ইরানে পুলিশি হেফাজতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে গড়ে ওঠা বিক্ষোভ প্রতিবাদ দেশটিকে বহু বছরের মধ্যে এবার মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, মাশার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির অন্তত ৫০টি শহরে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে এক হাজার বিক্ষোভকারীকে।
ওই তরুণীর বিরুদ্ধে হিজাব সম্পর্কিত নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছিলো পুলিশ। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার মৃত্যু হয়েছে স্বাস্থ্যগত কারণে। যদিও ওই তরুণীর পরিবার ও বহু ইরানি নাগরিকের বিশ্বাস, হেফাজতে মারাত্মক প্রহারের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা যদি এখনই এর বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ান তাহলে একদিন তাদেরও একই ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিতে হয়েছে ইরানের প্রভাবশালী সেনাবাহিনীকে। এক বিবৃতিতে বাহিনীটি বলেছে, ‘এ ধরনের মরিয়া কর্মকাণ্ড হচ্ছে ইসলামি শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করতে শত্রুদের শয়তানি কৌশলের অংশ। অন্যায়ভাবে আক্রমণের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিতে শত্রুদের বিভিন্ন চক্রান্ত মোকাবিলা করব আমরা।’
এ ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে যখন ইরানের মানুষ এমনিতেই ক্ষুব্ধ। দেশটির এলিট রাজনীতিকদের দুর্নীতি, ৫০ শতাংশের বেশি মুদ্রাস্ফীতির কারণে দারিদ্র বেড়ে যাওয়া, পারমানবিক আলোচনায় অচলাবস্থা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার অভাব তরুণদের সহ একটি বিরাট জনগোষ্ঠীকে হতাশ করে তুলেছে।
ইরানের সোশ্যাল সিকিউরিটি অর্গানাইজেশন রিসার্চ ইন্সটিটিউটের মতে, দেশটির অন্তত আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে এবং ক্রমশ এই সংখ্যা বাড়ছে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে এটাই বিক্ষোভের নতুন কোন ঘটনা নায়। কিন্তু অনেক পর্যবেক্ষকের মতে আগের যে কোন ঘটনার তুলনায় এবারেরটায় ভিন্নতা আছে।
পরিচয়/সোহেল