যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকী। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচরণা। প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে কে; করা হচ্ছে সেই জরিপও। যেখানে এবার নতুন জরিপে দেখা যাচ্ছে, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে জনসমর্থনে এগিয়ে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস।
রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত ছয়দিনের নতুন এই জরিপে ৪৬ শতাংশ ভোটার হ্যারিসকে সমর্থন করেছেন। আর ৪৩ শতাংশ ভোটার ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন। অর্থাৎ, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস তিন শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে গেছেন।
জরিপটি সোমবার শেষ হয়। এর আগে গত সপ্তাহে রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত জরিপে হ্যারিস পেয়েছিলেন ৪৫ শতাংশ সমর্থন, আর ট্রাম্প পেয়েছিলেন ৪২ শতাংশ সমর্থন। দুই প্রার্থীর মধ্যে এবারের ৫ নভেম্বরের নির্বাচনী লড়াই যে হাড্ডাহাড্ডি হবে সে ধারণাই আরও পোক্ত করেছে নতুন জরিপগুলোর ফল।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি ও অভিবাসন নিয়ে ভোটারদেরকে অখুশি দেখা গেছে রয়টার্স/ইপসোসের এসব নতুন জরিপে। এই বিষয়গুলোতে ভোটাররা ট্রাম্পের অবস্থানকে সমর্থন করেছে।
জরিপে দেখা গেছে, নিবন্ধিত ভোটারদের ৭০ শতাংশই জীবনযাপন ব্যয় ভুল পথে যাচ্ছে বলে মনে করছে। অর্থনীতি ভুল পথে যাচ্ছে মনে করছে ৬০ শতাংশ ভোটার। অভিবাসন নীতি নিয়ে একই অবস্থান ৬৫ শতাংশ ভোটারের।
ভোটাররা আরও বলেছে, অর্থনীতি, অভিবাসন এবং গণতন্ত্রে হুমকি এখন দেশের সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা। এসব বিষয়ে কোন প্রার্থীর অবস্থান ভাল সে প্রশ্নে অর্থনীতির ক্ষেত্রে ট্রাম্পের পক্ষে মত দিয়েছে ৪৬ শতাংশ ভোটার। আর হ্যারিসের পক্ষে মত দিয়েছে ৩৮ শতাংশ ভোটার। অন্যদিকে, অভিবাসনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প ও হ্যারিসের পক্ষে সমর্থনের এ হার যথাক্রমে ৪৮ ও ৩৫ শতাংশ।
প্রেসিডেন্টের মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনে কোন বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত সে প্রশ্ন জরিপে অংশগ্রহণকারীরা অভিবাসনকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে। ৩৫ শতাংশ ভোটাররের মতে, নতুন প্রেসিডেন্টকে সবার আগে অভিবাসনে নজর দেওয়া উচিত। আর ১১ শতাংশ ভোটার আয় বৈষম্য এবং স্বাস্থ্যসেবা ও করে সমান ১০ শতাংশ শেয়ারের কথা বলেছেন।
তবে রাজনৈতিক উগ্রপন্থা ও গণতন্ত্রে হুমকি মোকাবেলার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের তুলনায় হ্যারিস জনসমর্থন বেশি পেয়েছেন। জরিপে দেখা গেছে, এই দুই বিষয়ে হ্যারিসকে সমর্থন দিয়েছে ৪২ শতাংশ ভোটার। অন্যদিকে, ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছে ৩৫ শতাংশ ভোটার। আবার গর্ভপাত এবং স্বাস্থ্যসেবা নীতিতেও ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন হ্যারিস।
রয়টার্স/ইপসোস জরিপসহ জাতীয় সব জরিপেও ভোটারদের দৃষ্টিকোণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সংকেত পাওয়া যায়। কিন্তু প্রতিটি রাজ্যের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ফলই চূড়ান্তভাবে বিজয়ী কে তা নির্ধারণ করে দেয়। আর ৭ টি দোদুল্যমান রাজ্যের ফলেও চূড়ান্তভাবে বিজয়ী নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করেছিলেন প্রতিপক্ষ রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প। হিলারি সেবার জাতীয় পপুলার ভোটে ২ পয়েন্টে জয়ী হলেও ট্রাম্প ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের জোরে নির্বাচনে চূড়ান্তভাবে জয়লাভ করেছিলেন।