নিউইয়র্ক     শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটির সংবাদ সম্মেলন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠন করার আবেদন

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ০১:০৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ০১:০৬ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠন করার আবেদন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠন করার আবেদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি । গত ২০ সেপ্টেম্বর জ্যাকসন হাইটসের একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আবেদন জানান হয়।সংবাদ সম্মেলেন পঠিত লিখিত বক্তব্যে নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের মানসকন্যা, দেশরতœ জননেত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘ ৭৭তম অধিবেশনে আগমন উপলক্ষে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। প্রথমত জাতিসংঘের আসন্ন অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

বিশেষ করে গত ১৩ বছর শেখ হাসিনা সরকারের সকল উন্নয়ন দেশবাসীকে আশার সঞ্চার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার তথা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি মাত্র ২২ বছর এ দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল। এদেশের যাবতীয় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি এই সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এ দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার সূচনা করেছিলেন আর বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করছেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এবং ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে যত উন্নয়ন, তার বীজ বপন করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে ধ্বংস্তূপ থেকে এ দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে একেবারে শুরু থেকে কাজ শুরু করেছিলেন। প্রথমেই কৃষিকে গুরুত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা। তার স্বপ্নের সোনার বাংলায় তিনি দেখতে চেয়েছিলেন কৃষি ও কৃষকের সর্বাঙ্গীন উন্নয়ন এবং স্বনির্ভরতা। সেই লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কৃষি উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পুনঃসংস্করণ, উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন এবং স্বায়ত্তশাসন প্রদান, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, ইক্ষু গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মৎস্যউন্নয়ন করপোরেশন সহ অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেন। তিনি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষিতে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে ৫০০কোটি টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ থেকে ১০১ কোটি টাকা শুধু কৃষি উন্নয়নের জন্য রেখেছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এদেশের কৃষিতে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন হয়নি বরং বাংলাদেশের কৃষি পিছিয়ে পড়েছিল। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন এবংকৃষিতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো পুনরায় শুরু করে মাত্র পাঁচ বছরে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। ১৯৯৬সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন ক্ষমতায় আসেন তখন ২৪ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। পাঁচ বছর পর যখন তিনি ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন তখন ২৬ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত ছিল। তার মানে বাংলাদেশকে তিনি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পেরেছিলেন। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশ আবার আগের খাদ্য ঘাটতি এবং আমদানি নির্ভর অবস্থায় ফিরে যেতে সময় নেয়নি। ২০০৯ থেকে ২০২১এই ১২ বছরে তার সুযোগ্য নেতৃত্বে এ দেশের কৃষি এগিয়েছে বহুদূর। এখন সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে, আলু উৎপাদনে ষষ্ঠ, ধান উৎপাদনে চতুর্থ, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, ইলিশ উৎপাদনে প্রথম, পাট উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় এবং রপ্তানিতে প্রথম, চা উৎপাদনে নবম, গরু-ছাগল উৎপাদনে দ্বিতীয় এবং আম ও পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকারগুলোর সময় এসবের সূচক ছিল অনেক নিচে। খাদ্যউৎপাদন বাড়াতে ২০২১-২২ অর্থবছরের ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষি খাতের ভর্তুকির পরিমাণ ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা যা বছর শেষে আরো ৫০০ কোটি টাকা বাড়তে পারে। সারের দাম যা বিএনপি সরকারের আমলে ৯০ টাকা ছিল, তা আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা ১২ টাকায় নামিয়ে এনেছেন।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যতেও সমান গুরুত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে দেশবাসীর উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া বেতার-টেলিভিশন ভাষণ থেকে আমরা তার শিক্ষা-ভাবনা সম্বন্ধে সম্যক ধারণা পাই। দেশ স্বাধীনের পর তিনি জাতীয়শিক্ষা কমিশন গঠন করেছেন। স্কুল ও কলেজগুলোকে জাতীয়করণ করেছেন। উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠন করেছেন। বাংলাদেশে একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানমুখী শিক্ষানীতি প্রণয়নে গুরুত্ব দিয়েছেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী ড. কুদরত-ই-খুদাকে চেয়ারম্যান করে ১৯৭২ সালের ২৬ জুলাই গঠন করেন বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা কমিশন ‘জাতীয়শিক্ষা কমিশন’ গঠন করেছেন। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি ৭৩-এর অ্যাক্টের মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছেন। গবেষণায় উদ্বুদ্ধকরার জন্য বুয়েট এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে ৭৩-এর অ্যাক্টের বাহিরে রেখেছেন। সব প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন। প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করেছেন। তিনি টিসিবিকে ওষুধ আমদানি করার জন্য নির্দেশ প্রদানকরেন এবং সেই সঙ্গে দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোকে সেই ওষুধ তৈরির নির্দেশ দেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এই সেক্টরও ক্ষতির ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতার মতো তিনিও শিক্ষায় অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকরেছেন। সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন করেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাকে নকলমুক্ত করেন, শিক্ষায় প্রযুক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং কারিগরি শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটান। দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০০৫ সালেতৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ছিল মাত্র ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অর্ধশত, প্রত্যেক জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যার। এরই মধ্যে কয়েকটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অভূতপূর্ব সফলতা অর্জন করেছে। এ দেশের তরুণদের প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কন্যা গভীরভাবে মনোযোগ দিয়েছিলেন। ফলে করোনার মতো কঠিন মহামারিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে আছে।

