ভারতীয় জওয়ানদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের গুপ্তচরদের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ভারতীয় পুলিশ নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
এমনি এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের সেনাবাহিনীর এক বন্দুকধারীর সঙ্গে। ওই ব্যক্তির নাম প্রদীপ। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ফোনে রিয়া নামে এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় প্রদীপের। এক সময় তা প্রেমে রুপ নেয়। প্রদীপের বিশ্বাসই হয়নি তার প্রেমিকা একজন পাক গুপ্তচর। এমনকি গোয়েন্দারা রিয়ার পাক গুপ্তচর হওয়ার বেশ কিছু প্রমাণ দেখালেও তা বিশ্বাস করেননি প্রদীপ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রদীপ কুমার ও রিয়ার প্রেম ছিল ১৬ মাসের। সরাসরি তাদের কোনও দিন দেখা হয়নি। কিন্তু তারপরেও রিয়ার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। রিয়া পরিচয় দেন, তিনি ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি সামরিক হাসপাতালের একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল। তার সঙ্গে সংসার করারও স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রদীপ। কিন্তু, নিমেষেই প্রদীপের সেই স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যায়।
সম্প্রতি পাক গুপ্তচরকে সাহায্য করার জন্য প্রদীপকে গ্রেফতার করেছেন ভারতের গোয়েন্দারা। প্রদীপ নারীর প্রেমে পড়েছিলেন তিনি ভারতীয় সেনার কোনও কর্মকর্তা ছিলেন না বলে দেশটির গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।
গোয়েন্দাদের দাবি, রিয়া একজন পাক গুপ্তচর। তাই পাক গুপ্তচরকে সাহায্য করার জন্য সামরিক বিভাগের গোয়েন্দারা প্রদীপকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। প্রদীপের কাছ থেকে রিয়া ভারতীয় সেনার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।
দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, শুধু প্রদীপই নয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত এরকম অনেককেই প্রেমের ফাঁদে ফেলে পাক গোয়েন্দারা তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
রাজস্থান পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, সেনা জওয়ান বা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যক্তিকে প্রথমে প্রেমের ফাঁদে ফেলছে পাক গুপ্তচররা। তারপরে তাদের কাছ থেকে দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। ২০১৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত রাজস্থানে এরকম অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দেশটির কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, প্রায়ই মিসড কল দিয়ে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করে তারা ভারতীয় সেনা জওয়ানদেরকে ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। এমনকি মাঝেমধ্যেই নিজেদের নগ্ন ছবি বা ভিডিও ক্লিপও তাদের পাঠিয়ে থাকে পাক গুপ্তচররা।
অনেক ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় নারী হিসেবে ভুয়া প্রোফাইল খুলে ভারতীয় সেনা জওয়ানদের কাছ থেকে তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে পাক গোয়েন্দারা।
রাজস্থান পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি (নিরাপত্তা) এস সেনগাথির জানান, ‘পাকিস্তানের গোয়েন্দারা বিশেষ করে নারীরা তথ্য পাওয়ার জন্য হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা কর্মী এবং বেসামরিক ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফেলার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এই ধরনের কার্যক্রম বাড়ছে। এর জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
তিনি আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজনকে বিশেষভাবে টার্গেট করছে পাক গোয়েন্দারা। এনিয়ে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। কেউ সন্দেহজনক কোনও ফোন পেলেই স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পরিচয়/সোহেল