নিউইয়র্কে হোম কেয়ার নিয়ে বিভ্রান্তি দ‚র করতে স্বাস্থ্য দফতর নতুন উদ্যোগ গ্রহন করেছে। নিউইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ স¤প্রতি একটি সচেতনতাম‚লক প্রচারণা শুরু করেছে, যা কনজিউমার ডিরেক্টেড পার্সোনাল অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপ্যাপ) এবং হোম কেয়ার পরিষেবার বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল ধারণাগুলি দু র করতে সহায়ক হবে। স্টেট স্বাস্থ্য কমিশনার ড.জেমস ম্যাকডোনাল্ডের উপস্থিতিতে তৈরি করা একটি জনসেবামুলক বিজ্ঞাপন বর্তমানে টেলিভিশন ও অনলাইনে প্রচারিত হচ্ছে।
নিউইয়র্কের কনজিউমার ডিরেক্টেড পার্সোনাল অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপ্যাপ), যা বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য গুরুত্বপুর্ণ হোম কেয়ার পরিষেবা প্রদান করে, তা নিয়ে স¤প্রতি ব্যাপক আলোচনার স‚ত্রপাত হয়। নিউইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ (ডিওএইচ) ঘোষণা করেছে যে, সিডিপ্যাপ প্রোগ্রামের দায়িত্ব ২০২৫ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে পাবলিক পার্টনারশীপ এলএলসি (পিপিএল)-এর কাছে হস্তান্তর করা হবে। পিপিএল এই প্রোগ্রাম মনিটরিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট ২৯টি আঞ্চলিক এজেন্সিকে কাজের দায়িত্ব দিচ্ছে। প্রোগ্রামের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে বিভ্রান্তি এবং ভুল তথ্য ছড়ানোর কারণে অনেকেই উদ্বিগ্ন। তবে, নিউইয়র্ক স্টেট স্বাস্থ্য কমিশনার ড.জেমস ম্যাকডোনাল্ড স্পষ্ট করেছেন যে নতুন পরিকল্পনা সিডিপ্যাপ ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং তাদের সেবার মান উন্নত করবে।
ড. ম্যাকডোনাল্ড সিডিপ্যাপ প্রোগ্রাম নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের পরিকল্পনার মুল লক্ষ্য হলো সিডিপ্যাপ ব্যবহারকারীদের সেবা সুরক্ষা ও সেবা প্রদানের মান উন্নত করা। আগামী ১ এপ্রিলের পরও কেউ তাদের হোম কেয়ার পরিষেবা হারাবেন না।’
৬০ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে যে সিডিপ্যাপ প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের যোগ্যতা অপরিবর্তিত থাকবে এবং তাদের নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি, হোম কেয়ার ব্যবহারকারীদের সেবা পাওয়া ও কেয়ারগিভারদের সময়মতো পেমেন্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ব্যাঘাত ঘটবে না। তবে, কিছু ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণে একটি বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হয়েছে। এই প্রচারণার মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে যে সিডিপ্যাপের তত্ত¡াবধান কেন্দ্রীভ‚ত করার নতুন পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে।
সিডিপ্যাপ প্রোগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপ‚র্ণ বৈশিষ্ট্য হলো, সেবা গ্রহীতা (পেশেন্ট) তার নিজের পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়স্বজনকে কেয়ারগিভার হিসেবে নিযুক্ত করতে পারেন। সন্তান, ভাই-বোন, পিতামাতা, নিকট আত্মীয়, এমনকি বন্ধুও কেয়ারগিভার হতে পারে তবে, স্বামী/স্ত্রী বা কনজার্ভেটর (কোর্ট এপয়েন্টেড গার্ডিয়ান) কেয়ারগিভার হতে পারবেন না। সিডিপ্যাপ বিশেষ করে অভিবাসী কমিউনিটিগুলোর জন্য উপকারী।
