গত ২০ অক্টোবর রবিবার অনুষ্ঠিত চিটাগাং এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনক’র কার্যকরী পরষদের নির্বাচনের ফলাফল ২৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ৬টি চ্যালেঞ্জ ভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তা নিরসন করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে সভাপতি পদে ১০৩০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আবু তাহের। সভাপতি পদে অপর প্রার্থী মাকসুদ চৌধুরী পেয়েছেন ১০২৮ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ৯৬২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আরিফুল ইসলাম। নিকটতম প্রতদ্বন্ধী মোহাম্মদ মাসুদ এইচ সিরাজী পেয়েছেন ৯৩৩ ভোট এবং অপর প্রার্থী মুহাম্মদ মহীউদ্দিন চৌধুরী খোকন পেয়েছেন ১৪৫ ভোট। অবশ্য চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষনার পর ২ ভোটে পরাজিত সভাপতি পদপ্রার্থী ভোটের ফলাফল প্রত্যাখান করেছেন।
দীর্ঘ অচলাবস্থার পর প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক এ সংগঠনের বহুল আলোচিত নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া এবং কানেকটিকাটের ৪ কেন্দ্রে দিনব্যাপী ভোট গ্রহণ করা হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নির্বাচর পরিচালনা করে। দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন ছিলো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সবাই ছিলেন সন্তুষ্ট।
কিন্তু গোল বেঁধে যায় ৬টি চ্যালেঞ্জ ভোট নিয়ে । যে কারণে ভোট গণণা শেষেও নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে পারেনি। তবে কমিশন অন্তর্বর্তী ফলাফল ঘোষণা করেছে। আন্তর্বর্তী ফলাফল ঘোষণার পূর্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনার শেখ এম খালেক বলেন, আমরা নির্বাচনের কোন ফলাফল এই মুহূর্তে ঘোষণা করতে পারবো না। তবে এই পর্যন্ত গণনার পর প্রত্যেক প্রার্থীর এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা আমরা জানাতে পারবো।
তিনি বলেন, ইউনাইটেড ভোটিং সার্ভিস (মেশিন কোম্পানী) আমাদের জানিয়েছেন, ৬টি চ্যালেঞ্জ ভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়া নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা যাবে না। এই সময় দুই প্যানেলের প্রার্থী, সমর্থক এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কমিশনের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহাব উদ্দিন সাগর, মোহাম্মদ এ হান্নান চৌধুরী, মোহাম্মদ সেলিম এবং রুহুল আমিন।
অন্তর্বর্তী ফলাফল ঘোষণায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সহযোগিতা করেন কমিশনের সদস্য শাহাব উদ্দিন সাগর। তিনিই জানিয়ে দেন কোন প্যানেলের কোন প্রার্থী কত ভোট পেয়েছেন এবং এগিয়ে রয়েছেন।
ঘোঘিত প্রাপ্ত ভোটের গণণায় সভাপতি পদে মাকসুদুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ১০২৮ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আবু তাহের পেয়েছেন ১০২৬ ভোট। সিনিয়র সহ সভাপতি পদে মোহাম্মদ মুক্তাদির বিল্লাহ। তিনি পেয়েছেন ১১০৯ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ আলী নূর পেয়েছেন ৯১৬ ভোট। সহ-সভাপতি পদে আলী আকবর বাপ্পী ও মোহাম্মদ আইয়ুব আনছারি। তারা পেয়েছেন যথাক্রমে ১০৬৮ ও ১০২৪ ভোট। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হাজী টি আলম ও ফরিদ আহগণণায় মেদ চৌধুরী পেয়েছেন ৯৪৬ ও ৯৭১ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম ৯৫৮ ভোট পেয়েছেন। এই পদে মোহাম্মদ মাসুদ এইচ সিরাজি পেয়েছেন ৯৩৩ ভোট এবং মুহাম্মদ মহিউদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন ১৪৫ ভোট। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ইকবাল হোসেন ভূইয়া ১০৬৪ ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কলিম উল্যাহ পেয়েছেন ৯৫২ ভোট। সহ সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হারুণ মিয়া ১০৩৪ ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী নওশাদ কামাল পেয়েছেন ৮৯১ ভোট। কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ সুমন উদ্দিন ১০১৩ ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী শফিকুল আলম পেয়েছেন ১০১০ ভোট। সহকারী কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ নূরুল আমিন পেয়েছেন ১০২৭ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী তমাল কান্তি টৌধুরী পেয়েছেন ৯৮১ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ ফরহাদ পেয়েছেন ১০৩২। প্রতিদ্বন্দ্বী তানিম মহসীন পেয়েছেন ৯৮৫ ভোট। দপ্তর সম্পাদক পদে শিমুল বড়ুয়া ১০০৩ ভোট পেয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী অজয় প্রসাদ তালুকদার পেয়েছেন ১০০০ ভোট। সহকারি দপ্তর সম্পাদক পদে ইমরুল কায়সার পেয়েছেন ১০১৮ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী জয়নাল আবেদীন পেয়েছেন ১০০৩ ভোট। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে এনামুল হক চৌধুরী ১০১৭ ভোট পেয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী সুশান্ত দত্ত পেয়েছেন ৯৯৩ ভোট। প্রচার সম্পাদক পদে জাবের শফি ১০১৮ ভোট পেয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল অদুদ পেয়েছেন ৯৯৪ ভোট। সমাজ কল্যাণ পদে আকতার উল আজম ১০৩৪ ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আকতার হোসাইন পেয়েছেন ৯৭৫ ভোট। ক্রীড়া সম্পাদক পদে মোহাম্মদ ইসা পেয়েছেন ১০০৯ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী জাহেদুল আজম পেয়েছেন ১০০৭ ভোট। সদস্য পদে শকেত আলী পেয়েছেন ১০৪৮ ভোট, শাহ আলম পেয়েছেন ১০২১ ভোট, নূরুস সোফা পেয়েছেন ১০১৯ ভোট। নাসির চৌধুরী পেয়েছেন ৯৯২, পল্লাব রায় পেয়েছেন ৯৬১ ভোট ও মাহিম উদ্দিন পেয়েছেন ৯৫৬ ভোট।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৬টি চ্যালেঞ্জ ভোটের মধ্যে ৪টিই ফিলাডেলফিয়া কেন্দ্র, একটি ব্রুকলীন এবং অপরটি জ্যামাইকা কেন্দ্রে। ফিলাডেলফিয়া কেন্দ্রের ৪ চ্যালেঞ্জ ভোটার ডিজিটাল আইডি নিয়ে আসেন, ব্রুকলীন কেন্দ্র যিনি চ্যালেঞ্জ ভোট দিয়েছেন তিনি অজীবন সদস্য এবং জ্যামাইকা কেন্দ্রে যিনি চ্যালেঞ্জ ভোট দিয়েছেন তার নামের সমস্য ছিলো।
এদিকে গত ২২ অক্টোবার জ্যাকসন হাইটসে উভয় প্যানেল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। তারেহ-আরিফ প্যানেল চ্যালেঞ্জ ভোট গণণা করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার দাবি জানান।
অন্যদিকে মাকুসদ-সিরাজি পরিষদ তাঁদের মতে অবৈধ চ্যালেঞ্জ ভোট বাতিলের দাবি জানিয়ে চূজান্ত ফলাফল ঘোষণার দাবি জানান।