যুক্তরাষ্ট্রের ৫ ভাগের ২ ভাগ মানুষ অর্থাৎ দেশটির ৪০ শতাংশ মানুষই মনে করেন, আগামী ১ দশকের মধ্যেই দেশটি গৃহযুদ্ধের মুখোমুখি হতে পারে। ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ইউগভ এবং প্রখ্যাত সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের যৌথ পরিচালনায় এই তথ্য উঠে এসেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি গোপন নথির খোঁজে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে দেশটির তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই। হোয়াইট হাউস ছাড়ার পরও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এসব নথি নিজের কাছে রাখার অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত হলে রাস্তায় দাঙ্গা শুরু হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে বিশ্লেষকেরা। গত রোববার রাতে এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন দক্ষিণ ক্যারোলিনার সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। এর পর থেকেই ফের আলোচনায় গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা।
সিনেটের গ্রাহাম এ কথা বলার পর ব্যাপকভাবে সমালোচিত হলেও জরিপ অনেকটাই তাঁর আশঙ্কার পক্ষেই। ইউগভ ও ইকোনমিস্টের জরিপ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩ শতাংশ নাগরিক মনে করেন আগামী এক দশকের মধ্যেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধ হতে পারে। ডেমোক্র্যাট এবং সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে ৪০ শতাংশ মনে করেন এক দশকের মধ্যে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে, বিপরীতে রিপাবলিকানদের মধ্যে এই হার ৫৪ শতাংশ। ৬৫ শতাংশ মার্কিন নাগরিকই মনে করেন ২০২১ সালের ক্যাপিটলের ঘটনার পর রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়েছে।
তবে গ্রাহামের এই মন্তব্যের ব্যাপক সমালোচনাও হয়েছে। গতকাল সোমবার সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মেরি ম্যাককর্ড সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে বলেছিলেন, ‘একজন নির্বাচিত কর্মকর্তার পক্ষে এমন সহিংসতার গোপন হুমকি দেওয়া ভায়বহভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন।’
গৃহযুদ্ধের আশঙ্কার বিষয়ে বেশির ভাগ রাজনৈতিক বিশ্লেষকই বলছেন, ১৮৬১-৬৫ সালের সেই ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মতো সশস্ত্র সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে তাঁরা সবাই বলছেন, সামনের দিনগুলোতে রাজনৈতিক বিভাজন এবং সহিংসতা বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে ট্রাম্পের যে ভক্তরা নির্বাচন নিয়ে তাঁর অভিযোগকে সমর্থন দিয়েছেন তাঁদের প্রায় সবাই এসব সহিংসতায় যুক্ত থাকতে পারেন বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের গৃহযুদ্ধ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ র্যাচেল ক্লেইনফেল্ড বলছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী গণতন্ত্র এবং সরকার থাকা দেশে গৃহযুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু এর কাঠামো দুর্বল হয়ে গেলে গৃহযুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
পরিচয়/এমউএ