এদিকে, নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠান ‘বারী হোম কেয়ার’ দীর্ঘ দিন ধরে এই সংস্থা কনজ্যুমার ডাইরেক্টেড পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপ্যাপ) ও অন্যান্য হোম কেয়ার সেবা দিয়ে আসছে। সম্প্রতি সিডিপ্যাপ সেবা নিয়ে বেশ কিছু বিভ্রান্তি এবং গুজব ছড়ালেও, বারী হোম কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আসেফ বারী দৃঢ় আশ্বাস দিয়েছেন যে, সিডিপ্যাপ সেবা বন্ধ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে জনপ্রিয় এই হোম কেয়ার সার্ভিসের প্রতিষ্ঠাতা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সিডিপ্যাপ সেবা নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। তিনি স্পষ্ট করেছেন, সিডিপ্যাপ সার্ভিস বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনার খবরগুলো সম্প‚র্ণ ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিম‚লক। আসেফ বারী বলেন, “নিউইয়র্কবাসী নির্ভয়ে হোম কেয়ার সেবা নিতে পারেন।
আসেফ বারী আরো বলেন, “হোম কেয়ার বর্তমানে যেসব বয়স্ক বাবা মা সন্তানদের সাথে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিরাট বেøসিংস, কেননা ঘরে বসেই এখন সন্তান তার বাবা মায়ের সেবা করতে পারছে, সাথে কিছু টাকাও পাচ্ছে যা তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপন কে আর্থিক এবং মানসিকভাবে সহজ করছে।”
সিডিপ্যাপ সেবা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সিডিপ্যাপ সেবা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা সম্প‚র্ণ ভিত্তিহীন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘সেবা এবং ঘন্টাপ্রতি রেট অপরিবর্তিত থাকবে যারা সিডিপ্যাপের আওতায় আছেন, তারা আগের মতোই সেবা পাবেন। কোনো এজেন্সি পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। রোগীরা তাদের পছন্দের এজেন্সির মাধ্যমেই সেবা নিতে পারবেন। পিসিএ সেবায় স্থানান্তরের কোনো দরকার নেই সিডিপ্যাপ সেবার মান ও সুযোগ-সুবিধা ঠিক আগের মতোই থাকবে। তিনি আরও যোগ করেন, ‘অনেক এজেন্সি রিউমার ছড়াচ্ছে, যে আপনি সিডিপ্যাপ থেকে পিসিএ তে চেঞ্জ করেন, কিন্তু সমস্যা হল পিসিএ তে কনভার্ট হলে আপনার কেয়ার গিভার আপনার কোন ফ্যামিলি মেম্বার হতে পারবে না। সিডিপ্যাপে ট্যাক্স দিতে হয় না, এবং এটি পরিবারের সেবা দাতাদের জন্য ঝুঁকিহীন। সঠিক নথিপত্র থাকলে আইনি জটিলতা নেই। পিসিএতে আয়কর জমা দিতে হয়। পিসিএ প্রোগ্রামের সবকিছু এজেন্সি-নির্ভর। এজেন্সি সেবাগ্রহীতা ও কেয়ারগিভারের মধ্যে মধ্যস্থতা করে। কেয়ারগিভারের কাজের ধরন, সময়স‚চি এবং দায়িত্ব এজেন্সির মাধ্যমে ঠিক করা হয়। এখন পুরো বিষয়টি ভালোভাবে জেনে বুঝে আপনি সিদ্ধান্ত নেবেন আপনি সিডিপ্যাপে থাকবেন না পিসিএ তে চেঞ্জ করবেন।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য বারী হোম কেয়ার শুধু একটি হোম কেয়ার সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নয়, বরং এটি একটি নির্ভরযোগ্য নাম। কমিউনিটির বহু মানুষ বারী হোম কেয়ারের মাধ্যমে তাদের প্রিয়জনদের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করেছেন। বারী হোম কেয়ার সবসময় এজেন্সির পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য এবং স্বচ্ছ সেবা প্রদান করে আসছে। সিডিপ্যাপ সেবা নিয়ে যেকোনো বিভ্রান্তি এড়াতে গুজবে কান না দিয়ে সঠিক তথ্য জানুন। বারী হোম কেয়ার আপনাদের পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আপনার সেবা নিয়ে কোনো পরিবর্তন হবে না, এবং এটি আগের মতোই মানসম্মত থাকবে। সেবা নিয়ে যেকোনো প্রশ্ন থাকলে বারী হোম কেয়ারের সাথে যোগাযোগ করুন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে