ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে কিনা তা তদন্তের জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দখলীকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড বিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিউর ফ্রাঁসেস্কা আলবানেজ। তিনি একই সঙ্গে এ অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। গাজায় ইসরাইলের হামলাকে তিনি বেআইনি বলে উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বিমান হামলা শুধু বেআইনিই নয়। একই সঙ্গে কাণ্ডজ্ঞানহীন। সর্বশেষ এ উত্তেজনার তিনি কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, গাজা সিটিতে শুক্রবার ইসরাইল নৃশংসভাবে বিমান হামলা শুরু করে। এতে কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হয়েছেন। তবে সর্বশেষ খবর হলো, উভয় পক্ষ অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
ফ্রাঁসেস্কা আলবানেজ আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজায় যে পরিস্থিতি তাকে তা মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে। এক্ষেত্রে একমাত্র সদিচ্ছা নিশ্চিত করার পথ হলো ফিলিস্তিনিরা যেখানেই আছেন, তাদের উপর থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে সেখানে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেয়ার অনুমোদন দেয়া।
ওদিকে ইসরাইল এই হামলাকে তাদের আত্মরক্ষা বলে চালিয়ে দিচ্ছে।তারা বলছে, ফিলিস্তিনের যোদ্ধাগোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের বিরুদ্ধে তারা আত্মরক্ষার লড়াই করছে। তদের এই লড়াই স্থায়ী হতে পারে এক সপ্তাহ। ওদিকে ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে বলে যুক্তরাষ্ট্র যে মন্তব্য করেছে, তার নিন্দা জানিয়েছেন ফ্রাঁসেস্কা আলবানেজভ তিনি বলেছেন, ইসরাইল বলতে পারে না যে, তারা এই লড়াইয়ে আত্মরক্ষা করছে।
এর আগে শুক্রবার ইসরাইলে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত টম নিডস টুইটারে লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করে যে, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। আমরা সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং তাদেরকে শান্ত থাকার অনুরোধ করছি। তার কথার যেন প্রতিধ্বনি করলেন বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। তিনিও বলেছেন, বৃটেনও ইসরাইলের পাশে আছে এবং দেশটির আত্মরক্ষার অধিকার আছে। ইসলামিক জিহাদকে তিনি সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে আখ্যায়িত করে বেসামরিক লোকজনের দিকে ফায়ার করার নিন্দা জানান।
উল্লেখ্য, শুক্রবার থেকে গাজায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩১ জন। আহত হয়েছেন ২৬০ জন। রোববার পর্যন্ত ইসরাইলি পক্ষে কোনো হতাহতের খবর জানা যায়নি। তবে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম গাজা থেকে উৎক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে শতকরা ৯৭ ভাগই ভূপাতিত করেছে। এ দাবি করেছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী। জবাবে ফ্রাঁসেস্কা আলবানেজ বলেন, ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষার দাবি জানাই। এই দাবি আমার একার নয়। বেসামরিক লোকজনের জীবন রক্ষায় এটা অত্যাবশ্যক।
তিনি দখলীকৃত ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে দখলদারদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের দ্বারা মনিটরিং করার আহ্বান জানান এবং তা জাতিসংঘের কাছে পাঠানোর আহ্বান জানান। এ ছাড়া গাজায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বলেন, আমি বিশ্বাস করি জবাবদিহিতায় ঘাটতি থাকার কারণে ইসরাইল শক্তিশালী হয়েছে। সমস্যার সমাধান হিসেবে আমি দখলদারিত্বের অবসানকেই দেখতে পাই।