চীনের আচরণ নিয়ে আরও একবার ক্ষোভ ঝাড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। গত বুধবার তিনি তাইওয়ান সফর করেন এবং এ নিয়ে কঠিন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। সে প্রেক্ষিতে পেলোসি বলেন, চীন আমাদের ভ্রমণ সময়সূচি ঠিক করে দেবে না। তিনি তাইওয়ান থেকে দক্ষিণ কোরিয়া এবং এরপর সেখান থেকে জাপান পৌঁছেছেন। জাপানের রাজধানী টোকিওতে শুক্রবার চীনের বিরুদ্ধে এমন ক্ষোভ দেখালেন তিনি। এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
খবরে জানানো হয়েছে, জাপানের মধ্য দিয়েই শেষ হচ্ছে পেলোসির এশিয়া সফর। এই সফরের অংশ হিসেবে তিনি সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান সফর করেন। জাপানে পেলোসি বলেন, চীনারা তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে চাইছে। তারা চেষ্টা করছে যাতে কেউ তাইওয়ান না যায় কিংবা তাইওয়ান অন্য কোথাও যুক্ত না হয়। কিন্তু আমরা তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন হতে দেব না।
তারা আমাদের সেখানে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে পারে না। কারণ চীন আমাদের ভ্রমণ সময়সূচী নির্ধারণ করে না। এটা চীন সরকারের কাজ নয়।
পেলোসির তাইওয়ান সফর নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বেইজিং। তাইওয়ানের বিভিন্ন পণ্যের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এরপর সমুদ্রে ইতিহাসের সবথেকে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে দেশটি। মহড়া হচ্ছে তাইওয়ানের চারপাশ ঘিরে। এরফলে অবরুদ্ধ হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে দ্বীপটি। এ নিয়ে পেলোসি বলেন, আমাদের সফরের সময় চীন কী করেছে তা আপনারা দেখেছেন। কিন্তু প্রথম থেকেই আমরা বলছি যে, এই সফরের এই নয় যে আমরা তাইওয়ান নিয়ে আমাদের নীতিতে পরিবর্তন আনছি। আমরা তাইওয়ান স্ট্রেইটে শান্তি চাই।
বক্তব্যে তিনি নিরাপত্তাকে অর্থনীতির থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করেন। তবে তিনি বলেন, তার এই সফর মূলত বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার পারস্পরিক সম্মানের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত হয়েছিল। যতগুলো দেশেই সফর হয়েছে, সবখানেই ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এছাড়া তিনি চীনের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে কথা বলেন। পেলোসি বলেন, আমি বারবার বিষয়টি বলেছি। আমরা যদি বাণিজ্যিক কারণে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি এড়িয়ে যাই, আমরা নৈতিকতা হারিয়ে ফেলবো। বিশ্বের সর্বত্র মানবাধিকারের জন্য চিন্তা করা থেকেই নৈতিকতার শুরু।
তিনি বলেন, চীনের নিজের মধ্যে কিছু দ্বন্দ্ব আছে। কিছু ক্ষেত্রে তারা উন্নতি করছে আবার উইঘুর ইস্যুর মতো কিছু ইস্যুতে এখনো ভয়াবহ ঘটনা ঘটে চলেছে। আমরা চীনের এই আচরণকে গণহত্যা বলে স্বীকৃতি দিয়েছি। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো কিছু ইস্যু নিয়ে আমাদের অবশ্যই চীনের সঙ্গে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে চীন থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। আবার কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য আমাদের একসঙ্গে আরও কাজ করতে হবে।
এর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিও’র সঙ্গে বৈঠক করেন পেলোসি। শুক্রবার সকালে ওই বৈঠক আয়োজিত হয় এবং এই বৈঠককে পেলোসি ‘হৃদয়স্পর্শী’ বলে আখ্যায়িত করেন।