবাসীদের রক্ষা করতে প্রস্তুত থাকবেন।

মিশেল মিং ধারণা করছেন, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের পুরো সময় জুড়ে তাদের অনেক আপনার অধিকার জানুন সংক্রান্ত সভার আয়োজন করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প যখন দায়িত্ব নেবেন, আমরা তাকে স্মরণ করিয়ে দেবো যে আমাদের জনগোষ্ঠীর ক্ষতি করে এমন যেকোনো নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমরা আছি।’ সূত্র : ভিওএ

শেয়ার করুন