২০০১ সালে শেখ হাসিনার সরকার যখন বিদায় নেয় তখন তিনি ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রেখে যান। পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় লুটপাটের ফলে আবারও জ্বালানি খাত মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশ আবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ২০ হাজার ২৯৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন। বর্তমানে আমাদের ধারণক্ষমতা হচ্ছে ২০ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট। ২০৩০ সালে এটি হবে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে হবে ৬০ হাজার মেগাওয়াট।

সরকারের সময় লুটপাটের ফলে আবারও জ্বালানি খাত মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশ আবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ২০ হাজার ২৯৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন। বর্তমানে আমাদের ধারণক্ষমতা হচ্ছে ২০ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট। ২০৩০ সালে এটি হবে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে হবে ৬০ হাজার মেগাওয়াট।

সদ্য স্বাধীন এই দেশকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগানোয় মনোনিবেশ করেন জাতির পিতা। সেজন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে টেলিকমিউনিকেশনের সদস্য বানানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন দুর্গম এলাকা রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় স্থাপন করেছেন ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র। জাতিরপিতার প্রচেষ্টায় ১৯৭৩ সালে আইটিইউর সদস্যপদ পায় বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা এ দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পূর্ব পর্যন্ত এই সেক্টরে কোনো কাজই হয়নি। বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল থেকেও আমরা বঞ্চিত হয়েছি শুধুমাত্র তথ্য পাচারের অজুহাতে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে শেখ হাসিনার সরকারের সময় ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা তখন তিনি শুরু করেছিলেন। সাবমেরিন ক্যাবল অনুমোদন দিয়েছিলেন, কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের ওপর শুল্ক তুলে দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় লুটপাটের ফলে আবারও এই সেক্টরের ক্ষতি সাধিত হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যার গৃহীত পদক্ষেপ গুলো বাতিল করা হয়। ফলে আবারও প্রযুক্তি থেকে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি, ২০১৪ সালে শান্তি গণতন্ত্র উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি এবং ২০১৮ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীকে নিরলসভাবে সহায়তা করছেন তার সুযোগ্য পুত্র এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। মাত্র ১৪ বছরে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে বিশ্বের বিস্ময়, উন্নয়নের রোল মডেল।

বঙ্গবন্ধ ুকন্যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনমুখী একটি সরকার ব্যবস্থা। আমরা ধীরে ধীরে সেদিকেই যাচ্ছি। তার দক্ষ নেতৃত্বে এখন আমরা বৈশ্বিক দুর্নীতির সূচকে অনেক পেছনে আছি। বঙ্গবন্ধুর মতো তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন ২০০৯ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন তখন বাংলাদেশের জিডিপি ছিল মাত্র ১০০ বিলিয়ন ডলার মাত্র। ১৩ বছরে তা তিনি চারগুন করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপি এখন ৪১৬ বিলিয়ন ডলার। বঙ্গবন্ধুকন্যা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ৩০০ থেকে ৪১৫ তে উন্নীত করেন। ২০০৯ সালে যখন বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখন বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৬৩৫ডলার, মাত্র ১৩ বছর সময়ে বর্তমানে তিনি তা ২ হাজার ৫০৩ ডলারে উন্নীত করেছেন।

২০০৯ থেকে ২০২১ উন্নয়নের স্বর্ণালী যুগ। উন্নয়নের প্রায় প্রতিটি সূচকেই অকল্পনীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফলতার প্রমাণ বহন করে। নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে মাথাপিছু আয়, খাদ্য ও পুষ্টিপ্রাপ্তি, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সামাজিক নিরাপত্তাসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। এমনকি, ভয়াবহ করোনা মহামারিও দীর্ঘ লকডাউনও বাংলাদেশের অগ্রগতিকে আটকাতে পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শুরু থেকেই কৃষি খাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ আজবিশ্বের তৃতীয় ধান উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে সারের দাবিতে কৃষককে জীবন দিতে হয়েছে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ সরকার কৃষি খাতে ভর্তুকি এবং কৃষি ঋণের পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের গুণে দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ শুধু এশিয়ায় নয়, বিশ্বসভায় মাথা উঁচুকরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুধু বিস্ময় নয়, উন্নয়নের রোল মডেলহিসেবে অভিহিত।‘

আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছি । উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

জাতির পিতার হাতেগড়া সেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময়েই এ দেশের স্বাধীনতা ও বিজয়ের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপিত হয়েছে। আবার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষও উদযাপন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বেই।

মানুষের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন এ সরকারের একটি বড় অর্জন। গত কয়েক বছরে মাথাপিছু গড় আয় অনেক বেড়েছে।একসময় বিদ্যুতের ব্যাপক সংকট ছিল। বাংলাদেশ এখন ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়নের আরেক নাম বাংলাদেশ।

দেশের আট বিভাগকেই ফোর লেন সড়ক যোগাযোগের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। ইতিমধ্যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে বাংলাদেশ। পেয়েছে টেকসই (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রার অগ্রযাত্রার পুরস্কারও। দেশে এখন সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক২ শতাংশ। গড় আয়ু বেড়ে ৭২ দশমিক ৮ বছর হয়েছে। অন্যদিকে দেশে দারিদ্র্যের হার কমে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে ব্যাপক উন্নতি করেছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

পার্বত্য শান্তি চুক্তি জননেত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম অর্জন, সমুদ্রসীমা বিজয়, ছিটমহল বিজয়, মহাকাশে আজ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে ইতিমধ্যে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালসহ আরও কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার যুগান্তকারী প্রকল্প বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে এ বছরই গাড়ি চলবে। এরই মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত টানেলের কাজের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। ব্যয়বহুল প্রকল্প মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরুহয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মেট্রোরেল উদ্বোধন হবে।

যেকোনো বৈশ্বিক দুরে‌্যাগে সবার আগে এগিয়ে যান শেখ হাসিনা। এই করোনার সময় আমরা দেখেছি, তার নিরলস পরিশ্রমের কারণে অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুহার অনেক কম। এই মহামারি থেকে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষাকরে মানুষর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে একাই লড়ছেন তিনি। সংকট মোকাবিলায় নিয়মিত দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি দুর্গত মানুষকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি সরাসরি তদারকি করেছেন। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ছোবল থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষায় সুদৃঢ় ভূমিকা রেখেছেন। একাধিক ভিডিও কনফারেন্সিং করেছেন বিশ্ব নেতাদেরসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে। আহ্বান জানিয়েছেন বৈশ্বিক এই সংকট মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার। বিশ্বে শান্তি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তার তুলনা তিনি নিজেই। আমরা এখন পর্যন্ত বিশ্বে তার মতো এমন মানবিক নেতা দেখতে পাইনি। এই মানবিক নেতার সংস্পর্শে বাংলাদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে থাকতে চায়।

নাগরিক কমিটি, আমাদের পরিচয় :

একটি মহৎ উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ, স্টেট্ আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ,যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগ,যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগ,যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ ক্লাব যুক্তরাষ্ট্র,বঙ্গবন্ধু সাংস্কিতিক জোট ও অন্যান্য সামাজিক সাং¯ৃ‹তিক সংগঠনের বাংলাদেশী-আমেরিকানদের সমন্বয়ে গঠিত আজকের এই নাগরিক কমিটি।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ সহ বেশ কয়েকটি সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা সহ রাষ্ট্রবিরোধী সকল কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি প্রতিরোধ গড়েছে। প্রতিবারের ন্যায় এইবার বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে নাগরিক কমিটি বেশ কয়েকটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।বরাবরের ন্যায় বিশ্বনেত্রী,দেশরতœ,মানবতার প্রতীক,নারী নেতৃত্বের অন্যতম পুরোধা,বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ৭৭তম জাতিসংঘের অধিবেশনে আগমন উপলক্ষে আমরা আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি, তার মধ্যে অন্যতম:-

১. আজকের এই সংবাদ সম্মেলন ২. জেএফকে বিমানবন্দরে নেত্রীকে অভ্যর্থনা ও স্বাগতম ৩. বিএনপি, জামাতকে প্রতিরোধ ৪. জাতিসংঘ শান্তি সমাবেশে অবস্থান ৫. জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা

পরিশেষে যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি মনে করে যুক্তরাজ্যের নেতাকর্মীর সঙ্গে নেত্রীর যে সাক্ষাৎকারের চিত্র আমরা দেখেছি আমরা মনে প্রাণে আশাবাদী হয়েছিলাম ম্যানহাটন হোটেল লবিতে যুক্তরাজ্যের ন্যায় যুক্তরাষ্ট্রেও মাননীয় নেত্রী আমাদেরকে হাত উঁচিয়ে উৎসাহিত করবেন। যে কোন কারণেই হোক নেতাকর্মীদের সে আশা পূর্ন হয়নি। আমরা এখনো আশাবাদী যুক্তরাজ্যের ন্যায় যুক্তরাষ্ট্রেও নেত্রীর সঙ্গে নেতাকর্মীদের সাক্ষাৎ হবে।

যেহেতু যুক্তরাষ্টের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে গঠিত এই নাগরিক কমিটি। সুতরাং আমরা মনে করি একটি নতুন কমিটিই পারে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে একটি শক্তিশালী ও গতিশীল সংগঠনে রূপান্তরিত করতে।

সর্বপরি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আকুল আবেদন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের একটি নতুন কমিটি গঠন করার জন্য সুদৃষ্টি কামনা করছি। – হিন্দাল কাদির বাপ্পা, আহবায়ক নুরুল আমিন বাবু, সদস্য সচিব, যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি।-২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

পরিচয়/টিএ

শেয়ার করুন